ঢাকা, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

কারসাজির জালে জিকিউ বলপেন: ডিএসইকে তদন্ত করার নির্দেশ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৯ ১৮:২২:২৬
কারসাজির জালে জিকিউ বলপেন: ডিএসইকে তদন্ত করার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জিকিউ বলপেনের শেয়ারের মূল্য এবং লেনদেনে অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হওয়ায় কঠোর অবস্থানে গেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। নিয়ন্ত্রক সংস্থা এই অস্বাভাবিক গতিবিধি খতিয়ে দেখতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) নির্দেশ দিয়েছে। বিএসইসি-র নির্দেশনার ভিত্তিতেই ডিএসই ইতোমধ্যেই আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

বিএসইসি-র পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম শেয়ারনিউজকে বলেছেন, ডিএসই-র তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে কমিশন যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেবে। তিনি আরও জানান, বিএসইসি-র নিজস্ব সার্ভিল্যান্স টিম প্রতিদিন কোম্পানিটির লেনদেন এবং শেয়ারের দাম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

বিএসইসি কর্তৃক ডিএসই-কে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, জিকিউ বলপেনের শেয়ারের দাম ও লেনদেনে সুস্পষ্ট অস্বাভাবিকতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি ও লেনদেনের পেছনে কোনো প্রকার কারসাজি চক্রের হাত রয়েছে কিনা, তা বিস্তারিতভাবে যাচাই করার জন্য ডিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে সম্পূর্ণ তদন্ত সম্পন্ন করে এর বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেওয়ার সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, স্বল্প সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। গত ২৩ জুন জিকিউ বলপেনের শেয়ারের দাম ছিল ১৫৯ টাকা ৮০ পয়সা, যা আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেড়ে ৫৯৯ টাকা ৫০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, মাত্র ৫০ কর্মদিবসে শেয়ারটির দাম বেড়েছে ৪৩৯ টাকা ৭০ পয়সা, যা শতকরা হিসাবে ২৭৫.১৫ শতাংশ।

বাজারসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা এই অস্বাভাবিক উত্থানকে কোনো স্বাভাবিক ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির ফল হিসেবে দেখতে নারাজ। তাদের মতে, এটি স্বল্প মূলধনী কোম্পানির দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে একটি সিন্ডিকেট কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়ানোর ফল। তাদের দাবি, কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক অবস্থা কখনোই এমন উল্লম্ফনকে সমর্থন করার মতো শক্তিশালী নয়, এবং প্রতিদিনের অস্বাভাবিক লেনদেনধারা স্পষ্টভাবেই সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজির ইঙ্গিত দেয়।

এ বিষয়ে আরও পড়ুন-

আরও বেপরোয়া কারসাজিকারী চক্র, নিয়ন্ত্রক সংস্থার অস্তিত্ব প্রশ্নবিদ্ধ

কোম্পানিটির আর্থিক চিত্র বিনিয়োগকারীদের জন্য মোটেও ভরসাযোগ্য নয়। টানা তিন অর্থবছর ধরে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটি ঋণাত্মক মুনাফা বা লোকসান দেখাচ্ছে। ২০২৪ সালে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৩ টাকা ৫০ পয়সা, ২০২৩ সালে লোকসান ছিল ১২ পয়সা, এবং ২০২২ সালে ছিল ২ টাকা ৬৫ পয়সা। এছাড়া কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন মাত্র ৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা, যা কারসাজিকারীদের জন্য অল্প শেয়ার নিয়ন্ত্রণ করেই উল্লম্ব লেনদেন করা সহজ করে তুলেছে। অভিযোগ রয়েছে যে, কোম্পানির প্রায় সব শেয়ারই কারসাজিকারীদের হাতে জমা রয়েছে, যার ফলে তারা অল্প লেনদেনের মাধ্যমেও শেয়ারটির দাম ইচ্ছেমতো আকাশচুম্বী করতে পারছে।

মামুন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে