ঢাকা, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

ফজলুর-হাবিবসহ ৬ নেতা: নৌকা ছেড়ে যেভাবে ধানের শীষ নিলেন

২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১২:১২:৩৯
ফজলুর-হাবিবসহ ৬ নেতা: নৌকা ছেড়ে যেভাবে ধানের শীষ নিলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের রাজনীতিতে আদর্শ ও অবস্থানের পরিবর্তন নতুন কিছু নয়। ছাত্রলীগ থেকে বিএনপির উচ্চপর্যায়ে উঠে আসা বেশ কয়েকজন নেতার রাজনৈতিক যাত্রাই তার প্রমাণ। তাদের মধ্যে অন্যতম বিএনপির নীতিনির্ধারক ফজলুর রহমান ও হাবিবুর রহমান হাবিব—দুজনই একসময় ছিলেন ছাত্রলীগের তুখোড় নেতা। শুধু এ দুজন নন, প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমান, শাহজাহান সিরাজ, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ও মনিরুল হক চৌধুরীর মতো আরও কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় বিএনপি নেতা রাজনৈতিক জীবনের শুরু করেছিলেন ছাত্রলীগে, পরবর্তীতে ঘর বদলে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আসীন হন।

মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান ১৯৭৫–পরবর্তী অস্থির সময়ে ছাত্রলীগের বিদ্রোহী কমিটির সভাপতি হিসেবে উঠে আসেন এবং ১৯৮৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে কিশোরগঞ্জ-৩ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তিনি কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের রাজনীতি করলেও ২০০৮ সালে যোগ দেন বিএনপিতে এবং এখন দলটির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হাবিবুর রহমান হাবিবও ছাত্রলীগ থেকে উঠে আসেন; নব্বইয়ের গণআন্দোলনে তিনি ছিলেন সামনের সারির নেতা। সুলতান মনসুরের আমলে সহ-সভাপতি ও পরে ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়া হাবিব ১৯৯৬ সালে অভিমান ও রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে বিএনপিতে যোগ দেন।

বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমান ছাত্রলীগে সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে কাজ করেছেন এবং স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সদস্যও ছিলেন। ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমানের হাতে বিএনপির রাজনীতিতে প্রবেশ করে দলটির তৃতীয় মহাসচিব পদে ওঠেন তিনি। তার রাজনৈতিক উত্তরসূরি হিসেবে মেয়ে শামা ওবায়েদ এখন বিএনপির সক্রিয় মুখ। একইভাবে, স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠকারী শাহজাহান সিরাজ ছাত্রলীগ ও জাসদ হয়ে ১৯৯৫ সালে বিএনপিতে যোগ দেন এবং ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনীতির লড়াকু বক্তা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনও ছাত্রলীগ থেকে উঠে এসে স্বাধীনতা–পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের চিফ হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে আশির দশকে তিনি জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও উপ-প্রধানমন্ত্রী হন এবং ১৯৯২ সালে বিএনপিতে যোগ দেন; মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। আরেক নেতা মনিরুল হক চৌধুরী ১৯৭৪-৭৫ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি জাতীয় পার্টি হয়ে বিএনপিতে যোগ দেন এবং দলটির সক্রিয় রাজনীতিতে নিজের অবস্থান সুপ্রতিষ্ঠিত করেন।

এভাবে ছাত্রলীগ থেকে বিএনপির উচ্চপর্যায়ে আসা নেতাদের রাজনৈতিক ইতিহাস আবারও প্রমাণ করে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘শেষ কথা বলে কিছু নেই’—সময়, প্রেক্ষাপট ও ব্যক্তিগত অবস্থানের পরিবর্তনই অনেক সময় নতুন রাজনৈতিক পরিচয়ের জন্ম দেয়।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে