ঢাকা, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণসহ যত ধরনের ক্ষমতা পাচ্ছে অসীম মুনির

২০২৫ ডিসেম্বর ০৬ ১৮:৫৯:১৫
পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণসহ যত ধরনের ক্ষমতা পাচ্ছে অসীম মুনির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের সামরিক কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনে ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনিরকে দেশের প্রথম ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ (সিডিএফ) পদে নিয়োগ দিয়েছে শেহবাজ শরিফ সরকার। নতুনভাবে সৃষ্টি হওয়া এই অত্যন্ত ক্ষমতাধর পদে তার মেয়াদ থাকবে পাঁচ বছর, ফলে তিন বাহিনীর সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ এখন তার হাতেই কেন্দ্রীভূত হলো।

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ মুনিরকে চিফ অব আর্মি স্টাফ (সিওএএস) ও সিডিএফ হিসেবে যে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছিলেন, তা অনুমোদন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি। একই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে দুই পদেই পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সিডিএফ পদ মুনিরকে শুধু সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর ওপর পূর্ণ কর্তৃত্বই দেয় না—বরং জাতীয় কৌশলগত কমান্ড তদারকির ক্ষমতাও দেয়, যার অধীনে রয়েছে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাপনা। ফলে দেশটির সামরিক প্রভাবে তিনি এখন সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি।

তার পাশাপাশি এই পদে বিশেষ আইনি সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। সিডিএফ থাকাকালীন তিনি প্রেসিডেন্টের অনুরূপ মর্যাদা ও আজীবন আইনি মামলার হাত থেকে অব্যাহতি পাবেন। একই সুবিধা বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর প্রধানরাও পাবেন।

পাঁচ বছর পর চাইলে মুনির আবারও দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারবেন। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে সে আবেদন জানাতে হবে, এবং বর্তমান ক্ষমতার বাস্তবতায় তা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সাম্প্রতিক সংশোধনী অনুযায়ী, বেসামরিক সরকারের সামরিক বাহিনীর ওপর নজরদারির ক্ষমতা আগের তুলনায় কমানো হয়েছে। এখন থেকে ভাইস চিফ অব আর্মি স্টাফ (ভিসিওএএস) নিয়োগের সুপারিশ করবে সিডিএফ, আর ফেডারেল সরকার তা অনুমোদন দেবে। আগে পুরো নিয়োগ ক্ষমতা বেসামরিক সরকারের হাতে ছিল।

১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পাকিস্তান বেসামরিক ও সামরিক শাসনের দোলাচলে রয়েছে। শেষ সামরিক শাসক পারভেজ মুশাররফ ১৯৯৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশ শাসন করেন। বর্তমানে বেসামরিক সরকার ক্ষমতায় থাকলেও দেশটির রাজনীতি, অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতিতে সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব গভীর শিকড় গেড়ে আছে—অনেক বিশ্লেষক এটিকে “হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা” বলে উল্লেখ করেন।

দীর্ঘদিন ধরেই অসীম মুনিরকে আরও ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে জল্পনা চলছিল। গত ২৯ নভেম্বর সেনাপ্রধান হিসেবে তার তিন বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার দিনই সিডিএফ নিয়োগ ঘোষণার কথা থাকলেও তা কিছুটা বিলম্ব হয়।

গত মাসে গৃহীত সাংবিধানিক ২৭তম সংশোধনীর মাধ্যমে সিডিএফ পদ সৃষ্টি করা হয়, যার ফলে বাতিল করা হয়েছে চেয়ারম্যান, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি (সিজেসিসি) পদটি। মুনির এখন একযোগে তিনটি শীর্ষ সামরিক পদ—ফাইভ-স্টার ফিল্ড মার্শাল, সিওএএস এবং সিডিএফ—ধরে রেখে পাকিস্তানের ইতিহাসে অভূতপূর্ব ক্ষমতার কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। তিনি দেশটির ইতিহাসে দ্বিতীয় ফিল্ড মার্শাল; এর আগে ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে নেতৃত্বের জন্য আইয়ুব খান এই উপাধি পান।

এমজে/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে