ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

রেমিট্যান্স আহরণে ২০২৩ সালে বিশ্বে ৭ম স্থানে বাংলাদেশ

২০২৪ জুন ২৯ ১০:৪৫:১৮
রেমিট্যান্স আহরণে ২০২৩ সালে বিশ্বে ৭ম স্থানে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৩ সালে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২২.১৬৮ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২১ সালে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পেয়েছিল, যার পরিমাণ ছিল ২২.২০৬ বিলিয়ন ডলার। এরপর ২০২২ সালে তা ৩.১৬ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ২১.৫০৫ বিলিয়ন ডলার। তবে গত বছর ২০২৩ সালে তা আবার ৩.০৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মাধ্যমে ২০২৩ সালে বিশ্বে রেমিট্যান্স আহরণে ৭ম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্স নিয়ে কাজ করা ‘দ্য গ্লোবাল নলেজ পার্টনারশিপ অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ তথা নোমাদ-এর সাম্প্রতিক প্রকাশিত প্রতিবেদন ও ডেটাবেজ তথ্যে দেখা যায়, কয়েক বছর ধরে বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্স প্রবাহে উচ্চ প্রবৃদ্ধির গতি ২০২৩ সালে শ্লথ হয়ে গেছে। এই সময় বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্স প্রবাহ নামমাত্র বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে রেমিট্যান্স আহরণকারী দেশগুলোর ওপর। অনেক দেশে রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ছিল।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে দেখা যায়, টানা কয়েক বছর ধরেই রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষে রয়েছে ভারত। গত বছর দেশটিতে রেমিট্যান্স এসেছে ১১৯.৫২৬ বিলিয়ন ডলার। ২০২২ সালে এর পরিমাণ ছিল ১১১.২২২ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ গত বছর ভারতে প্রায় সাড়ে শতাংশ রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা মেক্সিকোর রেমিট্যান্স প্রবাহ গত বছর বৃদ্ধি পেয়েছে ৭.২২ শতাংশ। গত বছর দেশটি রেমিট্যান্স পেয়েছে ৬৬.২৩৯ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালে ছিল ৬১.৪৫৮ বিলিয়ন ডলার।

তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা চীনের রেমিট্যান্স প্রবাহ কয়েক বছর ধরেই হ্রাস পাচ্ছে। ২০২৩ সালে চীন রেমিট্যান্স পেয়েছে ৪৯.৫০ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালে ছিল ৫১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ দেশটিতে গত বছর রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রায় তিন শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। চীন ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ ৬৮.৪০ বিলিয়ন রেমিট্যান্স পায়। এরপর থেকে প্রতি বছর কমছে চীনের রেমিট্যান্স।

চতুর্থ স্থানে থাকা ফিলিপাইন্স ২০২৩ সালে রেমিট্যান্স পেয়েছে ৩৯.০৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালে ছিল ৩৮.০৪৯ বিলিয়ন ডলার। পঞ্চম স্থানে থাকা ফ্রান্স গত বছর রেমিট্যান্স পেয়েছে ৩৪.৭৮৬ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালে ছিল ৩৩.৯২৮ বিলিয়ন ডলার। এই দুই দেশে গত বছর রেমিট্যান্স বেড়েছে যথাক্রমে ২.৭৫ ও ২.৫২ শতাংশ।

রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষ দেশের তালিকায় এরপর রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ পাকিস্তান। অর্থনৈতিক মন্দায় আক্রান্ত দেশটি গত বছর ২৬.৫৫৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, ২০২২ সালে যা ছিল ৩০.১৭৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ গত বছর পাকিস্তানে রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রায় ১২ শতাংশ। দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পেয়েছিল ২০২১ সালে, যার পরিমাণ ছিল ৩১.৩১২ বিলিয়ন ডলার। এরপর টানা দুই বছর কমল পাকিস্তানের রেমিট্যান্স প্রবাহ। মিট্যান্স আহরণে বিশ্বে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। দেশটিতে প্রথম রেমিট্যান্স প্রবাহ পাঁচ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায় ২০০৬ সালে। এর তিন বছরের মাথায় ২০০৯ সালে তা ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। তবে রেমিট্যান্স প্রবাহ ১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়ানোর জন্য ছয় বছর অপেক্ষা করতে হয়। ২০১৫ সালে রেমিট্যান্স প্রবাহ দাঁড়ায় ১৫.২৯৬ বিলিয়ন ডলার। তবে পরের দুই বছর (২০১৬ ও ২০১৭ সাল) তা আবার ১৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে যায়।

২০১৮ সালে বাংলাদেশে আবারও রেমিট্যান্স প্রবাহ ১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮.৩৬৪ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালে তা ২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ওই বছর রেমিট্যান্স এসেছিল ২১.৭৫২ বিলিয়ন ডলার। মূলত করোনার কারণে অনেক প্রবাসী তাদের সঞ্চিত অর্থ দেশে পাঠাতে শুরু করায় পরপর দুই বছর উচ্চ রেমিট্যান্স আসে। এতে ২০২১ সালে তা ২২ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়।

২০২৩ সালে রেমিট্যান্স আহরণে বাংলাদেশের পরের স্থানে ছিল জার্মানি। দেশটি ২০২৩ সালে রেমিট্যান্স পেয়েছে ২০.৪৩১ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালে ছিল ১৯.০০৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ গত বছর জার্মানির রেমিট্যান্স প্রবাহ সাড়ে সাত শতাংশ বেড়েছে।

তালিকায় পরের দেশগুলোর রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে, যার মধ্যে তিনটি দেশের রেমিট্যান্স রয়েছে ১৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। এগুলোর মধ্যে গুয়েতেমালা গত বছর রেমিট্যান্স পেয়েছে ১৯.৯৭৮ বিলিয়ন ডলার, নাইজেরিয়া ১৯.৫৫০ বিলিয়ন ডলার ও মিসর ১৯.৫৩২ বিলিয়ন ডলার। তালিকায় ১২তম স্থানে থাকা ইউক্রেন রেমিট্যান্স ২০২৩ সালে পেয়েছে ১৫.১২৩ বিলিয়ন ডলার।

এর বাইরে বেলজিয়াম ১৪.৪৭৮ বিলিয়ন ডলার, ইন্দোনেশিয়া ১৪.৪৬৭ বিলিয়ন, ভিয়েতনাম ১৪ বিলিয়ন, উজবেকিস্তান ১৩.৯২৫ বিলিয়ন, ইতালি ১২.০৫৩ বিলিয়ন, মরক্কো ১১.৭৫০ বিলিয়ন, পর্তুগাল ১১.১৭৯ বিলিয়ন, নেপাল ১০.৮৬৭ বিলিয়ন, ডমিনিকান রিপাবলিক ১০.৬১৯ বিলিয়ন ও কলাম্বিয়া ১০.১১২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে। বাকি দেশগুলোয় রেমিট্যান্স প্রবাহ ১০ বিলিয়ন ডলারেরও নিচে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্স প্রবাহের পরিমাণ ছিল ৮৫৭.৩০৬ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালে ছিল ৮৪২.৫০৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ গত বছর বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্স প্রবাহ মাত্র ০.১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ ২০২১ সালে তা বৃদ্ধি পেয়েছিল এক শতাংশে বেশি। আর ২০২২ সালে তা বেড়েছিল ০.৬২ শতাংশ।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে