ঢাকা, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

ট্রাম্প-নেতানিয়াহুকে কিনতে পারেন যিনি 

২০২৫ জুলাই ০২ ১১:২৩:৩৮
ট্রাম্প-নেতানিয়াহুকে কিনতে পারেন যিনি 

নিজস্ব প্রতিবেদক: গোটা মুসলিম বিশ্ব যখন নির্যাতন ও দমননীতির ছায়ায় নতজানু, তখন ইরানের মিম্বার থেকে ধ্বনিত হয় প্রতিরোধের আহ্বান। আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি—ইরানের সর্বোচ্চ নেতা—নিজ ভাষণে গাজার মুসলমানদের পক্ষে উচ্চারণ করেন সোচ্চার বক্তব্য, যেখানে আরব বিশ্বের অনেক শাসক থাকেন নীরব ও নিষ্ক্রিয়।

১৯৮৯ সাল থেকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ক্ষমতায় আসীন খামেনি। ব্যক্তি জীবনে পরিচিত সাদামাটা, ধর্মপ্রাণ ও স্বল্প ব্যয়ী জীবনধারার জন্য। তবে, বাস্তবতা বলছে—এই সাদামাটা আলেমের অধীনে রয়েছে বিপুল ধনসম্পদের পাহাড়, যা দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে একাধিকবার "কেনা" সম্ভব বলে অনেকেই মন্তব্য করছেন।

২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়—খামেনির নিয়ন্ত্রণাধীন সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র ও বিশ্লেষকদের মতে, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে এই পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।

তবে ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব অনুযায়ী, ওয়েবসাইট Celebrity Net Worth দাবি করছে, খামেনির নামে মাত্র ৫০ হাজার ডলার রয়েছে। ফলে প্রশ্ন থেকে যায়—এই বিপুল সম্পদের মালিকানা ব্যক্তিগত না প্রতিষ্ঠানিক?

ইরানি বিপ্লবের পর বাজেয়াপ্ত হওয়া বিপুল পরিমাণ সম্পদের ব্যবস্থাপনার জন্য গঠিত হয় একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠান—সেতাদ (Setad)। এটির আনুষ্ঠানিক দায়িত্বে রয়েছেন আয়াতুল্লাহ খামেনি। ধারণা করা হয়, এই প্রতিষ্ঠানটি থেকেই মূলত খামেনির নিয়ন্ত্রণাধীন অর্থনৈতিক শক্তির উত্স।

পশ্চিমা রিপোর্ট অনুযায়ী, সেতাদের আয় সরকারি বাজেটের বাইরে, এর ওপর সংসদ বা রাষ্ট্রপতির কোনো কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নেই। এমনকি, বিরোধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেও এই সম্পদের পরিমাণ বাড়ানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

খামেনির নিজস্ব জীবনচর্চায় রাজকীয়তার ছিটেফোঁটাও খুঁজে পাওয়া যায় না। সাধারণ আলেমের মতো সাদাসিধে পোশাক পরিধান, কোনো ব্যক্তিগত প্রাসাদ বা বিলাসবহুল বাহন নেই। দেশ-বিদেশে নেই ব্যক্তিগত বিমান বা প্রাসাদসমূহ, যা আধুনিক রাজনীতিকদের মধ্যে সাধারণভাবে দেখা যায়।

পশ্চিমাদের মতে, খামেনির প্রভাব ও সম্পদ বিশ্ব রাজনীতিতে বিশাল ভূমিকা রাখছে, বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ভূমিকায়। অন্যদিকে, ইরানিদের অনেকের চোখে তিনি কেবল একজন আত্মত্যাগী ধর্মীয় নেতা, যিনি ইসলামের রক্ষায় আজও প্রস্তুত।

তবে প্রশ্ন থেকে যায়—এই বিপুল সম্পদের প্রকৃত মালিক কে? কতটা ব্যক্তিগত, আর কতটা প্রাতিষ্ঠানিক? তথ্যের স্বচ্ছতা না থাকায়, খামেনিকে ঘিরে বিতর্ক থামছে না, বরং আরও গভীর হচ্ছে।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে