ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

টুরিস্ট ভিসায় বিদেশ গিয়ে বিপাকে পড়ছেন তরুণরা

২০২৪ মে ১৮ ১৪:১৭:৪২
টুরিস্ট ভিসায় বিদেশ গিয়ে বিপাকে পড়ছেন তরুণরা

ডেস্ক রিপোর্ট : অভাবের সংসারে সুখ আনতে ঋণ করে বা জমি বিক্রি করে অসহায় তরুণরা বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন। কিছু অসৎ রিক্রুটিং এজেন্ট ও দালাদের ফাঁদে পা দিয়ে তাদেরকে কাজে লোভ দেখিয়ে টুরিষ্ট ভিজায় বিদেশে নিচ্ছেন। বিদেশে গিয়ে এসব তরুণা নিদারুণ বিপাকে পড়ছেন।

কিন্তু তারপরও বাংলাদেশ থেকে ট্যুরিস্ট ভিসায় বিভিন্ন দেশে কর্মী যাওয়ার ঘটনা দিন দিনই বাড়ছে। কয়েকটি চক্র মিলে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। তবে এই কায়দায় বিদেশ গিয়ে কেউ কেউ কাজ পাচ্ছেন এমন খবরও রয়েছে।

যারা কাজ পাচ্ছেন, তারা হয়ে উঠছেন রিক্রুটিং এজেন্সি বা দালালদের জন্য উদাহরণ কিংবা সাক্ষী। অন্যদের বিদেশ যাওয়ার হাতছানি দেয়ার ক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্সি বা দালালরা তাদের উদাহরণ সামনে আনেন। ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশকে ম্যানেজ করে কৌশলে কাজের খোঁজে তরুণদের বিদেশ পাঠাচ্ছে বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো ভিজিট বা ট্যুরিস্ট ভিসায় দুবাই, মালয়েশিয়া, মিশর, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, কিরগিজস্তান, কাজাখস্তানে কর্মী পাঠাচ্ছে। এজন্য জনপ্রতি ভিসার জন্য ৪৫-৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। বিমানের টিকিটের জন্য নিচ্ছেন ৫০ হাজার টাকা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশকে 'ম্যানেজ' করতে আরও ২০-৪০ হাজার টাকা নেওয়া হয়।

বিমানবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, আম, জাম, লিচু, কলা ইত্যাদি সিগন্যাল দিয়ে ইমিগ্রেশন পার হচ্ছেন। অনেক এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষও এর সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। আর দুবাই যাওয়ার জন্য 'নোব্যাক ভিসা' অনেকের কাছেই জনপ্রিয়। চাকরি পাওয়া অনিশ্চিত জেনেও ঝুঁকি নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন তারা। দুবাইয়ে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ বন্ধ থাকায় অনেকেই ভিজিট ও ট্যুরিস্ট ভিসায় সেখানে কাজ করার সুযোগ খুঁজছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার এই পথে ইউরোপে যাওয়ার পথ খুঁজে পান।

ট্যুরিস্ট ভিসায় বিদেশে যেতে হলে ফিরতি টিকিট লাগে। এই কারণে এয়ারলাইন্সগুলো ডামি টিকিট দেয়। একবার তাদের লোকেরা কাঙ্ক্ষিত দেশে পৌঁছে গেলে, টিকিটের অর্ডার বাতিল হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়ায় যাত্রী নিজেও জানেন না তিনি কী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবেন ইমিগ্রেশন। বিমানবন্দরে নেওয়ার পর গেট নম্বর দেওয়া হয়। আর আম, জাম, লিচু বা কলাকে সংকেত বলা হয়। সিগন্যাল মিলে গেলে পুলিশ ইমিগ্রেশন পাস করবে।

সিগন্যাল শুনে ইমিগ্রেশন পুলিশ বুঝতে পারে ওই ব্যক্তি একটি রিক্রুটিং এজেন্সির যাত্রী। আর দুবাই যাওয়ার পর মানুষ সেখানে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকে। যাত্রীকে বিমানবন্দর থেকে হোটেল বা বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। কেউ কেউ ওয়ার্ক পারমিট পান, অনেকে পান না। যারা কাজ পায় না তারা অবৈধভাবে কাজ করে।

এছাড়া অনেকেই বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে আউটপাসের জন্য আবেদন করে দেশে ফিরে আসেন। শরীয়তপুরের আবদুর রহমান, মাদারীপুরের সোহরাব হোসেন, কুমিল্লা বুড়িচংয়ের শাহাদাত মিয়া, পিরোজপুরের আবদুর রশিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় ট্যুরিস্ট ভিসায় বিদেশ যাওয়ার দুর্ভোগের গল্প।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক জানান, ভিসার ধরন ও যাত্রীর গতিবিধি দেখে ইমিগ্রেশন পুলিশ বুঝতে পারে কে কর্মী এবং কারা বেড়াতে যাচ্ছে। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে ফেরত দেয়। এই অবস্থায় বিভ্রান্তি এড়াতে চুক্তির আওতায় কোড ওয়ার্ড ব্যবহার করে কাজ করছে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো।

শেয়ারনিউজ, ১৮ মে ২০২৪

পাঠকের মতামত:

প্রবাস এর সর্বশেষ খবর

প্রবাস - এর সব খবর



রে