ঢাকা, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
Sharenews24

বিছানার অর্ধেক ভাড়া দিয়ে ৫০ হাজার ডলার আয়

২০২৫ মে ০৫ ২০:৩৫:২৫
বিছানার অর্ধেক ভাড়া দিয়ে ৫০ হাজার ডলার আয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থনৈতিক সংকট যখন অনেককেই দিশেহারা করে তুলেছে, ঠিক তখনই এক তরুণী খুঁজে পেয়েছেন ব্যতিক্রমী রোজগারের পথ। কানাডার বাসিন্দা ৩৭ বছর বয়সি মনিক জেরেমিয়া দাবি করেছেন, তিনি তার শোয়ার ঘরের বিছানার অর্ধেক ভাড়া দিয়ে মাসে প্রায় ৫০ হাজার মার্কিন ডলার আয় করছেন! অনলাইনে ‘হট বেডিং’ নামে পরিচিত এই সেবাটি ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

মনিকের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ‘হট বেডিং’ হল এমন এক ধরনের সেবা যেখানে তিনি তার বিছানার একপাশ ভাড়া দেন—তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্তসাপেক্ষে। সেবাগ্রহীতারা তার ঘরে থাকতে পারেন এবং একই বিছানায় ঘুমাতে পারেন, তবে কোনো শারীরিক সংযোগ (যেমন, স্পর্শ, আলিঙ্গন বা ঘনিষ্ঠতা) একমাত্র পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতেই সম্ভব। এটি একধরনের “প্লাটোনিক শেয়ারিং” ধারণা, যেখানে ঘুমানো হয় পাশাপাশি, তবে শারীরিক সম্পর্ক ছাড়াই।

মনিক জানান, কোভিড-১৯ মহামারির সময় তার জীবন আমূল বদলে যায়। লকডাউনের কারণে চাকরি হারানো, আয় বন্ধ হয়ে যাওয়া, আর সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার মতো একাধিক সমস্যা একসাথে তাকে নাজেহাল করে তোলে। একা হয়ে পড়া জীবনে যখন ফ্ল্যাটের ভাড়া মেটানোই কঠিন হয়ে পড়েছিল, তখনই মাথায় আসে এই নতুন ধারণা।

২০২৩ সালে তিনি সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানান, তিনি “উষ্ণ এবং নিরাপদ” বিছানা শেয়ার করতে আগ্রহী, তবে সেটি হবে সম্পূর্ণ সম্মতির ভিত্তিতে ও পেশাদার নিয়মে। অবাক করার মতো বিষয়, তার এই প্রস্তাবে প্রচুর মানুষ সাড়া দিতে শুরু করে। ধীরে ধীরে তিনি নিয়মিত গ্রাহকও পেয়ে যান এবং এখন মাসে আয় করছেন ৫০ হাজার ডলারের মতো!

মনিকের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একদিকে অনেকে একে চলমান বাসস্থান সংকট ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের বিরুদ্ধে এক অভিনব উদ্যোগ হিসেবে প্রশংসা করছেন। আবার অন্যদিকে, অনেকে গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, কানাডার মতো উন্নত দেশে ভাড়া ও জীবনযাত্রার ব্যয় দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে একা বসবাসকারীদের জন্য শহরাঞ্চলে বাসস্থান খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তাতে করে ‘co-sleeping’ বা শোবার ঘর শেয়ারিং এর মতো ধারণাগুলো জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

মনিক বলেন, “এই কাজ আমাকে শুধু অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দেয়নি, মানসিক স্বস্তিও ফিরিয়েছে। আমি যা করছি, তা আইনসিদ্ধ, সম্মতিসাপেক্ষ এবং নিরাপদ।”

তিনি আরও জানান, প্রতিটি গ্রাহককে তিনি যাচাই-বাছাই করেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন এবং একাধিক নিয়ম-কানুন মেনে চলেন।

জীবনযাত্রার ব্যয় যখন চেপে ধরেছে, তখন অনেকেই ভিন্নধর্মী পন্থায় নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। মনিক জেরেমিয়ার ‘হট বেডিং’ হতে পারে তেমনই একটি উদাহরণ, যা সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিতর্কিত হলেও অনেকের কাছে বাস্তব সমস্যার বাস্তব সমাধান।

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে