ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

মোদিকে ইউনূসের না সিদ্ধান্তে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন মোড়

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ১৮:৫৭:৪৮
মোদিকে ইউনূসের না সিদ্ধান্তে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন মোড়

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। দীর্ঘদিনের সীমান্ত হত্যা, তিস্তার পানি চুক্তি না হওয়া, বাণিজ্যে বৈষম্য এবং একতরফা নির্ভরশীলতার চক্র থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশ স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে, দেশের স্বার্থই আগে, ভারতের সুবিধা পরে। অন্তর্বর্তী সরকারের এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি যুগান্তকারী বার্তা হিসেবে দেখছেন।

গত ২৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নীলফামারীর চিলাহাটি, চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ এবং রাঙ্গামাটির টেগামুখ স্থলবন্দর তিনটি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া এবং হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়। কমিটির প্রতিবেদনে অবকাঠামো ঘাটতি, বাণিজ্যিক কার্যক্রমের অভাব এবং সরকারের অতিরিক্ত আর্থিক বোঝার বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই স্থলবন্দর বন্ধের সিদ্ধান্ত নিছক প্রশাসনিক খরচ কমানোর জন্য নয়, এটি একটি স্পষ্ট কূটনৈতিক বার্তা। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, বিশেষত মিজোরাম ও ত্রিপুরার জন্য এই বন্দরগুলো ছিল 'রক্তস্রোতের মতো গুরুত্বপূর্ণ'। এখন বিকল্প রুট খুঁজতে গিয়ে ভারতের খরচ বহুগুণ বাড়বে এবং দীর্ঘ সময় লাগবে। যদি এভাবে আরও চারটি স্থলবন্দর বন্ধ হয়, তবে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।

ভারতের একজন সরকারি মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, "ভারতের একচ্ছত্র আধিপত্যের দিন শেষ।" স্বাধীনতার পর থেকে ভারতকে নিকটতম মিত্র বলা হলেও, বাস্তবে ভারত বারবার বাংলাদেশকে শুধু নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে ব্যবহার করেছে। রপ্তানিতে অবরোধ, বাজারে প্রবেশে জটিলতা এবং পানির ন্যায্য হিস্যা না দেওয়ার মতো বিষয়গুলো বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে পুরনো ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

ড. ইউনূস সরকারের নতুন পররাষ্ট্রনীতিতে চীন, রাশিয়া, তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে বহুমুখী সম্পর্ক স্থাপনে জোর দেওয়া হচ্ছে। এমনকি পাকিস্তানের সঙ্গেও সম্পর্ক জোরদার করে বাংলাদেশ এক নতুন বাস্তবতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মোদি সরকারের জন্য এটি নিঃসন্দেহে এক বড় ধাক্কা। যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নানা চাপের মুখে, তখন প্রতিবেশী বাংলাদেশকে হাতছাড়া হওয়া তার সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক ব্যর্থতা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে