ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

রূপালী লাইফের সিইওর বিরুদ্ধে কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ

২০২৫ আগস্ট ১৪ ১৭:৩২:৫৫
রূপালী লাইফের সিইওর বিরুদ্ধে কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়াবাজারে তালিকাভুক্ত জীবন বিমা খাতের কোম্পানি রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি ভুয়া ব্যবসা, ভুয়া মেডিকেল বিল, ভ্রমণ ব্যয়সহ নানা উপায়ে দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানির বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে (আইডিআরএ) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি আইডিআরএ চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়। চিঠির সঙ্গে গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে জমা দেওয়া অভিযোগের কপিও সংযুক্ত করা হয়েছে।

জানা গেছে, রূপালী লাইফের নিরীক্ষা বিভাগের ডেপুটি ম্যানেজার মো. জহিরুল ইসলাম এই অভিযোগ দাখিল করেন। তিনি অভিযোগপত্রের কপি অর্থ উপদেষ্টা ও দুর্নীতি দমন কমিশনকেও (দুদক) দিয়েছেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০০ সালে ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ দিয়ে এজিএম হিসেবে যোগ দেন গোলাম কিবরিয়া। পরে ২০১৪ সালে ভুয়া এমবিএ সনদ দেখিয়ে সিইও পদে আসীন হন। দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন এবং এর মাধ্যমে বছরের পর বছর ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, উন্নয়ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে বছরের শেষের কমিশন বিল, ইনসেনটিভ বিল ও বেতন-ভাতা কমিশন ইনচার্জ মো. আকতার হোসেনের সহযোগিতায় আত্মসাৎ করা হয়, যার মধ্যে একবারে ৯৯ হাজার ৩৭৯ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এছাড়া ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকা-চট্টগ্রাম ভ্রমণের নামে ৩৫ হাজার ৯৯২ টাকা আত্মসাৎ এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে দেশ-বিদেশ ভ্রমণের খরচ কোম্পানির ওপর চাপানোর অভিযোগ রয়েছে। একইভাবে ভুয়া আপ্যায়ন বিল, উন্নয়ন সভা ও প্রচারণার খাতে বিল তৈরি করে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। কোম্পানির গাড়ি অন্য কর্মকর্তার নামে বরাদ্দ দেখিয়ে সিইও নিজের পরিবারের সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য দিয়েছেন, যার জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণের নামে প্রায় ১৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা তছরুপ হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

ভুয়া মেডিকেল বিলের মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে ২০-২২ হাজার টাকা করে আত্মসাৎ এবং পাতানো টেন্ডারের মাধ্যমে প্রিন্টিং, স্টেশনারি ও গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগও তোলা হয়েছে। এ কাজে কোম্পানির চেয়ারম্যানের খালাতো ভাইদের সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ভুয়া ভ্রমণ ও জ্বালানি বিল, আইওইউ বাবদ নগদ উত্তোলন, ভবিষ্য তহবিল থেকে প্রায় ৬০ লাখ টাকা তছরুপ, ডামি কোড তৈরি করে কমিশন বিল আত্মসাৎ, ভুয়া ব্যবসা দেখিয়ে প্রিমিয়াম টাকা আত্মসাৎ, তামাদি পলিসির টাকা গ্রাহককে না দিয়ে আত্মসাৎ এবং বিতর্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া সনদ ব্যবহার করে সিইও পদে থাকা—এসব অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে চলমান।

এছাড়া গ্রাহকদের হয়রানি করে মৃত্যু দাবি চেক, মেয়াদোত্তীর্ণ চেক ও অন্যান্য সেবা বছরের পর বছর বিলম্বে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।

সালাহউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে