ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

নির্বাচন নিয়ে তিন দলের দ্বন্দ্ব, ইসির গুরুত্বপূর্ণ বার্তা

২০২৫ মার্চ ০৭ ১২:৪২:০২
নির্বাচন নিয়ে তিন দলের দ্বন্দ্ব, ইসির গুরুত্বপূর্ণ বার্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের রাজনীতিতে যখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে, তখন সমস্ত আন্দোলনকারী দলগুলোর মধ্যে একটি ঐক্য লক্ষ করা যায়। তবে, সময়ের সাথে সাথে এই দলগুলো তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক কৌশল ও আদর্শ নিয়ে সামনে এসেছে। বর্তমানে তিনটি প্রধান দল নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মতামত এবং দাবি জানাচ্ছে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলছে।

বিএনপি এবং নির্বাচন

বিএনপি শুরু থেকেই দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে আসছে। তারা বিশ্বাস করে যে, একে অপরকে সরিয়ে দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট অর্জন করা উচিত। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সম্প্রতি বলেন, “এখানে নির্বাচনের পিছিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ডিসেম্বরই আমাদের লক্ষ্য এবং জনগণের চাহিদা পূরণ করার সময় এসেছে।”

জাতীয় নাগরিক পার্টির অবস্থান

অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখন গণপরিষদ এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে। এনসিপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা জাতীয় নির্বাচন পেছাতে চাইছে না, বরং একসঙ্গে জাতীয় ও গণপরিষদ নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে। এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল আসলাম আদিব জানিয়েছেন, “গণপরিষদ এবং জাতীয় নির্বাচন একসাথে হতে পারে, এতে কোনো নির্বাচন পেছানোর প্রয়োজন নেই। এর জন্য শুধুমাত্র সরকারের প্রস্তুতির প্রয়োজন।”

জামায়াতের অবস্থান

তৃতীয় দল জামায়াতে ইসলামী, তাদের পক্ষ থেকে স্থানীয় নির্বাচনের আগে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে দাবি জানানো হয়েছে। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, “স্থানীয় নির্বাচন দ্রুত হওয়া দরকার, কারণ সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভা নির্বাচিত প্রতিনিধিহীন হয়ে পড়েছে। উন্নয়ন অচল, জনগণ তাদের সমস্যার সমাধানে নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে যাচ্ছে না।”

ইসির বক্তব্য

এদিকে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে যে, স্থানীয় নির্বাচনের আগে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, “স্থানীয় নির্বাচনের জন্য অন্তত এক বছরের সময় প্রয়োজন, কারণ এটি ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। যদি এই নির্বাচন আগে হয়, তাহলে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে যেতে পারে। তবে, আমাদের লক্ষ্য ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা।”

ইসি আরও জানায়, সরকার থেকে স্থানীয় নির্বাচনের জন্য কোনো দিকনির্দেশনা এখনও আসেনি। তবে, তারা জুনের মধ্যে ভোটার তালিকা প্রণয়নসহ অন্যান্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে চায়।

রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে নানা অভিযোগ উঠলেও, নির্বাচন কমিশন তাদের প্রস্তুতি শেষ করার জন্য সময় নিচ্ছে এবং ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে, জামায়াত এবং এনসিপির মতামতের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্ক চলছে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।

এখন সবার নজর রয়েছে ইসির পরবর্তী পদক্ষেপ এবং সরকারের পরিকল্পনা কী হবে, এবং নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে।

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে