ঢাকা, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

বিএনপি নবজন্ম নিয়ে পিনাকি ভট্টাচার্যের চমকপ্রদ বিশ্লেষণ

২০২৫ জুলাই ১৬ ১০:৫৯:৪৭
বিএনপি নবজন্ম নিয়ে পিনাকি ভট্টাচার্যের চমকপ্রদ বিশ্লেষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি আজ এক সংকটপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে। বিশ্লেষক পিনাকি ভট্টাচার্য তার সাম্প্রতিক বক্তব্যে বলেন, বিএনপির সামনে এখন দুটো পথ—একটা আত্মধ্বংসের, আরেকটা নবজন্মের। এ অবস্থায় দলের ভেতরের বিশৃঙ্খলা, চিন্তার দৈন্যতা ও নেতৃত্বের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

তিনি বলেন, “বিএনপি যদি ভাবে পুরনো ধাঁচে ফিরে গিয়েই ক্ষমতা ফিরে আসবে, তবে তা দিবাস্বপ্নের বেশি কিছু নয়।” তার মতে, আত্মসমালোচনা, কাঠামোগত সংস্কার এবং নতুন রাজনৈতিক চিন্তার সাহস না থাকলে বিএনপি গণমানুষের দলে পরিণত হতে পারবে না।

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে সহিংসতা, থানা ঘেরাও এবং দলীয় নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের খবর সামনে এসেছে। পিনাকি অভিযোগ করেন, “গত ছয় মাসে অন্তত ৪৩ জন বিএনপি কর্মী নিজেদের দ্বন্দ্বে নিহত হয়েছেন।”

তিনি বলেন, “আপনারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন, কিন্তু থানা ঘেরাও করে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যান—এটা দ্বিচারিতা। এর জবাবদিহি আপনাদের নেতাকেই দিতে হবে।”

পিনাকি ভট্টাচার্য গভীর রাজনৈতিক বিশ্লেষণে বলেন, একটি আধুনিক রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব কেবল ভূখণ্ডের মালিকানায় নয়, রাজনৈতিক কাঠামোর উপরও নির্ভরশীল। রাজনৈতিক দল ধ্বংস হলে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভারসাম্য ভেঙে পড়ে। তিনি উদাহরণ দেন ইরাক, লিবিয়া ও আফগানিস্তানের, যেখানে রাজনৈতিক শূন্যতার ফলে রাষ্ট্র দুর্বল হয়ে পড়ে।

তার মতে, “রাজনৈতিক দল কেবল ক্ষমতার জন্য লড়াই করে না, তারা জনগণের মতামতের সাংগঠনিক প্রতিফলন এবং নীতিনির্ধারণে বিকল্প ধারণার উৎস।”

তিনি দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, “বিএনপির অনেক তথাকথিত বুদ্ধিজীবী বা ইনফ্লুয়েন্সাররা কোনো পেশাগত দক্ষতা ছাড়াই নেতাকর্মীদের প্রভাবিত করছেন। দলকে চালাতে হলে শুধু বক্তৃতা নয়, বাস্তব জ্ঞান ও দক্ষতা দরকার।”

তার মতে, বিএনপির তৃণমূল কর্মীরা এইসব “অনলাইন কুতুবদের” অনুসরণ করছে, যারা নিজেরাই রাষ্ট্রচিন্তায় দুর্বল।

তারেক রহমানের গঠনমূলক ভূমিকা না থাকার বিষয়েও তিনি উদ্বেগ জানান। “একজন নেতার উচিত নিজের একটা কর্মজীবন থাকা, যাতে দলীয় কর্মীরা দেখেন—নেতা কেবল রাজনীতি নয়, জীবনেও কিছু করছেন।”

পিনাকি বলেন, “আপনারা রাষ্ট্রচিন্তা করেন না। ৩১ দফা প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সেখানে কোনো গভীরতা নেই। চিন্তার দেউলিয়াত্ব স্পষ্ট।” তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এসে শুধু আওয়ামী লীগের জায়গা নিতে চাইলে, তারা একই কাঠামোর ফাঁদে আটকে পড়বে।

নবজন্মের জন্য পিনাকির প্রস্তাবিত করণীয়:

নেতৃত্বে কর্মজীবন ও দক্ষতার মূল্যায়ন

তৃণমূল কর্মীদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা

দলীয় কাঠামোর সংস্কার ও প্রশিক্ষণ

অনলাইন নেতাদের যাচাই ও দায়িত্ব নির্ধারণ

রাষ্ট্রচিন্তার বিকাশ ও বিকল্প নীতির উন্নয়ন

গঠনমূলক সমালোচনা গ্রহণ করার মানসিকতা

“একটি রাজনৈতিক দলের ধ্বংস মানে শুধু একটি সংগঠনের বিলুপ্তি নয়—এটি গোটা রাষ্ট্রের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমতার উপর আঘাত,” বলেন তিনি।

বিএনপি কি এই আত্মসমালোচনার পথ বেছে নিয়ে নিজেকে রূপান্তরিত করতে পারবে? নাকি পুরনো ধাঁচে ধ্বংসের দিকেই এগিয়ে যাবে? বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই প্রশ্ন এখন অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে