ঢাকা, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

শেয়ারবাজার উন্নয়নে গঠিত বিএসইসির উপদেষ্টা কমিটি বাতিল

২০২৫ এপ্রিল ১০ ১৯:৪৫:০৮
শেয়ারবাজার উন্নয়নে গঠিত বিএসইসির উপদেষ্টা কমিটি বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় ২০১১ সালে গঠিত ১৭ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি বাতিল করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকা এই কমিটি কার্যকর কোনো ভূমিকা না রাখায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বিএসইসির ওয়েবসাইট থেকেও কমিটির নাম সরিয়ে ফেলা হয়েছে, যা ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে।

রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে পুনর্গঠিত বর্তমান বিএসইসি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের শেষদিকে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধসের প্রেক্ষিতে খন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বিএসইসি পুনর্গঠন করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নির্দেশে ২০১১ সালের ২৮ মার্চ একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়, যার আহ্বায়ক ছিলেন অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। তিনি ওই বছরের ২৩ আগস্ট বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন এবং ২০২০ সালের ১৪ মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

এরপর করোনা মহামারির মধ্যে দায়িত্ব নেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, যিনি ২০২০ সালের ১৭ মে বিএসইসিতে চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন। তিনি পদাধিকারবলে ওই উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। পাঁচ বছর দায়িত্ব পালনের পর ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে তিনি পদত্যাগ করেন। তার মেয়াদকালে কমিটির কোনো কার্যকর ভূমিকা পরিলক্ষিত হয়নি।

বিএসইসির তথ্যমতে, উপদেষ্টা কমিটির কোনো কার্যক্রম বা সভার নথিপত্র পাওয়া যায়নি। এ কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান কমিশন এবং ওয়েবসাইট থেকেও তা অপসারণ করা হয়।

২০১১ সালের ২৮ মার্চ বিএসইসির তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) ফরহাদ আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ নং XVII) এর ধারা ২৭ এর বিধানের অধীনে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপদেষ্টা কমিটিটি গঠন করা হয়।

উপদেষ্টা কমিটির সদস্যরা ছিলেন- সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সকল সদস্য (বর্তমান পদ কমিশনার), অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নর, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি, ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) সভাপতি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি, ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সভাপতি, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সভাপতি, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিসএসই) সভাপতি, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) চেয়ারম্যান, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ থেকে ড. মুস্তাফিজুর রহমান, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের সভাপতি, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার এবং ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন।

উপদেষ্টা কমিটির কার্যক্রমের শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা রয়েছে- দেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নের জন্য উপযুক্ত নীতির বিকল্প প্রস্তাব করা, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় নীতি ও কর্মসূচি সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া, বিএসইসি দ্বারা উল্লেখ করা যেতে পারে এমন অন্য কোনো বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া, উপদেষ্ট কমিটির যেকোনো সভায় বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞানসম্পন্ন কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানানো, উপদেষ্টা কমিটি কমিশন কর্তৃক প্রয়োজনীয় বিবেচিত যেকোনো সময় সভা করতে পারবে এবং উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এসইসির চেয়ারম্যান।

এ বিষয়ে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম সংবাদ মাধ্যমকে জানান, পূর্বের উপদেষ্টা কমিটি বাতিল করা হয়েছে। প্রয়োজন সাপেক্ষে বর্তমান কমিটি নতুন করে উপদেষ্টা কমিঠি গঠন করবে।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে