ঢাকা, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

দেশে ভয়াবহ হারে বেড়েছে বৈদেশিক ঋণের চাপ

২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ২০:২৮:২৪
দেশে ভয়াবহ হারে বেড়েছে বৈদেশিক ঋণের চাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের চাপ গত কয়েক বছরে ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করেছে। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের কঠোর শর্ত, সুদের হার বৃদ্ধি এবং বড় প্রকল্পগুলোর ঋণ পরিশোধ শুরু হওয়ায় দেশে বৈদেশিক ঋণ পরিষেবার বোঝা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের সদ্য প্রকাশিত ইন্টারন্যাশনাল ডেট রিপোর্ট ২০২৫—এ এসব তথ্য উঠে এসেছে।

রবিবার (৭ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে প্রায় ৪২ শতাংশ। ২০২০ সালে যেখানে বৈদেশিক ঋণ ছিল ৭ হাজার ৩৫৫ কোটি ডলার, ২০২৪ সালের শেষে তা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৪৪৮ কোটি ডলারে। সরকারি ও বেসরকারি—দুই খাতের ঋণের হিসাব অন্তর্ভুক্ত করে এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদন বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, ঋণ পরিশোধের সক্ষমতার ওপর চাপ দ্রুত বাড়ছে। ২০২০ সালে বৈদেশিক ঋণের সুদ ও আসল মিলিয়ে বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হয়েছিল ৩৭৩ কোটি ডলার। ২০২৪ সালে এই পরিমাণ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৭৩৫ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। যদিও একই সময়ে ঋণ ছাড়ের পরিমাণে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেনি—২০২০ সালে ১০২২ কোটি ডলার থেকে ২০২৪ সালে তা হয়েছে মাত্র ১ হাজার ১১০ কোটি ডলার।

বাংলাদেশের অর্থনীতি এই ঋণের চাপ কতটা বহন করতে পারছে—এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, কোভিড-পরবর্তী সময়ে ঋণ পরিশোধের চাপ দৃশ্যমানভাবে বেড়েছে। গ্রেস পিরিয়ড কমে যাওয়া, সুদের হার বাড়া এবং ম্যাচুরিটি পিরিয়ড কঠোর হওয়ায় ঋণের বাস্তব বোঝা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি জানান, আগে ঋণ টেকসই–ঝুঁকির মূল্যায়নে বাংলাদেশকে ‘লো’ ক্যাটাগরিতে রাখা হলেও এখন দেশটি ‘মডারেট’ পর্যায়ে চলে এসেছে।

এ অবস্থায় সমাধানের পথ হিসেবে তিনি দুটি দিক উল্লেখ করেন—রপ্তানি আয় বাড়ানো এবং নতুন বিদেশি ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে এমন প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া, যেগুলো বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়তা করে। অন্যথায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশ গুরুতর চাপে পড়তে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ রপ্তানি আয়ের ১৯২ শতাংশ। একই বছরে ঋণ পরিষেবার পরিমাণ রপ্তানির ১৬ শতাংশে পৌঁছেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ঋণ পরিশোধের চাপ দ্রুত বাড়ছে—এমন দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার নাম রয়েছে।

বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের বড় অংশ আসে বিশ্বব্যাংকের আইডিএ (IDA) থেকে। আইডিএর মোট ঋণের প্রায় ৩০ শতাংশ পায় বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া ও পাকিস্তান। দেশটি মোট বৈদেশিক ঋণের প্রায় ২৬ শতাংশ পেয়েছে বিশ্বব্যাংক থেকে—তারপর এডিবি এবং জাপান অবস্থান করছে পরবর্তী স্থানে।

এমজে/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে