ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

ভারতে শেখ হাসিনার গোপন জীবন: ৭ মাসের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি

২০২৫ মার্চ ০৫ ১৯:৫৯:২৭
ভারতে শেখ হাসিনার গোপন জীবন: ৭ মাসের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভারতের রাজধানী দিল্লিতে শেখ হাসিনার সাত মাস পূর্ণ হওয়ার পর তার অবস্থান, রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং ভারত সরকারের আচরণ সম্পর্কে নানা প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা ভারতে চলে আসেন এবং তখন থেকেই তিনি ভারতেই আছেন। তাঁর অবস্থান এবং পরিস্থিতি নিয়ে ভারতে এবং বাংলাদেশে বেশ কিছু প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

ভারতে থাকার পর থেকে শেখ হাসিনার কোনও ছবি বা ভিডিও প্রকাশ হয়নি। ভারত সরকার তার অবস্থান ও নিরাপত্তার জন্য তাকে সম্পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রেখেছে। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যমে কিছু অডিও বার্তা দিয়েছেন, তবে ভিডিও বা ছবি প্রকাশ করা হয়নি। এই অডিও বার্তাগুলি সাধারণত আগেভাগে ঘোষণা করা হয়ে থাকে এবং তা সরাসরি জনগণের সামনে আসার সুযোগ নেই।

হিন্ডন বিমানবন্দরে নামার পর তাকে কোথায় রাখা হয়েছে তা নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে। কিছু সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তিনি দিল্লির লুটিয়েন্স এলাকায় একটি বাংলোতে আছেন, আবার কেউ কেউ মীরাট ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে তাঁর অবস্থান সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন।তবে ভারত সরকার এখন পর্যন্ত তাঁর ঠিকানা বা অবস্থান নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। তাদের দাবি, শেখ হাসিনার নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই তিনি সেখানেই আছেন, যেখানে তাকে সর্বোত্তম নিরাপত্তা প্রদান করা সম্ভব।

ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। যদিও অতীতে ভারত অনেক বিদেশি নেতা নেত্রীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে, শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে তা এখনো করা হয়নি।ভারত সরকার তাকে "আতিথি" হিসেবে রেখেছে, কিন্তু আশ্রয় দেওয়ার জন্য কোনও আবেদন তিনি করেননি। তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং বাংলাদেশের রাজনীতির পরিস্থিতি বিবেচনা করে, আপাতত তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া নিয়ে ভারত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি।

বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনাকে তার বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রমের জন্য ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করেছে, কিন্তু ভারত এখনও কোনো সাড়া দেয়নি। ভারত মনে করছে, বাংলাদেশ থেকে প্রেরিত অনুরোধের মধ্যে যথেষ্ট নির্দিষ্টতা ও বাস্তবতা নেই। এছাড়া, বাংলাদেশ যদি তাকে ফেরত পাঠানোর জন্য যথাযথ ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা দিতে না পারে, তবে ভারত তার বিরুদ্ধে নেওয়া কোনও পদক্ষেপের আগে সেটি পর্যালোচনা করবে।

শেখ হাসিনা বারবার বলেছেন যে, তিনি একদিন দেশে ফিরে আসবেন এবং তাঁর দল আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠন করবেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তিনি বর্তমানে ৭৭ বছর বয়সী হওয়ায় এবং দেশে আওয়ামী লীগের বর্তমান পরিস্থিতি না থাকার কারণে তার রাজনৈতিক পুনরুত্থান খুবই কঠিন হবে।বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিস্থিতি এবং আওয়ামী লীগের অবস্থাও অস্থির, যা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনকে আরও জটিল করে তুলেছে।

ভারত সরকার শেখ হাসিনার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুযায়ী ভবিষ্যতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে বাংলাদেশে গঠিত পরিস্থিতির ওপর। শেখ হাসিনার ভারতে থাকার কারণে বাংলাদেশের এবং ভারতের মধ্যে অনেক রাজনৈতিক প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। তাঁর অবস্থান, রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ, এবং ভারতে তার স্থায়ী থাকার সম্ভাবনা নিয়ে নানা বিতর্ক চলছে। ভারত সরকার শর্তসাপেক্ষে তাকে দেশে ফিরে আসতে দেওয়ার সম্ভাবনা রেখেছে, তবে রাজনৈতিক পরিবেশ ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে