নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈশাখী টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদনে ২০১২ সালে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে অসম্মানজনক আচরণের অভিযোগের বিষয়টি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই তথ্যটি বৈশাখী টিভির 'জিরো আওয়ার' অনুষ্ঠানে মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর প্রকাশ করেছেন।

ফজলে এলাহী আকবরের মতে, ২০১২ সালের সেই অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার অভিজ্ঞতা সুখকর ছিল না। তিনি তখন বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন এবং একই সাথে একজন প্রাক্তন সেনাপ্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধানের স্ত্রী এবং তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও তার পরিচয় ছিল।

সেনাকুঞ্জের উত্তর গেটের প্রটোকল অনুযায়ী, নির্দিষ্ট ছয়জন ব্যক্তি—তিন বাহিনীর প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পিএসও, বিরোধীদলীয় নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী—প্রবেশ করে থাকেন। কিন্তু ২০১২ সালের সেই দিন, খালেদা জিয়ার গাড়ি পৌঁছানোর পর একজন নারী নৌবাহিনী কর্মকর্তা তাকে জানান যে তিনি লাল গালিচা ব্যবহার করতে পারবেন না এবং পাশের পথ দিয়ে যেতে হবে।

এই ঘটনায় ফজলে এলাহী আকবর বিস্মিত হন, কারণ খালেদা জিয়া ২০০৯ সাল থেকে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আসছিলেন। তিনি সেই কর্মকর্তাকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করেন এবং প্রশ্ন তোলেন যে, যদি তাকে যথাযথ সম্মান জানানো না হবে, তবে সেই গেট দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হলো কেন।

এই আলোচনার সময়, খালেদা জিয়া বিষয়টি জানতে পারেন এবং লাল গালিচা ব্যবহার না করেই সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যান। ফজলে এলাহী আকবর আরও উল্লেখ করেন যে, সাধারণত তিন বাহিনীর প্রধান এবং পিএসও অতিথিদের স্বাগত জানাতে সিঁড়ির উপরে উপস্থিত থাকলেও, সেদিন তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য কেউ ছিলেন না। তিনি এই ঘটনাকে বিরোধীদলীয় নেতার প্রতি একটি বড় অপমান হিসেবে বর্ণনা করেন।

এই ঘটনার পর, ফজলে এলাহী আকবর খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দেন যে, এমন অসম্মানজনক আচরণের শিকার হলে তার আর এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া উচিত নয় এবং এরপর থেকে তিনি আর যাননি।

প্রতিবেদনের শেষে উল্লেখ করা হয় যে, সাম্প্রতিককালে ২১ নভেম্বরের একটি অনুষ্ঠানে সশস্ত্র বাহিনী খালেদা জিয়াকে যথাযথ সম্মানের সঙ্গে স্বাগত জানায়, যা ফজলে এলাহী আকবর তার মর্যাদার পুনঃপ্রতিষ্ঠা হিসেবে দেখছেন।

জাহিদ/