ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন যে ১০ বিশ্বনেতা

২০২৪ মে ২০ ১৩:২৯:২৬
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন যে ১০ বিশ্বনেতা

প্রবাস ডেস্ক : ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় সদ্য মারা গেছেন। তার আগে এই ধরনের দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন সরকারপ্রধান নিহত হয়েছেন।

বিশ্বনেতাদের এ ধরনের মৃত্যু দেশগুলোর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে, ক্ষমতা কাঠামোতে শূন্যতা সৃষ্টি করে, পাশাপাশি জনগণকে শোকের মধ্যে ফেলে দেয়।

তবে দুর্ঘটনা হলেও বেশিরভাগ সময় এসব মৃত্যুকে ঘিরে নানা জল্পনা-কল্পনা ছড়িয়ে পড়ে। আসুন জেনে নিই বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ১০ জন বিশ্বনেতা সম্পর্কে।

ইব্রাহিম রাইসি: ২০২১ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে উপসাগরীয় দেশ ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসেছিলেন ইব্রাহিম রাইসি। মাত্র তিন বছরে নিজের শক্ত অবস্থান জানান দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক মহলে। গতকাল রোববার রাইসি একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন। ফেরার পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। এতে হেলিকপ্টারে থাকা প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ সকল আরোহী নিহত হন। এখন পর্যন্ত দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি।

লেচ কাকজিনস্কি: ২০১০ সালে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট লেচ কাকজিনস্কি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন । প্রেসিডেন্ট ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী রাশিয়ার টিইউ-১৫৪ সামরিক হেলিকপ্টারটি রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় নগরী স্মলেনস্কির বাইরে একটি বিমানবন্দরে অবতরণকালে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। ওই দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ও সঙ্গে থাকা অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় পোলিশ কর্মকর্তারা নিহত হন।

ইব্রাহিম নাসির: ২০০৮ সালে মালদ্বীপের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম নাসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন। মালদ্বীপের একটি জনবসতিহীন দ্বীপে ব্যক্তিগত সফরে যাওয়ার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

হাফিজ আল-আসাদ: ২০০০ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল-আসাদ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত হন। দেশটির দামেস্কের কাছে দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। এই দুর্ঘটনার কারণ নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল আসাদের হার্ট অ্যাটাকের কারণে উড়োজাহাজ জরুরি অবতরণ করাতে চাইলে বিধ্বস্ত হয়। তবে অনেকে দাবি করেন, এটি ষড়যন্ত্র ছিল।

জেনারেল জিয়া-উল-হক: ১৯৮৮ সালে পাকিস্তানের ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট জিয়া-উল-হক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত হত। দেশটির বাহাওয়ালপুরের কাছে ওই দুর্ঘটনা হয়। দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। কেউ বলেন যান্ত্রিক ত্রুটি, কেউ নাশকতা আবার কেউ দাবি করেন ষড়যন্ত্র করেই দুর্ঘটনা ঘটনানো হয়েছিল।

র‍্যামন ম্যাগসেসে: ১৯৫৭ সালে ফিলিপাইনের সপ্তম প্রেসিডেন্ট র‍্যামন ম্যাগসেসে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত হন। দেশটির সেবু শহরের মাউন্ট মানুংগালে পার্বত্য এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। ম্যাগসেসে তাঁর শক্তিশালী কমিউনিস্ট বিরোধী নীতি এবং গণতন্ত্রের প্রতি চেতনার জন্য সুপরিচিত ছিলেন।

জুভেনাল হাব্যারিমানা ও সাইপ্রিয়েন এনটারিয়ামিরা: ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট এবং বুরুন্ডির প্রেসিডেন্ট সাইপ্রিয়েন এনটারিয়ামিরা উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হন। তাঁরা দুজনে একই উড়োজাহাজে ছিলেন। উড়োজাহাজাটি রুয়ান্ডার কিগালিতে অবতরণ করার সময় গুলিবিদ্ধ হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রুয়ান্ডা গণহত্যার সূত্রপাত বলে মনে করেন অনেকে।

সামোরা ম্যাচেল: ১৯৮৬ সালে মোজাম্বিক-দক্ষিণ আফ্রিকা সীমান্তের কাছে একটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট নিহত হন। তিনি ছিলেন মোজাম্বিকের প্রথম রাষ্ট্রপতি। উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের নেপথ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তিনি ছিলেন মার্কসবাদ-লেনিনবাদের ঐতিহ্যের একজন সমাজতান্ত্রিক সেনিক।

লিওন এমবা: ১৯৬৭ সালে গ্যাবনের প্রথম প্রেসিডেন্ট লিওন এমবা উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় মারা যান। গ্যাবন উপকূলে দুর্ঘটনার শিকার হয় উড়োজাহাজটি। তিনি ছিলেন ফ্যাং জাতিগত গোষ্ঠীর একজন সদস্য। রাজনৈতিক কারণে তিনি দীর্ঘদিন নির্বাসনে ছিলেন।

তথ্যসূত্র: ফার্স্ট পোস্ট, পলিটিকো

শেয়ারনিউজ, ২০ মে ২০২৪

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে