ঢাকা, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

বিখ্যাত এশিয়ান মডেলের ইসলাম গ্রহণ!

২০২৫ অক্টোবর ২৬ ১০:১৯:৫৯
বিখ্যাত এশিয়ান মডেলের ইসলাম গ্রহণ!

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক 'মিস থাইল্যান্ড' ও মডেল-অভিনেত্রী এলিজা কিম, যিনি একজন প্রেসবিটারিয়ান যাজকের কন্যা, সম্প্রতি মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তার ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়ার এবং এর আগে নিজের জীবনে আসা পরিবর্তনগুলোর কথা বলেছেন। তার জীবন যখন খ্যাতি আর চাকচিক্যে ভরা ছিল, তখন এক গভীর শূন্যতা ও পরিচয়ের সংকটে তিনি ভুগছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা থাই-মার্কিন এলিজা জানান, মডেলিং ও অভিনয় জগতে প্রবেশের পর তিনি দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তবে, এই খ্যাতি তার জীবনকে আরও বেশি নিয়ন্ত্রিত করে তোলে। তিনি অনুভব করতে শুরু করেন যে, তার জীবন তার নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই এবং তিনি যেন একটি "এজেন্সির সাথে বাঁধা পড়ে আছেন।" এই মানসিক চাপ এবং নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের অক্ষমতা তাকে গভীর হতাশায় নিমজ্জিত করে। তিনি নিজেকে "দাসী" মনে করতেন এবং "আমি কে? এলিজা কে?" এমন প্রশ্ন তার মনে বারবার আসত। তার ভেতরের অন্ধকার বেড়ে যাচ্ছিল এবং তিনি আধ্যাত্মিকতার প্রয়োজন অনুভব করছিলেন।

মাহফুজ আলম নামে একজন মালয়েশীয় বন্ধু, যিনি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন, এলিজাকে কিছু ইসলামিক পুস্তিকা দেন। এই পুস্তিকাগুলো পড়ে এলিজা ইসলাম সম্পর্কে জানতে শুরু করেন এবং প্রাথমিকভাবে তার খ্রিষ্টধর্মের বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তিনি খ্রিষ্টধর্মের রক্তক্ষয়ী ইতিহাস ও বিভিন্ন বিভাজন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন এবং বাইবেলের কিছু যুক্তিহীন বিষয়কে মেনে নিতে পারেননি। এরপর তিনি গভীর গবেষণায় মনোনিবেশ করেন।

গভীর গবেষণা ও বিশ্লেষণের পর এলিজা কিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। শাহাদা (ইসলামের মৌলিক ঘোষণা) পাঠের পর তিনি এক অদ্ভুত শান্তি ও মুক্তি অনুভব করেন। তার মতে, পোশাক বা মেকআপের চেয়ে একজন নারীর আত্মিক মূল্য অনেক বেশি, যা ইসলাম তাকে শিখিয়েছে। ইসলাম নারীকে সম্মান, মর্যাদা এবং আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা দিয়েছে। তার কাছে ইসলামের বিধানগুলো যুক্তিযুক্ত এবং স্বচ্ছ মনে হয়েছে, যা তার পূর্বের জীবনের অস্থিরতা ও আবেগপ্রবণতার বিপরীত ছিল।

এলিজা কিম বিশ্বাস করেন, ইসলাম নারীর মর্যাদা ও সুরক্ষাকে নিশ্চিত করে। তিনি বলেন, পরিবার এবং সমাজের জন্য পুরুষদের আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক সহ সব দায়িত্ব নিতে হয়, যেখানে নারীরা ব্যাপক ছাড় ও স্বাধীনতা পান। সাধারণ মুসলিম হওয়াটাই তাদের জন্য যথেষ্ট। তিনি যখন রাস্তায় অন্য কোনো হিজাবি নারীকে দেখেন, তখন তাকে নিজের বোন মনে করেন।

এলিজা কিম তার পিতার কাছে ইসলাম গ্রহণের কথা বলেন এবং তার পরিবার এই বিষয়টি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। তিনি তার পিতাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে তিনি ইসলাম গ্রহণের কথা জানাবেন। তার পিতা তাকে ধর্মীয় বিশ্বাস যদি তাকে শান্তি দেয় তবে তা গ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করেন। এলিজা তার নিজের ভেতরের শান্তি ও আত্মমর্যাদা খুঁজে পেয়েছেন এবং অন্য নারীদেরও নিজের ভেতরের মূল্যবোধ ও সত্যের সন্ধান করতে উৎসাহিত করেন। তিনি বিশ্বাস করেন, ইসলাম নারীকে তার নিজস্ব পরিচয় ও সম্মান ফিরিয়ে দেয়।

মুয়াজ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

ধর্ম ও জীবন এর সর্বশেষ খবর

ধর্ম ও জীবন - এর সব খবর



রে