ঢাকা, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

ড. ইউনুসের কূটনীতির চালে যেভাবে ধরা খেয়ে গেলেন মোদি

২০২৫ এপ্রিল ০৬ ১১:৪৪:৩৪
ড. ইউনুসের কূটনীতির চালে যেভাবে ধরা খেয়ে গেলেন মোদি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে অনেক নেতাই শব্দের তেজে নিজেদের ক্ষমতা এবং প্রভাব প্রদর্শন করতে চান, কিন্তু ইতিহাস বলে, সব বিজয় মঞ্চের চিৎকারে আসে না। কিছু বিজয় আসে নিঃশব্দ কৌশলে কিংবা একটুখানি স্মৃত হাসিতে। ড. মোহাম্মদ ইউনুসের ক্ষেত্রে এটি প্রমাণিত। যদিও তাঁকে একজন নরম স্বভাবের বক্তা এবং শান্ত প্রকৃতির মানুষ হিসেবে ভাবা হয়, তিনি তার কূটনৈতিক কৌশল দিয়ে মোদি সরকারের সামনে এমন এক চ্যালেঞ্জ দাঁড় করালেন, যার ঘূর্ণিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিজেই ফাঁদে পড়লেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, যাকে বিশ্বের অন্যতম কৌশলী এবং প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত, তার কল্পনাতেও ছিল না যে, ড. ইউনুস এমন এক প্রজ্ঞাবান কূটনীতির মাধ্যমে তাকে মোকাবেলা করবেন।

একটি গম্ভীর সম্মেলন কক্ষে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে নরেন্দ্র মোদি বসে আছেন, ঠিক তখনই দরজা খুলে দৃপ্ত ভঙ্গিতে প্রবেশ করেন ড. মোহাম্মদ ইউনুস। তিনি কখনও উচ্চস্বরে কথা বলেন না, কিন্তু তার উপস্থিতি এক অদৃশ্য শক্তি ছড়িয়ে দেয়। উপস্থিত সকলে যেন নীরব সম্মান জানিয়ে তাকে দাঁড়িয়ে সন্মান জানান।

ড. ইউনুসের সাথে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছিল, যেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু দাবি তুলেছিলেন ড. ইউনুস, যেমন পানি বণ্টন, তিস্তা চুক্তি, সীমান্ত হত্যার অবসান, এবং শেখ হাসিনার ভূমিকা সম্পর্কে। তিনি মোদির সামনে এক নিঃশব্দ প্রভাব রেখে এসব দাবি তুলে ধরেন।

বৈঠকের এক পর্যায়ে, ড. ইউনুস মোদির সামনে একটি বিশেষ উপহার তুলে ধরেন—২০১৫ সালে মোদি নিজ হাতে তাকে স্বর্ণপদক পরিয়ে দিয়েছিলেন এমন একটি ছবির ফ্রেম। এই উপহার শুধুমাত্র কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং একটি গভীর বার্তা ছিল—বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ ভারতীয় সরকারের বর্তমান অবস্থানের উপর নির্ভর করছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি ছিল একটি সঠিক কূটনৈতিক কৌশল, যার মাধ্যমে ড. ইউনুস জানিয়ে দিলেন যে, সম্পর্কের মধ্যে থাকা কৃতজ্ঞতা এবং বন্ধুত্বের মূল্য ভারতকে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ছবিটি যেন শুধুমাত্র হিরোইজমের প্রতীক নয়, বরং সম্পর্কের গভীরতা এবং সুগভীর এক সত্তার চিহ্ন।

বৈঠকে, ড. ইউনুস নরেন্দ্র মোদিকে পানি বণ্টন, তিস্তা চুক্তি, সীমান্ত হত্যা এবং শেখ হাসিনার বিরোধী মন্তব্যসহ নানা বিষয় সরাসরি তুলে ধরেন। এর মাধ্যমে তিনি এমন একটি স্থির এবং দৃঢ় কণ্ঠে এই দাবি উত্থাপন করেন, যে ভারত বুঝতে পারল—এটি কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীর নয়, বরং রাষ্ট্রের সম্পর্কের বিষয়।

ড. ইউনুসের এই কূটনৈতিক ম্যানুভারের ফলে মোদি বুঝতে পারলেন, এখন কেবল তার সরকার নয়, বরং দুই দেশের সম্পর্কের জন্য একটি নতুন দিগন্ত খুলতে হবে।

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে