ঢাকা, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

অনুমোদন ছাড়া এস আলমের বিদেশি ঋণ পরিশোধ করল রূপালী ব্যাংক

২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ০০:০৫:৫২
অনুমোদন ছাড়া এস আলমের বিদেশি ঋণ পরিশোধ করল রূপালী ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ছাড়াই এসএস পাওয়ার লিমিটেডের ২৮৩ মিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণ দুই কিস্তিতে পরিশোধ করেছে। এজন্য ব্যাংকটির কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, অনুমোদন ছাড়া এই ঋণ পরিশোধ ঋণচুক্তির শর্তের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেঁষে বাঁশখালীর গন্ডামারা এলাকায় এস আলম গ্রুপ ও চীনের সেপকো থ্রি-র যৌথ মালিকানাধীন এবং এর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেন এস আলম গ্রুপের মোহাম্মদ সাইফুল আলম মাসুদ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে জানানো হয়, রূপালী ব্যাংক তাদের অনুমোদন ছাড়াই ব্যাংক অফ চায়নার সিঙ্গাপুর শাখায় ঋণের এই অর্থ পাঠিয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয় কিস্তির ১৪০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয় ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর এবং চতুর্থ কিস্তির ১৪৩ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয় ২০২৫ সালের ২৩ জুন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণ এবং ২০৩৫ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ব্যাংক অভ চায়না থেকে মোট ১ হাজার ৬৯৭ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে সুদসহ এখন পর্যন্ত ৫৭৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে।

এই অননুমোদিত পরিশোধের বিষয়ে রূপালী ব্যাংকের যোগাযোগ বিভাগ লিখিত বক্তব্যে জানায়, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) অনুমোদিত ঋণের কিস্তি বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ছাড়াই পরিশোধ করা যেতে পারে।

ব্যাংকটির যুক্তি, অফশোর ব্যাংকিং সুবিধা না থাকা এবং দ্বৈত মুদ্রায় দৈনন্দিন লেনদেন পরিচালনা করতে না পারার কারণে তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির সময় রূপালী ব্যাংক সরাসরি এফসি অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ ডেবিট করতে পারেনি। তাই নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ঋণ পরিশোধ নিশ্চিত করতে তারা অর্থ ডিএসএএ (ডেবট সার্ভিস অ্যাক্রুয়াল অ্যাকাউন্ট)-তে সরাসরি জমা করেছিল।

রূপালী ব্যাংকের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, অ্যাকাউন্টস অ্যাগ্রিমেন্ট শর্তে দুটি বিশেষ অ্যাকাউন্ট নির্দিষ্ট করা ছিল—ডিএসআরএ (ডেবট সার্ভিস রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট) ও ডিএসএএ। ডিএসএএর তহবিল শুধু ঋণ পরিশোধের উদ্দেশেই ব্যবহারযোগ্য এবং এই প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত তারিখে ঋণদাতারা ডিএসএএ থেকে কিস্তির অর্থ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে নেয়।

তবে প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির (মোট ২৪৩.৭৬ মিলিয়ন ডলার) ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যথাযথ অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। প্রথম কিস্তির সময় ডিএসআরএতে ঘাটতি পূরণের জন্য অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল, কারণ বিপিডিবি সময়মতো এসএস পাওয়ারের সরবরাহকৃত বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করেনি। দ্বিতীয় কিস্তি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করায় সেখানেও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, অবশিষ্ট কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য রুপালী ব্যাংককে আবার পর্যায়ক্রমে আবেদন করতে হবে এবং আবেদন এলেই অনুমোদন দেওয়া হবে। অর্থাৎ পঞ্চম কিস্তি পরিশোধের আগে অবশ্যই রূপালী ব্যাংককে অনুমোদন নিতে হবে।

রূপালী ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সমস্যা ছিল, যা ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়নি। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে এবং বাকি কিস্তির অর্থ পাঠানোর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত পরিশোধিত সব অর্থের যোগান দিয়েছে এস এস পাওয়ার।

মামুন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে