ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

পিরামিডের ভয়ঙ্কর রহস্য প্রকাশ করলেন বিজ্ঞানীরা

২০২৫ অক্টোবর ২৪ ১৫:৩৩:৫০
পিরামিডের ভয়ঙ্কর রহস্য প্রকাশ করলেন বিজ্ঞানীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: মিশরের পিরামিড সম্পর্কে বিভিন্ন তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করে, যেখানে বলা হয়েছে যে পিরামিডগুলি কেবল রাজকীয় সমাধি নয়, বরং সম্ভবত প্রাচীনকালে শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

প্রাথমিকভাবে, গবেষকরা বিশ্বাস করতেন যে মিশরের পিরামিডগুলি রাজাদের মমি রাখার জন্য নির্মিত হয়েছিল। তবে, পিরামিডের ভেতর থেকে কোনো মমি পাওয়া যায়নি। বরং, আজ পর্যন্ত যত মমি পাওয়া গেছে, সেগুলি সবই "কিং ভ্যালি" (রাজাদের উপত্যকা) থেকে এসেছে। পিরামিডগুলির অভ্যন্তরে কোনো দেয়ালচিত্র বা চিত্রলিপিও পাওয়া যায়নি। এই কারণে, কিছু বিজ্ঞানী পিরামিড নিয়ে ভিন্ন তথ্য দিতে শুরু করেন, যার মধ্যে একজন হলেন বিখ্যাত বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলা।

ইঞ্জিনিয়ার জন ক্যাডম্যানের তৈরি একটি মডেল দেখায় যে, মিশরের গিজার পিরামিডগুলি তড়িৎচুম্বকীয় শক্তি (electromagnetic energy) উৎপন্ন করতে পারতো। এটি নিকোলা টেসলার ওয়ারডেনক্লিফ টাওয়ারের (Wardenclyffe Tower) মতো কাজ করতো, যা দিয়ে তিনি তারহীন বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চেয়েছিলেন। ক্রিস্টোফার ডানের লেখা "দ্য গিজা পাওয়ার প্ল্যান্ট: টেকনোলজিস অফ অ্যানসিয়েন্ট ইজিপ্ট" (The Giza Power Plant: Technologies of Ancient Egypt) বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর পিরামিড সম্পর্কে বিশ্বজুড়ে আগ্রহ বাড়ে।

নিকোলা টেসলা পিরামিড সম্পর্কে গবেষণা করে জানতে পারেন যে, পিরামিড অবিশ্বাস্য পরিমাণে শক্তি ধারণ করে রেখেছে। তাঁর মতে, পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রকে ব্যবহার করে পিরামিড শক্তি উৎপন্ন করতো। পিরামিডের ভূগর্ভস্থ চেম্বার ভোল্ট (voltaic cell) এর মতো কাজ করতো, যা শক ওয়েভ (shock wave) তৈরি করতে পারতো। কিং এবং কুইনস চেম্বারগুলি পিজোইলেক্ট্রিক ক্রিস্টাল (piezoelectric crystal) দিয়ে তৈরি, যা বৈদ্যুতিক চার্জ উৎপন্ন করতে পারে। কুইনস চেম্বার হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করতে পারতো, যা উচ্চচাপে কন্ডাক্টরের মতো কাজ করে।

পিরামিড নির্মাণে ব্যবহৃত উপাদানগুলির মধ্যে ছিল রোজ গ্রানাইট, যাতে উচ্চ ঘনত্বের সিলিকন ডাইঅক্সাইড (কোয়ার্টজ) থাকে। এছাড়া, পিরামিডগুলিকে বিশেষ সাদা চুনাপাথর (white limestone বা nummulite limestone) দিয়ে আবৃত করা হয়েছিল, যা ইনসুলেটর হিসেবে কাজ করে এবং দূর থেকে দেখলে পিরামিডগুলিকে তারার মতো উজ্জ্বল দেখায়।

পিরামিডের মাথায় একটি কন্ডাক্টিভ মেটেরিয়াল (capstone) অনুপস্থিত রয়েছে। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, এটি পিরামিডের সবচেয়ে মূল্যবান অংশ ছিল, যা সম্ভবত ঝড়, ভূমিকম্প বা চুরি হয়ে যাওয়ার কারণে হারিয়ে গেছে।

১৯৯৩ সালে, গবেষকরা পিরামিডের ভেতরে একটি ছোট গর্ত আবিষ্কার করেন এবং এর ভেতরে একটি ছোট কক্ষ খুঁজে পান। ২০১১ সালে একটি রোবোটিক ক্যামেরা দিয়ে এই কক্ষটি ("দ্য কুইনস চেম্বার") অনুসন্ধান করা হয় এবং গবেষকরা এর ভেতর থেকে হাইড্রোজেন গ্যাসের সন্ধান পান।

পিরামিডের নিচে ভূগর্ভস্থ চেম্বারে জল প্রবাহিত হতো বলে জানা গেছে। টেসলা বিশ্বাস করতেন যে, এই জলের প্রবাহের ফলে শক ওয়েভ তৈরি হতো, যা কোয়ার্টজ ক্রিস্টালে পৌঁছে বাতাসকে আয়নিত করতো এবং তড়িৎচুম্বকীয় শক্তি উৎপাদন করতো। অনেক গবেষক মনে করেন, পিরামিডের কাছেই বয়ে যাওয়া নীল নদ থেকে এই জল আসতো।

যদিও এগুলি কেবল তত্ত্ব, তবে মিশরের পিরামিডগুলি কীভাবে তৈরি হয়েছিল এবং তাদের আসল উদ্দেশ্য কী ছিল, তা আজও রহস্যে ঢাকা।

মুয়াজ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর সর্বশেষ খবর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি - এর সব খবর



রে