ঢাকা, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

শেখ হাসিনাকে নিয়ে মহাসংকটে ভারত- এএফপির বিশ্লেষণ

২০২৪ আগস্ট ১১ ০৬:১৯:৩২
শেখ হাসিনাকে নিয়ে মহাসংকটে ভারত- এএফপির বিশ্লেষণ

নিজস্ব প্রতিবেক : স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনে বাংলাদেশে উৎসব দেখা দিয়েছে। তবে এই ঘটনা প্রতিবেশী ভারতে শঙ্কার তৈরি করেছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, প্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে মোকাবিলা করতে এবং ইসলামঘেঁষা বিকল্পকে রোধ করতে শেখ হাসিনাকে সমর্থন করেছিল নয়াদিল্লি। এটি এখন আঞ্চলিক শক্তিধর দেশটির জন্য একটি কূটনৈতিক সংকট তৈরি করেছে।

শনিবার এএফপি বিশ্লেষণে বলেছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার ক্ষমতা গ্রহণের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে ‘শুভেচ্ছা’ জানিয়ে বলেছেন, নয়াদিল্লি ঢাকার সঙ্গে কাজ করতে ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।

এদিকে, চীনও ঢাকার নতুন কর্তৃপক্ষকে স্বাগত জানাতে তৎপর ছিল এবং বলেছে, বেইজিং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ‘উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়’।

তবে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের বিশ্লেষক থমাস কিন বলেছেন, ‘বাংলাদেশিদের দৃষ্টিকোণ থেকে ভারত কয়েক বছর ধরে ভুল পথে রয়েছে। ভারত সরকার ঢাকায় একেবারেই কোনো পরিবর্তন দেখতে চায়নি এবং বছরের পর বছর ধরে এটা পরিষ্কার করে দিয়েছিল, তারা হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো বিকল্প দেখছে না।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনা বেইজিংয়ের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রেখেই নয়াদিল্লির সমর্থন পেয়েছেন এবং উভয় দেশের সঙ্গে সূক্ষ্ম ভারসাম্য রক্ষা করেছেন।

বাংলাদেশের বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে সাধারণ হুমকি হিসেবে দেখেছিল নয়াদিল্লি। এই সুযোগে শেখ হাসিনা তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্মমভাবে দমন করেছেন।

অপরদিকে ওয়াশিংটনভিত্তিক উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, ‘নয়াদিল্লি মনে করে, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিকল্প শক্তি ভারতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। নয়াদিল্লির দৃষ্টিতে বিএনপি এবং তার মিত্ররা বিপজ্জনক ইসলামী শক্তি, যা ভারতীয় স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’

এএফপি বলছে, শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এটা নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আর ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, বাংলাদেশ নিয়ে নয়াদিল্লি এখন ‘প্রবল কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের’ মুখোমুখি হচ্ছে।

ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ‘নয়াদিল্লিকে অবশ্যই ক্ষয়ক্ষতি সীমিত করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে এবং সম্পর্কের উচ্চ অংশীদারি নিশ্চিত করতে হবে। এতে কিছু স্বল্পমেয়াদি বিপত্তি দেখা দিতে পারে।’

তবে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশের নতুন নেতা ড. ইউনূস বন্ধুত্বের বার্তা দিয়েছেন। শপথ নেওয়ার আগে ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিনে তিনি লিখেছেন, ‘যদিও কিছু দেশ, যেমন– ভারত, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করেছে এবং এর ফলে বাংলাদেশি জনগণের শত্রুতা অর্জন করেছে। তবে এই ধরনের তিক্ততা সারানোর অনেক সুযোগ থাকবে।’

এদিকে বিবিসি বাংলার শুভজ্যোতি ঘোষ লিখেছেন, ৫ আগস্ট বিকেলে ঢাকায় ভারতের সাবেক এক হাইকমিশনারের কাছে তিনি জানতে চেয়েছিলেন, শেখ হাসিনার ঢাকা ছাড়ার বিষয়ে তিনি জানেন কিনা? ওই কূটনীতিক জবাব দেন, ‘তিনি যেখানে খুশি যান, ভারতে না এলেই হলো।’

বিবিস বরাতে দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্ক আইডিএসএর সিনিয়র ফেলো স্মৃতি পট্টনায়কও বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, শেখ হাসিনা যদি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় চান, তাহলেও উচিত হবে না সেটা মঞ্জুর করা।’

তাঁর যুক্তি, বাংলাদেশে সম্প্রতি সরকারের বিরুদ্ধে যে তীব্র আন্দোলন হয়েছে, তাতে ভারত বিরোধিতাও যুক্ত ছিল। ফলে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিলে বাংলাদেশের মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে।

এএসএম/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে