ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

যতদিন পর ভারতে অবৈধ হয়ে যাবেন শেখ হাসিনা

২০২৪ আগস্ট ২৪ ২১:২৭:৪৩
যতদিন পর ভারতে অবৈধ হয়ে যাবেন শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ছাত্র-জনতার দুর্বার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরমধ্যে তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে।

এদিকে, শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর তার সরকারের সব কূটনীতিক লাল পাসপোর্ট বাতিল করেছে অন্তবর্তী সরকার। যেহেতু হাসিনার লাল পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে; তাই (নিয়ম অনুযায়ী) ভারতে তার অবস্থান ফুরিয়ে আসছে বলে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।

হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাদেশ সরকারের একটি সূত্র উল্লেখ করে জানায়, শেখ হাসিনা যখন দেশত্যাগ করেন তখন তার কাছে লাল পাসপোর্ট ছিল। কোনো সাধারণ সবুজ পাসপোর্ট ছিল না। ভারতের ভিসা নীতি অনুযায়ী, কূটনৈতিক লাল পাসপোর্টধারী বাংলাদেশীরা ভিসা ছাড়াই ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন এবং সর্বোচ্চ ৪৫ দিন থাকতে পারবেন। শেখ হাসিনা শনিবার (২৪ আগস্ট) পর্যন্ত ২০ দিন ভারতে কাটিয়েছেন। ফলে আর মাত্র ২৫ দিন পর ভারতে তার আইনি অবস্থান শেষ হবে। এরপর তিনি হয়ে যাবেন অবৈধ।

হিন্দুস্তান টাইমস আরও জানিয়েছে, শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিলের কারণে ভারত থেকে বাংলাদেশে তার প্রত্যার্পণ ঝুঁকি বেড়েছে। হাসিনার বিরুদ্ধে এই পর্যন্ত ৫১টি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে ৪২টি হত্যা মামলা। এসব মামলায় তার বিচার হবে।

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়টি ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় পড়বে। চুক্তিটি ২০১৬ সালে সংশোধন হয়। চুক্তিতে বলা হয়, রাজনৈতিক বিবেচনায় করা মামলার আসামি হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণ বা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানানো যাবে।

কিন্তু এই চুক্তিতে হত্যা মামলার বিষয়টি স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে রাখা হয়েছে। এছাড়া যদি মামলা ন্যায়বিচার না করার উদ্দেশ্যে করা হয় তাহলেও দুই দেশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণ না করার ক্ষেত্রে অস্বীকৃতি জানাতে পারে।

গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে হত্যা, গণহত্যা, গুম ও নির্যাতন। ফলে তাদের আপাতদৃষ্টিতে 'রাজনৈতিক' বলে খারিজ করা কঠিন। তার উপরে, ২০১৬ সালে যখন মূল চুক্তিটি সংশোধন করা হয়, তখন একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছিল যা স্থানান্তর প্রক্রিয়াটিকে আরও সহজ করে তুলেছিল।

সংশোধিত চুক্তির ১০(৩) ধারায় বলা হয়েছিল, কোনো অভিযুক্তের হস্তান্তর চাওয়ার সময় অনুরোধকারী দেশকে সেই সব অভিযোগের পক্ষে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ পেশ না-করলেও চলবে – শুধু সংশ্লিষ্ট আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পেশ করলেই সেটিকে বৈধ অনুরোধ হিসেবে ধরা হবে।

হিন্দুস্থান টাইম বলছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যে সব মামলা দায়ের হয়েছে, তার কোনওটিতে যদি আদালত ‘ফেরার’ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেয়, তাহলে তার ভিত্তিতেই সরকার ভারতের কাছে তার হস্তান্তরের অনুরোধ জানাতে পারবে।

কিন্তু এরপরেও চুক্তিতে এমন কিছু ধারা আছে, যেগুলো প্রয়োগ করে অনুরোধ-প্রাপক দেশ তা খারিজ করার অধিকার রাখে। যেমন, অনুরোধ-প্রাপক দেশেও যদি ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো ‘প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধে’র মামলা চলে, তাহলে সেটা দেখিয়ে অন্য দেশের অনুরোধ খারিজ করা যায়।

যদিও শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে অবশ্য এটা প্রযোজ্য নয়, কারণ ভারতে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হচ্ছে না বা অচিরে হওয়ারও সম্ভাবনা নেই।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে