ঢাকা, সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি করলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক স্পিকার

২০২৪ এপ্রিল ২৫ ১৩:৪৩:৫৫
নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি করলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক স্পিকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি করেছেন।

আয়ারল্যান্ডের আরটিই নিউজকে তিনি বলেছেন, ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারকে আমরা স্বীকার করি। কিন্তু গাজা যুদ্ধে যে পরিমাণ মানুষ নিহত হয়েছেন তাদের সংখ্যা খুবই বেশি।

ন্যান্সি পেলোসি বলেন, নেতানিয়াহু যে পলিসি ও তৎপরতা শুরু করেছেন তা আমরা প্রত্যাখ্যান করি। তার এ নীতি ভয়াবহ। তিনি পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে যা করেছেন তা আরও ভয়াবহ।

তিনি বলেন, নেতানিয়াহুর গোয়েন্দা প্রধান পদত্যাগ করেছেন। এখন তারও পদত্যাগ করা উচিত। এসব কিছুর জন্য তিনিই দায়ী। নেতানিয়াহুকে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির পথে বাধা বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

আয়ারল্যান্ডভিত্তিক বেতার সংবাদমাধ্যম রেডিও টেইলিফিস ইয়েরেনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ন্যান্সি পেলোসি বলেন, ‘ইসরায়েলের অবশ্যই আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে এবং আমরা তা স্বীকারও করি; কিন্তু এ অধিকার রক্ষায় নেতানিয়াহু যে নীতি নিয়েছেন এবং যা যা করছেন— তা ভয়ঙ্কর এবং আমরা সেসব প্রত্যাখ্যান করছি।’

ন্যান্সি পেলোসি বলেন, ‘হামলার দায় স্বীকার করে তার সরকারের গোয়েন্দাপ্রধান পদত্যাগ করেছেন, তারও পদত্যাগ করা উচিত। গত ছয় মাসে যা যা হয়েছে, সেজন্য সম্পূর্ণভাবে তিনি দায়ী।’

নেতানিয়াহুকে আল আকসা ও মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে শান্তি পথে বাধা মনে করেন কি না— প্রশ্নের উত্তরে সাবেক হাউস স্পিকার বলেন, ‘অবশ্যই মনে করি। আমি জানি না—তিনি শান্তিতে বসবাস করতে অক্ষম কি না কিংবা শান্তির প্রতি অনাগ্রহী কি না…কিন্তু তিনি দীর্ঘদিন ধরে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।’ৎসাক্ষাৎকারে বাইডেন প্রশাসনকে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বানও জানিয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।

গত ৭ অক্টোবর গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে নির্বিচারের গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে হত্যা করে হামাস। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জনকে।

জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। গত ছয় মাস ধরে চলমান সেই অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।

কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অস্থায়ী বিরতি ঘোষণা করেছিল হামাস-আইডিএফ। সেই বিরতির সময় নিজেদের কব্জায় থাকা জিম্মিদের মধ্যে ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস।

অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে থেকে ১৫০ জনকে কারাগার থেকে ছেড়ে দিয়েছিল ইসরায়েলও।

ওই বিরতি শেষ হওয়ার পর গাজায় দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করছিল মধ্যস্থতাকারী তিন দেশ। চলতি বছর রমজান মাস থেকে তা শুরু হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু মূলত নেতানিয়াহুর আপত্তির কারণে তা আর হয়নি।

১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসরায়েলের সবচেয়ে বিশ্বস্ত মিত্রের ভূমিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের একমাত্র এই ইহুদি রাষ্ট্রকে সামরিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও গোয়েন্দা সহায়তা দিয়ে আসছে ওয়াশিংটন।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলা ও তার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরুর পর প্রাথমিক পর্যায়ে সেই অভিযানকে সমর্থন জানিয়েছিলেন মার্কিন রাজনীতিবিদরা। পেলোসিও তাদের মধ্যে ছিলেন।

যাহোক, সময়ের সাথে সাথে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতা বৃদ্ধি এবং যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা ম্লান হয়ে যাওয়ায়, আমেরিকান রাজনীতিবিদদের অনেকেই প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর প্রতি হতাশ হতে শুরু করেন।

কয়েকদিন আগে, কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে সরকারি দলের নেতা চাক শুমার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি নেতানিয়াহু তার পথ হারিয়েছেন এবং ইসরায়েলের জনগণের উচিত একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়া। ’

শেয়ারনিউজ, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে