ঢাকা, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

আট বছরের অপেক্ষা বাড়ল বেক্সিমকো সুকুক বন্ডহোল্ডারদের

২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ১৬:৩২:২৮
আট বছরের অপেক্ষা বাড়ল বেক্সিমকো সুকুক বন্ডহোল্ডারদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেক্সিমকো গ্রুপের সুকুক (শরিয়াহ-সম্মত বন্ড) এর মূল অর্থ ফেরত দেওয়ার সময়সীমা ২০৩২ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। জলবায়ু সংক্রান্ত রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে ব্যবসায়িক পরিস্থিতিতে পরিবর্তন আসায় বন্ডহোল্ডারদের এই দীর্ঘ অপেক্ষার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

সিদ্ধান্তটি এসেছে ২১ সদস্যের একটি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে। কমিটিটি গঠিত হয়েছিল বিনিয়োগ কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ট্রাস্টি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে। তারা বন্ডহোল্ডারদের সাথে বৈঠক, সোলার প্ল্যান্টগুলো পরিদর্শন এবং বিভিন্ন ইসলামি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতামত নিয়ে এই সুপারিশ তৈরি করে। গত মাসে জমা দেওয়া এক প্রতিবেদনে কমিটি জানিয়েছে, সুকুকের বর্ধিত মেয়াদ ২০৩২ সাল পর্যন্ত হতে পারে। যদিও করোতোয়া সোলার প্ল্যান্টের কার্যক্রম ২০২৩ সালের শেষে শুরু হলে সুকুকের মেয়াদ ২০৩২-এর আগে অর্থাৎ ২০৩১ সালের ডিসেম্বরের শেষে শেষ হতে পারে।

বেক্সিমকো সুকুকের বর্তমান প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মো. নুরুল হুদা বলেন, "আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং বন্ডহোল্ডারদের সাথে বৈঠকের মাধ্যমে সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেছি"। তিনি জানান, বন্ডের মেয়াদ বাড়ানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে ভবিষ্যতের ব্যবসার অবস্থার ওপর। সুকুকের মাধ্যমে মোট ৩০ বিলিয়ন টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এই অর্থ ২০০ মেগাওয়াট তেস্তা সোলার প্ল্যান্ট, ৩০ মেগাওয়াট করোতোয়া সোলার প্ল্যান্ট এবং টেক্সটাইল বিভাগ সম্প্রসারণে ব্যবহার করা হয়।

বন্ডহোল্ডাররা মুনাফার হার নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে হার বাড়ানোর দাবি জানান। সুকুকের বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী, এটি ৯ শতাংশ বেস রেট এবং ১ শতাংশ অতিরিক্ত মুনাফা দেবে। তবে, বন্ডহোল্ডাররা বেক্সিমকোর নগদ অর্থের ভিত্তিতে ডিভিডেন্ডের জন্য ৯ শতাংশের বেশি বা ১১ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফার হার নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মত, সুকুকের বেস রেট ইসলামিক ব্যাংকগুলোর বর্তমান ডিপোজিট রেট (যা প্রায় ৯ শতাংশ) এর চেয়ে বেশি হওয়া উচিত নয়।

যদিও বেক্সিমকো দাবি করেছে যে তারা সুকুকের রিটার্নের জন্য অতিরিক্ত ডিভিডেন্ড দেওয়ার মাধ্যমে ৯ শতাংশের বেশি ডিভিডেন্ড দেবে, তবে বিগত বছরগুলোতে কোম্পানির আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। গত বছর বেক্সিমকো ৩৫৮ মিলিয়ন টাকা লোকসান দেখিয়েছিল, যা আগের বছর ছিল ৭.১ বিলিয়ন টাকা মুনাফা। বর্তমানে বেক্সিমকোকে তাদের বন্ডহোল্ডারদের ছয় মাসের বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য ১.২৬ বিলিয়ন টাকা প্রয়োজন। এই দুর্বল আর্থিক পটভূমির কারণে কোম্পানিকে এখন মূলধন বাজারের শৃঙ্খলাজনিত লঙ্ঘনের জন্য অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কোম্পানি বর্তমানে তাদের ঋণের বাধ্যবাধকতা পূরণে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিদ্যুৎ বিক্রির মাসিক আয় (৫০০ মিলিয়ন টাকা) ব্যবহার করছে। বেক্সিমকো বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের পর তাদের পুনর্বিবেচিত একটি পরিকল্পনা জমা দেওয়ার জন্য আইসিবিকে অনুরোধ করেছে।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে