ঢাকা, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

পদত্যাগ করতে বলার পরেও যে কারণে ক্ষমতা ছাড়েনি উপদেষ্টারা

২০২৫ অক্টোবর ২৬ ০৮:৪৭:২১
পদত্যাগ করতে বলার পরেও যে কারণে ক্ষমতা ছাড়েনি উপদেষ্টারা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বেশ কয়েকজন উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, যা সরকারের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকারক বলে মনে করা হচ্ছে।

বিতর্কের মূল বিষয়:

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে দুজন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এই দুজন হলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। জানা গেছে, মাহফুজ আলম এখনও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না এবং সরকারের দায়িত্বে থাকতে চান। অন্যদিকে, আসিফ মাহমুদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে পদত্যাগ করতে পারেন, তবে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আপত্তি:

বিএনপি: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিনজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে প্রশাসনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ করেছে। এরা হলেন ফাওজুল কবির খান (জুলাইনি উপদেষ্টা), শেখ আব্দুর রশিদ (মন্ত্রিপরিষদ সচিব) এবং খোদা বকস চৌধুরী (প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী)।

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ: অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে। জামায়াতের অভিযোগ, এই উপদেষ্টাদের সঙ্গে একটি বৃহৎ দলের সুসম্পর্ক আগামী নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি): আসিফ নজরুল, ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আদিলুর রহমান খান শুভ্র, সালেহ উদ্দিন আহমেদ এবং মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানের নাম উল্লেখ করে আপত্তি জানিয়েছে। এনসিপি-এর নেতাদের মতে, শুধু এই দুই ছাত্র প্রতিনিধিকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।

উপদেষ্টাদের অবস্থান ও প্রস্তাবনা:

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম আত্মপক্ষ সমর্থনে বলেছেন যে, তিনি পক্ষপাতদুষ্ট চিন্তা করতে বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে অভ্যস্ত নন। তিনি সবসময় কোনো অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী না হয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ফাওজুল কবির খান প্রস্তাব করেছেন যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টাবৃন্দ, বিশেষ সহকারী এবং চুক্তিভিত্তিক নিযুক্ত সকল কর্মকর্তাদের কেউই পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের কোনো লাভজনক পদে অংশ নিতে পারবেন না। তিনি মনে করেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থেকে পদত্যাগ করবেন, তাদের ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হবে না।

বিশ্লেষকদের মতামত ও নির্বাচনের প্রেক্ষাপট:

বিশ্লেষকরা বলছেন, উপদেষ্টা পরিষদকে ঘিরে প্রকাশিত নানা বক্তব্য সরকার এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর। তাদের মতে, দুই ছাত্র উপদেষ্টার উচিত পদত্যাগ করা অথবা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হতে পারে এবং ডিসেম্বরের প্রথম দিকে তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে উপদেষ্টা পরিষদকে ঘিরে চলমান বিতর্ক ইতিমধ্যেই রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

মুয়াজ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে