ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

বিতর্কের মুখে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের প্রেস সেক্রেটারি

২০২৫ আগস্ট ২১ ১৩:০০:০৮
বিতর্কের মুখে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের প্রেস সেক্রেটারি

নিজস্ব প্রতিবেদক: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের প্রেস সেক্রেটারি মাহফুজ আলমকে ঘিরে টেন্ডার কমিশন সংক্রান্ত একটি কথোপকথন সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস হওয়ার পর নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অডিও ক্লিপে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় কমিশন নির্ধারণ, ফাইল আটকে রাখা, চুক্তিপত্র (নোয়া) ঝুলিয়ে রাখা এবং প্রকল্প অনুমোদনের বিনিময়ে ঘুষ লেনদেনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

ফাঁস হওয়া অডিওটি প্রকাশ করেছেন প্রবাসী সাংবাদিক জওয়াদ নির্জর। তার দাবি, মাহফুজ আলমের কল লিস্ট (সিডিআর) বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তিনি নিয়মিত দুবাইয়ের বিভিন্ন রিয়েল এস্টেট ও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। অতীতে মাহফুজের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অস্বচ্ছ লেনদেনের আরও কয়েকটি অডিও ফাঁস হয়েছিল, যা নিয়েও সামাজিক মাধ্যমে তুমুল সমালোচনা হয়েছিল।

ফাঁস হওয়া কথোপকথনে শোনা যায়, এক ঠিকাদারের সঙ্গে আলাপে মাহফুজ আলম বলেন:“আমি তো সচিবকে নাম্বার দিয়ে রেখেছি, যেন এই চারটি ফাইল দ্রুত হয়ে যায়। কালকে উপদেষ্টা মহোদয়কে দিয়ে সাইন করাবো। এরপর চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে তিনি ডাকবেন। কমিশন অনুযায়ী কাজ হবে। প্রথমে ৫০% দিয়ে দেবে, বাকি টাকা সিসিটিভি পাশ হওয়ার পর।”

অন্য অংশে ঠিকাদারকে তিনি বলেন:“কাজ কনফার্ম করলে ৩% কমিশন হবে। কক্সবাজারে ডিপিডিসির কিছু কাজ চলছে ৬% কমিশনে। এগুলো সবসময় মিডলম্যানের মাধ্যমে হয়।”

আরেকটি ক্লিপে মাহফুজকে বলতে শোনা যায়:“আমি নোয়াটা (চুক্তিপত্র) ঝুলিয়ে রাখব, কনফার্মেশন দিলে পরে এগোবো। এখন যেটা হচ্ছে, চুক্তি ২.৫ শতাংশে করতে হবে।”

এছাড়া, কথোপকথনে বেশ কয়েকবার টাকা লেনদেন, কমিশন ভাগাভাগি, এবং নির্দিষ্ট কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ফাইল এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট আলোচনা উঠে আসে।

সমালোচকরা বলছেন, এই অডিও প্রমাণ করে যে প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কাজে লাগিয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করা হচ্ছে। এটি সুস্পষ্টভাবে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরছে। অন্যদিকে, মাহফুজ আলমের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র দাবি করেছে, এসব অডিও এআই (Artificial Intelligence)-এর মাধ্যমে তৈরি ও বিকৃত করা হয়েছে।

তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে—যদি এসব অডিও ভুয়া হয়, তাহলে টেন্ডার ও ফাইল প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে কেন বারবার মাহফুজ আলমের নাম উঠে আসে?

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই অডিও ফাঁস নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক। অনেকেই ঘটনাটি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, বিষয়টি সত্য হলে এটি প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির প্রতি বড় চ্যালেঞ্জ।

একজন মন্তব্যে লিখেছেন: "এটা যদি সত্যি হয়, তবে এটা শুধু ব্যক্তি মাহফুজের না, পুরো প্রশাসনিক ব্যবস্থার দুর্নীতির প্রতিফলন।"

বর্তমানে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়নি। তবে সামাজিক চাপের মুখে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। যদি প্রমাণিত হয় যে অডিওগুলো সত্য, তাহলে দুর্নীতির অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহণ অনিবার্য হয়ে উঠবে।

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে