ঢাকা, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

বিএসইসি’র কঠোর নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

২০২৫ অক্টোবর ২২ ২১:২২:১৮
বিএসইসি’র কঠোর নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রণীত ‘মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা ২০২৫’ ও ‘মার্জিন বিধিমালা ২০২৫’-এর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে বিক্ষোভ করেছেন শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা। তাদের দাবি—চূড়ান্ত করার আগে কমিশন যেন সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়।

বুধবার (২২ অক্টোবর ২০২৫) দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে পুরাতন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ভবনের সামনে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারী ঐক্য ফ্রন্ট এবং বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশন। মানববন্ধনে অংশ নেন অসংখ্য বিনিয়োগকারী, যারা বিএসইসি-এর সাম্প্রতিক নীতিমালাগুলোর বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, বিএসইসি-এর একতরফা ও অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তগুলো শেয়ারবাজারে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। তাদের ভাষায়, খসড়া বিধিমালাগুলোতে এমন সব কঠোর বিধান রাখা হয়েছে যা মিউচুয়াল ফান্ড খাত, বিনিয়োগকারী শ্রেণি এবং পুরো শেয়ারবাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারী ঐক্য ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল হক জুয়েল বলেন, “বিএসইসি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা উপেক্ষা করে একের পর এক কঠোর নীতি নিচ্ছে, যা বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। কোনো নীতিমালা প্রণয়নের আগে কমিশন বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে পরামর্শ করছে না। ফলে বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার মার্কেট ক্যাপ উধাও হয়ে গেছে, অসংখ্য বিনিয়োগকারী দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন।”

একজন ক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারী বলেন, “কঠোর প্রভিশনিং নীতির কারণে আমরা টানা দুই বছর কোনো ডিভিডেন্ড পাচ্ছি না। এরপরও কমিশন এসব ফান্ড জোরপূর্বক বন্ধ করার উদ্যোগ নিচ্ছে। অথচ এগুলো আমাদের নিজস্ব বিনিয়োগ—এগুলো বন্ধ করার কোনো নৈতিক বা আইনগত অধিকার বিএসইসি’র নেই।”

মার্জিন বিধিমালা ২০২৫ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। তাদের অভিযোগ—নতুন বিধিমালা অনুযায়ী মার্জিন ঋণ কেবল ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ারে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। কোনো শেয়ার ‘বি’ বা ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নেমে গেলে দ্রুত বিক্রির বাধ্যবাধকতা এবং দাম কমে গেলে জোরপূর্বক বিক্রির বিধান রাখা হয়েছে। তাদের আশঙ্কা, এই নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে ব্রোকারেজ হাউস পর্যন্ত সবার জন্যই মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হবে।

বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক শেখ মেহেদী ফারহান বলেন, “সংস্কারের নামে বিএসইসি-এর কিছু কর্মকর্তা এমন উদ্ভট নীতিমালা প্রণয়ন করছেন যা লক্ষাধিক বিনিয়োগকারীর ক্ষতি ডেকে আনবে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বললেও আসলে কমিশন নিজেদের স্বার্থই রক্ষা করছে। আগে বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনুন, তারপর সংস্কারের কথা বলুন।”

এদিকে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মানিক বলেন, “বিএসইসি-এর খসড়া মার্জিন রুলসে শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে। এর কারণে বড় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে সরে যাচ্ছেন।”

বিক্ষোভকারীরা বিএসইসি-এর বিতর্কিত বিধিমালা পুনর্বিবেচনার দাবি জানান এবং বিনিয়োগকারীদের মতামত নিয়ে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন।

তহা/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে