ঢাকা, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় যেসব অভ্যাস

২০২৩ আগস্ট ২৮ ১৮:০৮:১৮
স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় যেসব অভ্যাস

লাইফস্টাইল ডেস্ক : মূলত মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে কোষগুলো মরে গেলে স্ট্রোক হয়। জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে এই ঝুঁকি কমানো সম্ভব। ব্রেন স্ট্রোক একটি মারাত্মক রোগ। স্ট্রোক হলে রোগী ও তার স্বজনদের মধ্যে মৃত্যুর আতঙ্ক বিরাজ করে। যারা বেঁচে যায় তাদের প্যারালাইসিস হবার মতো একটা অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থা বিরাজ করে। স্ট্রোকের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ২৯ অক্টোবর বিশ্ব স্ট্রোক দিবস পালন করা হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের জীবনে খাদ্যাভ্যাসের নিয়ন্ত্রণ ও কর্মক্ষমতার নিয়মিত সঠিক পরিচর্যা না করলে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকার মতো জায়গায় বছরে অন্তত ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ স্ট্রোকে মারা যান। আর প্রতি বছর ৭ লাখ ৯৫ হাজার স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।

বাংলাদেশেও দিন দিন বাড়ছে এই রোগ ও এতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা। তাই হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে জেনে আগেই সচেতন হবার পরামর্শ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।

বর্তমানে এই রোগটি মানুষের মৃত্যুর চতুর্থ কারণ হিসেবে ধরা হয়। এ রোগে মস্তিষ্কের অংশবিশেষ নষ্ট হওয়ায় রোগীর দেহে বেশ কিছু শারীরিক অক্ষমতা দেখা দেয়। যেগুলোকে স্ট্রোকের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

যেমন: প্যারালাইসিস, পা, হাত, মুখ অথবা শরীরের ডান বা বাম অংশ অবশ হয়ে যাওয়া। কথা বলতে বা কথা বুঝতে সমস্যা হওয়া, কথা জড়িয়ে আসা, একটা চোখে অথবা উভয় চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া, চলাফেরায় ভারসাম্য নষ্ট হওয়া, বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্রমে অসামঞ্জস্য দেখা দেওয়া, হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা দেখা দেওয়া।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্ট্রোক আমাদের জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাসের ওপর অনেকটাই নির্ভর করে। জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস যদি সঠিক থাকে, তাহলে অনেক মারাত্বক অসুখই প্রতিরোধ করা সম্ভব। জেনে রাখা ভালো, কোন কোন জীবনধারা অনিয়মের কারণে স্ট্রোকের সমস্যা দেখা দেয়।

চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক যে জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়-

ফ্যাটজাতীয় খাবার: প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাট থাকলে তা রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। এতে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। প্যাকেটজাত এবং প্যাকেটজাত খাবারেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে লবণ এবং নাইট্রেট সংরক্ষণকারী থাকে, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

শরীরচর্চার অভাব: আপনি যদি ব্যায়াম না করেন তবে এটি শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। ফলে উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, উচ্চ কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে। এই কারণে, আপনি যখন খুব ব্যস্ত থাকেন তখনও বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত ব্যায়ামের পরামর্শ দেন।

শরীরে মেদ জমলে: শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমলেই তাকে ওবেসিটির সমস্যা বলা হয়। ওবেসিটি হলে শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়ে। এছাড়া ওবেসিটির ফলে ডায়াবেটিস রোগ ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। এতে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।

মদ্যপান: অত্যধিক মাত্রায় মদ্যপান স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় বলে বক্তব্য বিশেষজ্ঞদের। অতিরিক্ত মদ্যপান অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপের অন্যতম কারণ। অ্যালকোহল শিরা ও ধমনীর স্থিতিস্থাপকতাকে মারাত্মক ভাবে প্রভাবিত করতে পারে। যা স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণ।

ধূমপান: অ্যালকোহলের মতো ধূমপানও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। ধূমপান হৃদপিণ্ডের যেমন ক্ষতি করে তেমনি রক্তচাপেও প্রভাব ফেলে। ধূমপানের ফলে শরীরে অসংখ্য ক্ষতিকর পদার্থ প্রবেশ করে। এমনকি, পরোক্ষ ধূমপানেও প্রবল ক্ষতি হয় শরীরের। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। ফলে ফুসফুসের পাশাপাশি ক্ষতি হয় সংবহনতন্ত্রেরও।

শারীরিক পরিশ্রম: যারা শারীরিকভাবে কম সক্রিয় বা যারা প্রতিদিন কাজ করেন না তাদেরও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। দিনের বেশির ভাগ সময় বসে থাকা, স্থূলতা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। এই ধরনের জীবনযাত্রা স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। ফলে ভবিষ্যতে স্ট্রোকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

শেয়ারনিউজ, ২৮ আগস্ট ২০২৩

পাঠকের মতামত:

লাইফ স্টাইল এর সর্বশেষ খবর

লাইফ স্টাইল - এর সব খবর



রে