ঢাকা, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

ইসরায়েলে বিনিয়োগ ঝুঁকিতে আদানির শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ

২০২৫ জুন ১৫ ১৪:১৯:৪৬
ইসরায়েলে বিনিয়োগ ঝুঁকিতে আদানির শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সামরিক উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির শত শত কোটি ডলারের বিনিয়োগ এখন বড় ঝুঁকিতে। বিশেষ করে ইসরায়েলের হাইফা বন্দর এবং দেশটির প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে আদানি গ্রুপের বিশাল বিনিয়োগ সরাসরি ঝুঁকির আওতায় চলে এসেছে।

হাইফা বন্দরের বিনিয়োগ

২০২৩ সালে আদানি পোর্টস ১.২০ বিলিয়ন (১২০ কোটি) ডলারে ইসরায়েলের গ্যাদত গ্রুপের সঙ্গে যৌথভাবে হাইফা বন্দরের ৭০ শতাংশ মালিকানা অধিগ্রহণ করে। এই বন্দর আদানি পোর্টসের বার্ষিক কার্গোর প্রায় তিন শতাংশ পরিবহন করে এবং ইসরায়েলের আমদানি-রপ্তানিতে কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তবে ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই বন্দর বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়েছে। পুরো অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে ভূমধ্যসাগরীয় বাণিজ্যপথে বিঘ্ন ঘটতে পারে। এর ফলে পণ্য পরিবহনে বিলম্ব এবং শিপিং রুট পরিবর্তনে বড় জটিলতা তৈরি হতে পারে।

ইসরায়েলে প্রতিরক্ষা খাতে আদানির অংশীদারিত্ব

আদানি এন্টারপ্রাইজ ২০১৮ সালে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান এলবিট সিস্টেমসের সঙ্গে যৌথভাবে হায়দরাবাদে একটি ড্রোন কারখানা স্থাপন করে। এই কারখানায় তৈরি হার্মিস ৯০০ ড্রোন বর্তমানে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর (আইডিএফ) একটি প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি ইসরায়েলের বাইরে অবস্থিত একমাত্র হার্মিস ৯০০ ড্রোন নির্মাণ কেন্দ্র।

যদি যুদ্ধ আরও বেড়ে যায়, তাহলে এই ড্রোনের চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা বাড়বে। কিন্তু তারপরও আদানি গ্রুপকে নতুন রাজনৈতিক ও নৈতিক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হতে পারে। কারণ তাদের তৈরি অস্ত্র একটি সক্রিয় সংঘাতে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা সংবেদনশীলতা বাড়াবে।

ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রতিফলন

আদানি গ্রুপ ইসরায়েলের টাওয়ার সেমিকন্ডাক্টরের সঙ্গে যৌথভাবে ১০ বিলিয়ন (এক হাজার কোটি) ডলারের একটি সেমিকন্ডাক্টর প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছিল। তবে এপ্রিল মাসে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রকল্পটি আপাতত স্থগিত রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর পেছনে বাজারের অনিশ্চয়তা এবং চলমান ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা কাজ করছে, যা এই ধরনের দীর্ঘমেয়াদী ও উচ্চ প্রযুক্তির বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি করছে।

বিনিয়োগ ঝুঁকিতে শেয়ারের পতন অব্যাহত

যদিও হাইফা বন্দর আদানি পোর্টসের জন্য এককভাবে সবচেয়ে বড় রাজস্ব উৎস নয়, তবুও এর কৌশলগত গুরুত্ব বিশাল। যুদ্ধের ঝুঁকিতে এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ভবিষ্যৎ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

এরই মধ্যে ভারতীয় বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আদানি পোর্টসের শেয়ারের দর প্রায় ৩.২০ শতাংশ এবং আদানি এন্টারপ্রাইজেসের শেয়ারের দর ২.৮০ শতাংশ কমে গেছে। শেয়ারগুলোর এই পতনকে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের সরাসরি প্রভাব হিসেবেই দেখা হচ্ছে, যা আদানির আর্থিক সাম্রাজ্যের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে।

মিজান/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে