ঢাকা, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

গুম কমিশনের মস্তিষ্ক ড. নাবিলা ইদ্রিসের পরিচয় 

২০২৫ অক্টোবর ১৩ ১৭:৩০:০৫
গুম কমিশনের মস্তিষ্ক ড. নাবিলা ইদ্রিসের পরিচয় 

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে অতীতে সংঘটিত বলপূর্বক গুম এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে সরকারিভাবে গঠিত হয়েছে "গুম অনুসন্ধান কমিশন"। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম হওয়া শত শত ব্যক্তির বিষয়ে সত্য উদঘাটন এবং দায়ীদের চিহ্নিত করতেই এই কমিশন গঠিত হয়।

এই কমিশনের নেতৃত্বে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত হাইকোর্ট বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। তবে বাস্তবভাবে কমিশনের মূল নীতিনির্ধারক ও গবেষণা নেতৃত্বে রয়েছেন ড. নাবিলা ইদ্রিস, যিনি ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে "গুম কমিশনের মস্তিষ্ক" হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।

ড. নাবিলা ইদ্রিস একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গবেষক ও নীতিবিশ্লেষক। তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের Open University-তে ভিজিটিং ফেলো হিসেবে কর্মরত, যেখানে তিনি গ্লোবাল স্যোশ্যাল প্রটেকশন ফান্ড নিয়ে গবেষণা করছেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (BIGD)-এর খণ্ডকালীন গবেষক হিসেবে কাজ করছেন।

ড. ইদ্রিস কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের US State Department IVLP প্রোগ্রামের প্রাক্তন ফেলো। চীন, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে তার গবেষণা ও নীতি প্রণয়নে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে।

তার গবেষণার মূল ক্ষেত্র হলো বাংলাদেশে নীতি নির্ধারণের রাজনৈতিক বাস্তবতা, ক্ষমতার কাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা।

"গুম অনুসন্ধান কমিশন" ইতোমধ্যে দুটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এবং একটি তথ্যচিত্র (ডকুমেন্টারি) প্রকাশ করেছে, যেখানে বলপূর্বক গুমের পদ্ধতি, দায়িত্বে থাকা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা এবং নিখোঁজদের সম্ভাব্য পরিণতি তুলে ধরা হয়েছে।

তাদের তথ্য অনুসারে, ২০০৯ থেকে ২০২3 সালের মধ্যে সরকারি বাহিনীর দ্বারা গুম হওয়া শতাধিক ব্যক্তির বিষয়ে প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে, যার মধ্যে অনেকেই বিনা বিচারে আটক, অজ্ঞাত স্থানে নিরুদ্দেশ, বা মৃতদেহ হিসেবে উদ্ধার হয়েছেন।

কমিশনের সুপারিশগুলোতে রয়েছে:

“ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স সার্টিফিকেট” চালু করা, যা পরিবারগুলোকে আইনি স্বীকৃতি ও ক্ষতিপূরণ পেতে সহায়তা করবে।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব ও সম্পদ সুরক্ষায় বিশেষ নির্দেশনা।

ভুক্তভোগী পরিবারকে আর্থিক ও মানসিক সহায়তা প্রদানের জন্য পৃথক তহবিল গঠন।

নাগরিক সমাজের বিশ্লেষকদের মতে, ড. নাবিলা ইদ্রিসের নেতৃত্ব ও গবেষণা দক্ষতা এই কমিশনকে নিরপেক্ষ, প্রমাণভিত্তিক ও নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।

একজন বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী বলেন,"নাবিলা ইদ্রিস হচ্ছেন সেই কণ্ঠ, যিনি রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে তথ্য দিয়ে কথা বলেন। তার মতো মানুষ থাকায় এই কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা তৈরি হচ্ছে।"

কমিশনের কার্যক্রমকে ঘিরে দেশজুড়ে একটি সচেতনতা ও ন্যায়বিচারের আবহ তৈরি হয়েছে। এই কমিশন শুধু গুম নয়, বরং রাষ্ট্রের জবাবদিহিতা ও মানবাধিকারের মৌলিক প্রশ্ন নিয়ে একটি নতুন আলোচনা শুরু করেছে।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে