ঢাকা, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

‘দুপুরে বড় মেয়েকে, বিকেলে ছোট মেয়েকে দাফন করলাম’

২০২৫ জুলাই ১৩ ১৮:০১:৫১
‘দুপুরে বড় মেয়েকে, বিকেলে ছোট মেয়েকে দাফন করলাম’

নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকাডুবিতে দুই বোনের মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গেছে পরিবার। চোখের সামনে সন্তানদের হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভাঙারি ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান ও তার স্ত্রী নীপা আক্তার। সন্তানদের স্মরণ করে কেবলই বিলাপ করছেন তারা। কখনো কখনো জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন শোকে কাতর মা।

শনিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় নিহতদের বাবা আব্দুর রহমান বলেন,‘দুপুরে বড় মেয়েকে দাফন করলাম, বিকেলে ছোট মেয়েকে। এ কষ্ট যেন আর কারো জীবনে না আসে। এত বড় শূন্যতা কীভাবে ভুলব?’

তিনি জানান, কাশ্মীরা রহমান নীলা (১৭) ও ফারিয়া রহমান নীহা (৯)—দুই মেয়েই তাদের সংসারের প্রাণ ছিল। বড় আশা ছিল, তারা পড়ালেখা করে বড় হবে, পরিবারকে গর্বিত করবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন এক ঝটকায় ভেঙে গেল।

গত শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে পরিবারসহ বেড়াতে গিয়েছিলেন ব্রহ্মপুত্র নদীর দক্ষিণ চরটেকি এলাকায়। নদীতে নৌভ্রমণের সময় মাঝনদীতে পৌঁছেই নৌকাটি উল্টে যায়। আশপাশের নৌকা থেকে স্থানীয়রা আব্দুর রহমান ও তার স্ত্রীকে উদ্ধার করলেও দুই মেয়ে মুহূর্তেই নদীতে তলিয়ে যায়।

ডুবুরি দল ওই দিন সন্ধ্যায় বড় মেয়ে নীলার মরদেহ উদ্ধার করে। তবে ছোট মেয়ে নীহাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন শনিবার (১২ জুলাই) বেলা পৌনে ১২টার দিকে তার মরদেহ নদীতে ভেসে ওঠে।

এই দুর্ঘটনার ১২ দিন আগেই, ১ জুলাই ব্রহ্মপুত্রেই নৌকাডুবে মারা যায় তিন শিক্ষার্থী—জুবায়ের (৭), শাপলা (১৪) ও আবির (৬)। একই এলাকায় বারবার এমন দুর্ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

ঘটনার পর পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন এক ভিডিও বার্তায় জানান,‘দক্ষিণ চরটেকি এলাকায় নদী ভ্রমণ আপাতত বন্ধ। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছাড়া আর কোনো অনুমতি দেওয়া হবে না।’

চৌদ্দশত ইউপি চেয়ারম্যান আতাহার আলী জানান,“আব্দুর রহমান এলাকার একজন পরিচিত ব্যবসায়ী। তার মেয়েদের মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোক নেমে এসেছে।”

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে