ঢাকা, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ৫ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল

২০২৫ এপ্রিল ০৭ ২০:০৩:৪০
যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ৫ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক : যুক্তরাষ্ট্র সরকার, বিশেষত ট্রাম্প প্রশাসন, সম্প্রতি ৪০০ শিক্ষার্থীর স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করেছে, যার মধ্যে ৫ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীও রয়েছে। এদের মধ্যে যারা ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বর্বর হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন, তাদেরই ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্ক রুবিও বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বর্বর হামলা এবং হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ চলছে। এ বিক্ষোভের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিপুল সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী, বিশেষ করে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এর ফলস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার সম্প্রতি কয়েকশ শিক্ষার্থীর স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়।

এদিকে, গত ৭ দিনে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা বাংলাদেশের সিলেট, ঢাকা এবং বগুড়া অঞ্চলের বাসিন্দা। এই ভিসা বাতিলের পর, অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভীতি প্রকাশ করেছেন এবং তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়েছেন।

বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী মন্তব্য করেন, কিছু শিক্ষার্থী তাদের ভিসা বাতিলের পর আদালতে গিয়ে আইনি সহায়তা চেয়ে মামলা করেছেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই কঠিন হতে পারে। তারা যাতে কোনো আইন ভঙ্গ না করে এবং তাদের ভিসা মেয়াদ শেষ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এছাড়া, গত সপ্তাহে হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্র এবং দুই সদ্য গ্রাজুয়েটের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিল। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়, যেমন কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব অ্যাক্রন, সেখানেও ভিসা বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। এই ধরনের পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে, কারণ তারা মনে করছেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।

ইমিগ্রেশন অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলোর মতে, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান এবং মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে। তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের অধিকার থাকা উচিত এবং সেদিকে খেয়াল রেখে তাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করা উচিত নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়া: কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের সাথে যোগাযোগ না করে ছাত্রদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে, যা তাদের পক্ষ থেকে গ্রহণযোগ্য নয়।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এখন সজাগ হয়ে গেছেন যে, তাঁদেরও যদি কোনো ধরনের বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করা হয়, তবে তাদের ভিসা বাতিল হতে পারে এবং তারা দেশে ফেরত যেতে বাধ্য হতে পারেন।

এখন, ইমিগ্রেশন অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলোর পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছে, যাতে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকে যুক্তরাষ্ট্র, এবং তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়।

এ পরিস্থিতি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে এবং তাদের কাছে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। ভিসা বাতিলের ব্যাপারে আরও বিস্তারিত খবর বা পদক্ষেপের বিষয়ে ভবিষ্যতে আরও আলোচনার প্রয়োজন হতে পারে।

আরিফ/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে