ঢাকা, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

বাংলাদেশকে যে পরামর্শ দিল জাতিসংঘ

২০২৫ এপ্রিল ১৩ ১১:০৬:০১
বাংলাদেশকে যে পরামর্শ দিল জাতিসংঘ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে নতুন এক অস্থিরতার নাম ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কারোপ। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্প্রতি চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় এসব দেশও পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। এ ধরনের প্রতিশোধমূলক বাণিজ্যিক পদক্ষেপের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো এমন সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘের বাণিজ্য সংস্থা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র (আইটিসি)।

আইটিসির নির্বাহী পরিচালক পামেলা কোক-হ্যামিল্টন ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন “শুল্কারোপ বৈদেশিক সাহায্য বন্ধের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।” তিনি সতর্ক করে বলেন উন্নয়নশীল দেশগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করেছে তা পিছিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

আইটিসির তথ্য অনুযায়ী বাণিজ্যযুদ্ধ অব্যাহত থাকলে বিশ্ববাণিজ্য ৩-৭ শতাংশ এবং বিশ্ব জিডিপি ০.৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এর সবচেয়ে বড় ধাক্কা লাগবে যেসব দেশ মূলত রপ্তানি নির্ভর অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে তাদের ওপর। বাংলাদেশও তাদের অন্যতম।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বড় বাজারে বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। কিন্তু যদি ট্রাম্পের ঘোষিত ৩৭ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকে তাহলে ২০২৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশ প্রায় ৩.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি হারাতে পারে এমনই পূর্বাভাস দিয়েছে আইটিসি।

এই অবস্থায় বাংলাদেশকে বিকল্প বাজার খুঁজে বের করার পরামর্শ দিয়েছেন কোক-হ্যামিল্টন। তার মতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজার এখনো প্রবৃদ্ধিশীল এবং সেখানে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই যুক্তরাষ্ট্রে সম্ভাব্য রপ্তানি হ্রাসের ঝুঁকি মোকাবিলায় ইউরোপকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

শুধু বাংলাদেশই নয় ট্রাম্পের এই শুল্কারোপের কারণে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে লেসোথো, কম্বোডিয়া, লাওস, মাদাগাস্কার এবং মিয়ানমারের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোও। আইটিসি বলছে এসব দেশ আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে এ ক্ষতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে।

উল্লেখ্য ট্রাম্প সম্প্রতি চীন বাদে অন্যান্য দেশের ওপর আরোপিত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে চীনা পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক হার বাড়িয়ে দিয়েছেন ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত। পাল্টা জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন এটি এখন আর শুধু বাণিজ্য বিরোধ নয় বরং একটি পূর্ণমাত্রার বাণিজ্য যুদ্ধ যার প্রভাব সরাসরি বিশ্ব সরবরাহ শৃঙ্খলে পড়তে শুরু করেছে। এতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অচল হয়ে পড়ার শঙ্কা বাড়ছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) এবং আইটিসি জানিয়েছে ট্রাম্পের এই ৯০ দিনের শুল্ক স্থগিতাদেশ এবং চীনের পাল্টা শুল্ক বৃদ্ধির পরবর্তী প্রভাব হিসেব করে যে পূর্বাভাস তৈরি হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে এই সংকট দীর্ঘমেয়াদি ও গুরুতর অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে