ঢাকা, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

১১ ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা—গুজব ও ভূমিকম্পে নতুন ভয়

২০২৫ নভেম্বর ২৪ ০৯:১৫:০৭
১১ ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা—গুজব ও ভূমিকম্পে নতুন ভয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় শনিবার সন্ধ্যায় তৃতীয় দফা ভূমিকম্পের পর গুজবের ভিত্তিতে খোলা স্থানে রাত কাটিয়েছেন কয়েকশ মানুষ। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে প্রবীণ—সব বয়সী মানুষই ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরে অবস্থান করেন।

স্থানীয়দের ভাষ্য, সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটের ভূমিকম্পের পর এলাকায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যেই অনেকে গুজব ছড়িয়ে দেয়—রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে। এ কারণে অনেক পরিবার ঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে এবং পরে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও ঈদগাহে আশ্রয় নেয়।

রাত ১টার দিকে পলাশ শিল্পাঞ্চল কলেজ মাঠে দেখা যায়, নারী-পুরুষ ও শিশুরা পাটির ওপর কম্বল ও বালিশ নিয়ে অবস্থান করছেন। গৃহবধূ আমেনা বেগম বলেন, ‘আবার নাকি একটা বড় ভূমিকম্প হবে? মানুষ বলছে, তাই ছেলেমেয়েসহ এখানে চলে এসেছি।’

রিকশাচালক মো. সিদ্দিক জানান, ‘মনে ডর, তাই চলে আইছি। মানুষ তো কইতাছে।’দিনমজুর মো. রহমত বলেন, ‘দেয়ালে ফাটল হইছে। আবার হইলে বাঁচতাম না। তাই বাইরে থাকি।’

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকীন মাশরুর খান গভীর রাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাঠে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘কিছু ব্যক্তি গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক বাড়িয়েছে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে গুজব প্রতিরোধ করা হয়।’

একই দিনের তিন দফা ভূমিকম্পে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ঢাকা–চট্টগ্রাম রেললাইনের ঘোড়াশাল রেলসেতুর ২ ও ৩ নম্বর পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে ট্রেনযাত্রী ও স্থানীয়দের মাঝে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। শনিবার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এবং পলাশ উপজেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত পিলারগুলো পরিদর্শন করে।

ট্রেনযাত্রী সাব্বির হোসেন জানান, ‘এই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ১৬ জোড়া ট্রেন চলে। পিলারে ফাটল দেখে আমরা আতঙ্কে আছি।’স্থানীয় ব্যবসায়ী আজিম মিয়া জানান, প্রথম দফা ভূমিকম্পেই ফাটল সৃষ্টি হয়।

ঘোড়াশাল ফ্ল্যাগ স্টেশনে গিয়ে স্টেশনমাস্টারকে পাওয়া যায়নি। বুকিং সহকারী আব্দুল খালেক দায়িত্ব পালন করলেও তাঁর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জিনারদী রেলস্টেশন মাস্টার বরকত হোসেন বলেন, ‘ঘোড়াশাল পুরোনো রেলসেতুর পিলারে ফাটলের বিষয়টি আমরা রেলওয়ের উচ্চপর্যায়ে জানিয়েছি। নিরাপত্তার জন্য সেতু দিয়ে সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করানো হচ্ছে।’

পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুবক্কর সিদ্দিকী জানান, দুটি পিলারে ফাটল দেখা দেওয়ার বিষয়টি পূর্বাঞ্চলীয় রেল বিভাগকে জানানো হয়েছে। প্রাথমিক পরিদর্শন শেষ হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দ্রুত মাঠে নেমে ব্যবস্থা নেবেন। বর্তমানে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে।

ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ রোববার এক নোটিশে জানায়, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আবাসিক এলাকার ১১টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে বসবাসরতদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে