ঢাকা, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

যে কোনো মুহূর্তে হোটেল-মোটেল বন্ধের শঙ্কা

২০২৫ এপ্রিল ১১ ১১:৫২:৪১
যে কোনো মুহূর্তে হোটেল-মোটেল বন্ধের শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ভ্যালিতে দেখা দিয়েছে তীব্র খাবার পানির সংকট। পাহাড়ি এই জনপ্রিয় পর্যটন এলাকায় বৃষ্টি না হওয়ায় শুকিয়ে গেছে ঝিরি ও ঝরনার পানি—যেগুলো এখানকার প্রধান পানির উৎস। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে হোটেল, মোটেল ও কটেজগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরাও পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

প্রাকৃতিক উৎসের ওপর নির্ভরশীল সাজেকের মানুষজন ঝিরি-ঝরনার পানি দিয়েই নিজেদের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করে থাকেন। বিকল্প কোনো পানি সরবরাহ ব্যবস্থা না থাকায় বর্তমানে এই সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, বছরের পর বছর ধরে পাহাড় কেটে বন উজাড় করে জুম চাষ ও অবাধ হোটেল নির্মাণের কারণে পরিবেশের ওপর চলছে বিরূপ প্রভাব। এরই ফলশ্রুতিতে আজ এ সংকট।

পরিবেশবিদদের মতে, ঝিরি-ঝরনা শুকিয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে অপরিকল্পিত উন্নয়ন এবং বন ধ্বংসকেই দায়ী করা হচ্ছে। সাজেকের পরিবেশকে ধ্বংস করে অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হোটেল ও কটেজগুলো জীববৈচিত্র্য এবং পানির ভারসাম্য নষ্ট করছে।

পানি পরিবহনকারী গাড়ির লাইনম্যান বিনিময় চাকমা জানান, বৃষ্টির অভাবে বর্তমানে সাজেকের ঝিরি-ঝরনাগুলো পুরোপুরি শুকিয়ে গেছে। ফলে পানির তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। পানি মেটাতে দূরের মাচালং এলাকার কাচালং নদী থেকে ২১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পানি আনা হচ্ছে। প্রতি দেড় হাজার লিটার পানি আনতে পরিবহন খরচ পড়ছে প্রায় আড়াই হাজার টাকা। তার মতে, এভাবে দীর্ঘদিন পানির চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। সংকট চলতে থাকলে পুরো এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।

এদিকে, পরিবেশ আন্দোলনকর্মী ও কাচালং সরকারি কলেজের শিক্ষক আবুল ফজল বলেন, “জুম চাষের নামে প্রতিদিন সাজেকে পাহাড় কেটে বন ধ্বংস করা হচ্ছে, আগুন লাগানো হচ্ছে। এতে প্রাকৃতিক জলাধার ধ্বংস হচ্ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য ভয়ঙ্কর বার্তা বহন করছে।” তিনি অবিলম্বে পরিবেশ রক্ষায় সরকারের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার বলেন, “সাজেকে পানি সংকটের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিকল্প পানির উৎস খুঁজতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে দ্রুত উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।”

পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে সাজেকের পর্যটনশিল্প যেমন হুমকিতে পড়বে, তেমনি পরিবেশগত বিপর্যয়ও তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরিফ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে