ডিবি অফিসের ভয়ংকর নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন জবির সমন্বয়ক
নিজস্ব প্রতিবেদক : কোটা সংস্কার আন্দোলনে আটক হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখার সমন্বয়ক নূর নবী বলেন, ‘ওরা আমাকে ১৫ জুলাই থেকে ট্র্যাক করছিল। আমি আমার মায়ের কাছ থেকে ১৭ তারিখ বিদায় নিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমি মরে গেলে কেঁদো না। আর বেঁচে থাকলে বিকেলে ফোন দেব। এই ভয়েস রেকর্ডটা তাঁরা শুনিয়ে শুনিয়ে মারত।’
জামিনে মুক্ত হয়ে আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সাংবাদিকদের কাছে নির্যাতনের বর্ণনা দেন তিনি।
আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, ‘আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় দফা দাবি নিয়ে এসেছিলাম। এডিসি বদরুল আমাকে ডেকে আলাদা করেন। ডিবির পাঁচটা গাড়ি এসেছিল। তারা শুধু আমাকে এখান থেকে উঠিয়ে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। গাড়িতে উঠিয়েই আমাকে মার শুরু করে। যখন আমাকে ডিবি অফিসে নেওয়া হয়, তখন ভেবেছিলাম গাড়িতে যে টর্চার করা হয়েছে এর চেয়ে বেশি টর্চার আর হতে পারে না। কিন্তু এর চেয়ে পাশবিক নির্যাতন যে তারা করতে পারে—তা আমার কল্পনায় ছিল না!’
ডিবির নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে নূর নবী লেন, ‘ডিবিতে নেওয়ার পর আমাকে প্রস্রাব করতে বলে। প্রস্রাব করতেই বৈদ্যুতিক শক খেয়েছি আমি। দাঁড়ানো অবস্থা থেকে আমি পড়ে গেছি। হাতে একটা ইনজেকশন দিয়েছে আমার। ওরা আমার অণ্ডকোষে জোরে জোরে আঘাত করেছে। বারবার আমার মনে হচ্ছিল, আমি মরে যাচ্ছি না কেন! তারা বারবার আমার কাছে সমন্বয়কদের নাম জানতে চাচ্ছিল। তারা আমার কাছ থেকে বিএনসিসির কার্ড পায়। পরে নিজেদের মধ্যে বলে, “সে এত শক্ত কেন? এ জঙ্গি, জঙ্গি ট্রেনিং নিয়েছে।” আমি এটা বলতে পারিনি যে, ‘‘আমি সেনা মহড়ায় অংশ নিয়েছি, আমি অন্তত জঙ্গি হতে পারি না।”’
নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে নূর নবী আরও বলেন, ‘তারা আমাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে একটি চেয়ারে বসিয়ে আমার সব কাপড়চোপড় খুলে ফেলে। সেই চেয়ারে বসিয়ে গালি দিচ্ছিল। তখন পাশের অন্যদের কথা শুনে বুঝতে পারি যে ডিসি আসছে। তখন আমাকে চেয়ার থেকে উঠিয়ে নিচে শোয়ায়।
চিৎ করে শুইয়ে তারা আমাকে বলে, ‘‘তোর এক হাত তো ছাত্রলীগ ভেঙেছে, আরেক হাত আমরা ভেঙে দেব।” রুটি যেভাবে বেলে, ঠিক সেভাবে আমার হাঁটু থেকে নাভি পর্যন্ত লাঠি দিয়ে চাপ দেয়। আমাকে কান্না করতে পর্যন্ত দেয়নি। আমি ভাবছিলাম যে এরা মানুষ না।
ওরা মেরে মেরে আমাকে বারবার বলছিল, ‘‘তোর তথ্য আমরা অনেক দিন শুনেছি, ক্যাম্পাস থেকে কয়েকজন তোর কথা আগেই বলেছে। তুই জঙ্গি, তুই শিবির।” ভেবেছিলাম আমার পায়ের অংশ পচে যাবে বা কেটে ফেলতে হবে!”’
নূর নবী বলেন, ‘আমার হাত ভেঙে গেছিল। হাড় ভেঙে টুকরা–টুকরা হয়ে গিয়েছিল। কোনো রকম এক্স–রে ছাড়াই খুব বাজেভাবে অপারেশন করা হয়েছিল। উলঙ্গ অবস্থায় আমাকে ডিবির রুমে নেওয়া হয়েছে, আমার চোখ খুলে দেওয়া হয়েছে। সাড়ে ৪টায় (বিকেল) ডিবির হারুন আসেন। এসে বলেন, ‘‘একে বাঁচিয়ে রাখছ কেন? একে ক্রসফায়ার দে।”
এরপর ডিবির লালবাগ শাখা আমাকে ধরে নিয়ে যায়। আমার দুই হাঁটু পিটিয়ে ওরা ভেঙে ফেলে। ওই হাঁটুর ওপর তারা আমাকে বসায়ে রাখে। আমি ভাবছি আমাকে মেরেই ফেলবে। তারা আমার মাথায় বন্দুক তাক করে বলে, “একে মেরেই ফেলব। বাংলাদেশের যত সমস্যার মূল এই ছাত্ররা। এরা শিবির, এরা সাধারণ ছাত্রদের উসকে দিয়েছে।” আমি ধরেই নিয়েছিলাম, আমাকে মেরেই ফেলবে।”’
এরপর কারাগারে নির্মম অত্যাচারের বর্ণনা দেন নূর নবী। তিনি বলেন, ‘কারাগারে আমি অনেক গার্ডকে কান্না করে বলেছি, আমাকে হাসপাতালে নেন। আমাকে নেয়নি। আমি এক প্যান্টে আট দিন পড়ে ছিলাম। আমাকে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। আমাকে আমদানিতে (কারাগারের আমদানি কক্ষ) পাঠায় দিছে। আমি একদিক হয়েও শুয়ে থাকতে পারতাম না। আমি অনেক চেষ্টা করেছি ডাক্তারের কাছে যাওয়ার, পারি নাই। শেষে ২৭ তারিখে আমাকে এমসিতে নেওয়া হয়। ডাক্তার দেখে বলে ওকে ইমার্জেন্সি হাসপাতালে নিতে হবে। ঢাকা মেডিকেল বা পঙ্গুতে রেফার করে। তবুও আমাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়নি।’
নূর নবী আরও বলেন, ‘কারাগারে যখন অন্য ছাত্ররা জানতে পারে, আমি সমন্বয়ক। তখন তারা আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে। আমি একটু সাহস পাই। পানিতে মরিচ দিয়ে রাখা হতো, যেন পানি খেতে না পারি, গোসল করতে না পারি। স্যারেরা যখন দেখা করতে আসেন, তখন আমাকে এক পর্যায়ে বলা হয়, আমাকে টাওয়ারে আলাদা এক ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তখন আমি সবাইকে আমার কাছে আসতে বারণ করি। আমি নিজেকে একঘরে করে রাখি।’
এরপর সাজানো মামলা দেওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন নূর নবী। তিনি অবাক হয়ে বলেন, ‘তারা আমাকে বলে, ‘‘তোকে ক্রসফায়ার দেব। তুই রেডি হয়ে নে।” আমরা ছয়জন ছিলাম মোট। রমনায় নিয়ে আমাদের চোখ খুলে দেওয়া হলো। আমার হাতে পেট্রলবোমা ধরায়ে দিল। ভিডিও করা শুরু করল। তারা যে মামলা সাজাবে আমি ভাবতেও পারিনি। দেশের ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ এমন পর্যায়ে যাবে ভাবিনি। ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ দেশের মানুষের আস্থার জায়গা হওয়া উচিত ছিল। যা–ই হোক, তারা আমাকে মেরে ফেলেনি। আমি বেঁচে ফিরেছি। স্বাধীন দেশে আবার ফিরতে পেরেছি। এটা আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা।’’’
মিজান/
পাঠকের মতামত:
- অবশেষে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার কারণ জানাল ভারত
- বিএনপির ফাঁকা আসনে লড়বেন জোটের যেসব হেভিওয়েটরা
- ফেসবুকে হাদিকে নিয়ে মন্তব্য, মেডিকেল অধ্যাপককে অব্যাহতি
- মার্কিন বাজারে পোশাক রপ্তানিতে চাপে থাকলেও প্রবৃদ্ধির আশা
- ট্রাভেল পাস হাতে পেয়েছেন তারেক রহমান
- ব্লুমবার্গ সূচকে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের ১৬ কোম্পানি
- বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচ শেষ-দেখে নিন ফলাফল
- খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে যা বললেন ডা. জাহিদ
- ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি ম্যাচ: সরাসরি দেখুন এখানে
- দেশে ফিরেছে শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ
- শহীদ হাদির জানাজা আগামীকাল জোহরের পর
- হাদি হত্যার প্রতিবাদ শাহবাগে শিক্ষার্থী-জনতার ঢল
- 'ছায়ানটে হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে'
- বাংলাদেশে নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিল যুক্তরাষ্ট্র
- দুই পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ
- সহিংসতায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: সরকারের বিবৃতি
- ছাত্র-জনতার অবরোধে অচল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
- কর্মসূচি বাতিল, স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক বিএনপির
- ডিভিডেন্ড অনুমোদন করেছে বিডিকম অনলাইন
- ডিভিডেন্ড অনুমোদন করেছে এনার্জিপ্যাক
- ইউক্রেনকে আরও ১০৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিচ্ছে ইইউ
- বিকেলে দেশে পৌঁছাবে শহীদ হাদির মরদেহ
- আল-আরাফাহ ব্যাংকের নতুন এমডি রাফাত উল্লাহ খান
- ওসমান হাদির মৃত্যুতে মার্কিন দূতাবাসের শোক
- তালিকাভুক্ত কোম্পানির ১৩ লাখ ৭৫ হাজার শেয়ার হস্তান্তর
- ঘোড়াশাল আইসিডি প্রকল্পে শাশা ডেনিমসের অংশগ্রহণ
- জমাদিউস সানির চতুর্থ জুমা আজ, ইমান ও চরিত্র পর্যালোচনার আহ্বান
- বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবনে আকস্মিক বজ্রপাত
- সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানি
- সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি
- সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি
- ঢাবি 'ক' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত
- রাগ সামলাতে না পারলেই বিপদ, জানুন শান্ত থাকার কৌশল
- যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা: তারকাসহ নি-হ-ত ৭
- পরিস্থিতি বিবেচনায় দুই বড় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত
- এবার আরেক জুলাই যোদ্ধাকে হ-ত্যা-র হুমকি
- শহীদ হাদির মৃত্যু নিয়ে সহিংসতা, মির্জা ফখরুলের উদ্বেগ
- হাদির হ-ত্যা-র প্রতিবাদে শাহবাগে গণজমায়েত
- প্রথম আলো–ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, আতঙ্কে সাংবাদিকরা
- ওসমান হাদির মৃত্যুতে শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক
- হোস্টেল থেকে এনসিপি নেত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
- হাদির রক্তে ছিল প্রতিবাদের তেজ: জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা
- শরিফ ওসমান হাদি আর নেই
- বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় ডিএসইতে বিশেষ ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক
- রবির লক্ষ্য ডিজিটাল ব্যাংকিং: দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে নতুন বিপ্লব
- শেয়ারবাজার শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত
- ডিএসইর প্রথম নারী এমডি নুজহাত আনোয়ার
- সিঙ্গাপুরেই অস্ত্রোপচারের অনুমতি দিয়েছে হাদির পরিবার
- রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তায় ইসির কড়া নির্দেশনা
- ২০ কোটি টাকার বেশি ঋণ নতুন করে যাচাই করা হবে: গভর্নর
- চড়া সুদে আমানত টানবে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক
- দুই বছরের মধ্যেই কেনিয়ায় মুনাফার মুখ দেখল স্কয়ার ফার্মা
- শেয়ারবাজারে নতুন দিগন্ত: প্রেফারেন্স শেয়ারের বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু
- ‘এ’ থেকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে নামল তালিকাভুক্ত কোম্পানি
- তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানির অস্তিত্ব নিয়ে শঙ্কায় নিরীক্ষক
- শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে ১০ হাজার কোটি টাকার ইকুইটি ফান্ডের প্রস্তাব
- বিএসইসির বিশেষ সুবিধা পেল শেয়ারবাজারের ৭ প্রতিষ্ঠান
- ৫ কোম্পানিতে বেড়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের বিনিয়োগ
- ডিএসইর কাছে ৭ হাজার বিনিয়োগকারীর ৬৮ কোটি টাকা দাবি
- শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ণ ১৫ সংবাদ
- ২৭ বীমা কোম্পানির হিসাব নিয়ে বিএসইসি’র লাল সংকেত
- বিনিয়োগকারীদের শুন্য ডিভিডেন্ড দিল তালিকাভুক্ত ৫৭ কোম্পানি
- মার্জিন রুল চ্যালেঞ্জ: দ্বিতীয় রিট আবেদন খারিজ, শুনানি চলবে প্রথমটির
- কারখানা বন্ধ, প্রতিবেদন নেই ৪ বছর; তবু শেয়ারদর দ্বিগুণ
- যে ১১ পেশায় যুক্ত হতে পারবে না এমপিও শিক্ষকরা










.jpg&w=50&h=35)



