সারা বিশ্ব থেকে আমেরিকার শ্রমিক দিবস কেন আলাদা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আমেরিকার শিকাগোতে শ্রমিক আন্দোলন থেকে মে দিবস শ্রম দিবস হিসেবে শুরু হলেও দেশটিতে এই দিনটি পালন করা হয় না। আশ্চর্যজনক মনে হলেও সত্য যে বিশ্বের অন্তত ৮৮টি দেশ ১লা মে শ্রমিক দিবস উদযাপন করে। কিন্তু আমেরিকায় এটি সেপ্টেম্বরের প্রথম সোমবার পালিত হয়। প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড ১৮৯৪ সালে সেপ্টেম্বরের প্রথম সোমবার শ্রম দিবসকে সরকারী ছুটি হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু তিনি কেন পয়লা মের পরিবর্তে শ্রমিক দিবসকে টেনে সেপ্টেম্বরে নিয়ে গিয়েছিলেন, তা জানার আগে পয়লা মে বা মে দিবসের ঘটনাটি আমাদের জানা দরকার।
কী ঘটেছিল ০১ মে–তে
শ্রমিকদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৬ ঘণ্টাই থাকতে হয় কারখানায়। নেই বিরতি, নেই বিশ্রাম, নেই সাপ্তাহিক ছুটি। একটানা হাড়ভাঙা কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছিল আমেরিকার শ্রমিকেরা। তারা নিজেদের দুঃখ–দুর্দশা আর দাবি–দাওয়ার কথা বলার জন্য ১৮৮১ সালের নভেম্বরে প্রতিষ্ঠা করে ‘আমেরিকান ফেডারেশন অব লেবার’।
সংগঠনটি ১৮৮৬ সালের ১ মে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালন করার জন্য এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেয়। ওই দিন প্রায় পাঁচ লাখ শ্রমিক শিকাগো শহরের রাস্তায় নেমেছিল। দাবি—দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ, ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম, ৮ ঘণ্টা বিনোদন।
কিন্তু গরিব ও ছোটলোকদের দাবি–দাওয়াকে পাত্তা দেওয়ার কী আছে? চালাও গুলি। পুলিশ নির্বিচার গুলি চালায় মিছিলের ওপর। লুটিয়ে পড়ে অন্তত ১১ জন শ্রমিক। আহত হয় অসংখ্য।
এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ৩ মে আবারও পথে নামে ম্যাককর্মিক হার্ভাস্টার কারখানার শ্রমিকেরা। সেদিনও গর্জে ওঠে পুলিশের বন্দুক। প্রাণ হারায় ছয়জন শ্রমিক।
শ্রমিকরা এবার আর চুপ থাকতে পারলো না। তাদের মধ্যে অসন্তোষ লাভার মতো ছড়িয়ে পড়ে। ৪ মে তারা আবারও জড়ো হয় শিকাগোর হে মার্কেট স্কয়ারে। ওই সমাবেশেও গুলি চালায় পুলিশ। আবারও শ্রমিকের রক্তে ভিজে যায় পথ। সভাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় চার শ্রমিক নেতাকে। পরে বিচারে তাঁদের ফাঁসি দেওয়া হয়।
এলো মহান মে দিবস
দু বছর পর ১৮৮৯ সালে প্যারিসে ফরাসি বিপ্লবের ১০০ বছর পূর্তিতে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসে শিকাগোর নিহত শ্রমিকদের স্মরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। পরের বছর প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। এরপর ১৯০৪ সালে নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে অনুষ্ঠিত সমাজতন্ত্রীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশ্বব্যাপী মে মাসের প্রথম দিন মিছিল ও শোভাযাত্রার আয়োজন করতে সব সমাজবাদী গণতান্ত্রিক দল ও শ্রমিক সংঘের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এতে সাড়া দিয়ে বিশ্বের প্রায় সব শ্রমিক সংগঠন পয়লা মে বাধ্যতামূলক কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। বিভিন্ন দেশে মে মাসের ১ তারিখ সরকারিভাবে ছুটির দিন হিসেবে পালিত হতে থাকে। এভাবে বিশ্বব্যাপী চালু হয় ‘মহান মে দিবস’। কোনো কোনো দেশে এটি ‘শ্রমিক দিবস’ হিসেবেও পালিত হয়।
আমেরিকা কেন পালন করে না মে দিবস
শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্র হয়ে ওঠা আমেরিকার নিউইয়র্কে ১৮৮২ সালে নাইটস অব লেবার সংগঠনের ডাকে বড় সভা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ৫ মে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের অংশগ্রঞনে নিউইয়র্কের রাস্তায় শ্রমিকদের বড় মিছিল হয়, যার মূল আয়োজক ছিল সেন্ট্রাল লেবার ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের সেক্রেটারি ম্যাথিউ ম্যাগুয়ার ওই দিনটিতে শ্রমিকদের জন্য ছুটি ঘোষণার দাবি তোলেন। ১৮৮৭ সালে প্রথম অঙ্গরাজ্য হিসেবে ওরেগন এই দাবি মেনে শ্রমিক দিবসের ছুটি ঘোষণা করে।
১৯০৯ সালে নিউইয়র্ক শহরে মে দিবসের মিছিল
এদিকে শিকাগোর শ্রমিক আন্দোলনের রক্তাক্ত ঘটনার পর আমেরিকায় শুরু হয় শ্রমিক ইউনিয়নবিরোধী আন্দোলন। একই সময়ে অনেক কারখানা ও প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের সাপ্তাহিক ছুটি ও কর্মঘণ্টার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে শুরু করে। তাই ‘মে দিবস’ পালন করা হবে কি না, তা নিয়ে দ্বিধায় ছিল মার্কিন কর্মকর্তারা। এদিকে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য তত দিনে ৫ সেপ্টেম্বর শ্রমিক দিবসের ছুটি দেওয়া শুরু করেছে। ফলে ১৮৮৯ সালে ওঠা প্রস্তাবের সাথে বিদ্যমান শ্রমিক দিবস মিলিয়ে একটা বিতর্কের শুরু হয়। শ্রমিক নেতাদের একাংশের ভাষ্য ছিল—১ মে শ্রমিক দিবস ইসেবে শ্রমিকদের রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক। কিন্তু অন্য অংশ এরই মধ্যে চালু হওয়া সেপ্টেম্বরের শ্রমিক দিবসের পক্ষেই অবস্থান নেন, যা মার্কিন প্রশাসনেরও পক্ষে যায়। কারণ, তা ছাড়া মে দিবস পালনে উৎসাহ দিলে শ্রমিকরা আবারও জড়ো হওয়ার সুযোগ পাবে এবং সেখানে সহিংসতা হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে। সুতরাং ১ মে নামের দিনটিকে ভুলে থাকাই ভালো।
এই সুযোগটাকেই বেশ চাতুর্যের সঙ্গে কাজে লাগান তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড। তিনি সেপ্টেম্বরের প্রথম সোমবার শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর ১৮৯৪ সালে দিনটি সরকারি ছুটি হিসেবে গৃহীত হয়।
০১ মে ঘটনার রাজনৈতিক প্রভাব কী
আমেরিকান বিরোধী ইউনিয়ন আন্দোলন এবং ক্লিভল্যান্ড সরকারের সমন্বিত প্রচেষ্টা রাজনৈতিক প্রভাব ফেলেছে। ফলে আমেরিকান সংগঠিত শ্রম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তাদের দাবি ও অধিকার নিয়ে দাঁড়ানোর মতো শক্তিশালী প্লাটফর্ম ছিল না।
এরই পথ ধরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ‘টাফট হার্টলি অ্যাক্ট’ নামের আইন পাস করে মার্কিন সরকার। এর ফলে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর রাজনীতি করা অবৈধ হয়ে যায়। ‘নিরাপত্তা হুমকির’ অজুহাত তুলে ইউনিয়নগুলো কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়।
‘টাফট হার্টলি অ্যাক্ট’ আইন পাসের পর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের প্রকাশ্যে বলতে হয়েছিল—‘কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই এবং সরকার উৎখাতেরও কোনো ইচ্ছা নেই তাদের।
আইনটি অবশ্য ১৯৬৫ সালে ‘অসাংবিধানিক’ বলে খারিজ হয়ে গেছে। কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার, তত দিনে হয়ে গেছে। ক্ষতিটা যে কতটা গভীর, তা বোঝা যায় ছোট্ট এই পরিসংখ্যান থেকে—আমেরিকায় এখন শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য রয়েছে মোট শ্রমিকের মাত্র ১০.১০ শতাংশ! তথ্যসূত্র: ফরচুন ম্যাগাজিন, ভয়েস অব আমেরিকা, সিবিসি নিউজ ও এএস ডটকম।
শেয়ারনিউজ, ০২ মে ২০২৪
পাঠকের মতামত:
- আফতাব অটো ও নাভানা সিএনজি’র সহযোগী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা
- কমলো নীতি সুদহার: শেয়ার ও অর্থবাজারে ইতিবাচক বার্তা
- নাম না থাকলেও পাশ, শূন্য পেলেও উত্তীর্ণ!
- হাসিনা পালানোর পর শিক্ষক দম্পতির কর্মকাণ্ড ঘিরে বিতর্ক
- লিবরা ইনফিউশনের কারখানা বন্ধ, বিনিয়োগকারীদের জন্য উদ্বেগ
- প্রকৌশল খাতে ২৩ কোম্পানির চমকপ্রদ মুনাফা
- এত কিছু জমা দিয়েও নিবন্ধন পেল না এনসিপি
- ১৬ জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এমডি অপসারণ: নেপথ্যে কী?
- ডিবি হারুনের পালানোর রহস্যে নতুন মোড়!
- সেই ইংলিশ মিডিয়ামের সন্তানের কাছে হার মানলেন বাবা-মা
- ভারতীয়দের জন্য বিপদ বাড়ল
- ১৫ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর জন্য বড় সুখবর
- মাকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেওয়া সেই ছেলে গ্রেপ্তার
- প্রয়াত দুই উদ্যোক্তার শেয়ার হস্তান্তরের ঘোষণা
- খুলনা পাওয়ারের অফিস ঠিকানা পরিবর্তন
- ওসিসহ ৬ পুলিশকে প্রত্যাহার
- ইসির ৫১ কর্মকর্তাকে বদলি
- ড. ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ঘোষণা যা বলল প্রেস উইং
- চার কোম্পানির শেয়ারের আকাশছোঁয়া চাহিদা
- শামীম ওসমানের পরিবার ঘিরে দুদকের বড় পদক্ষেপ
- বিশ্বব্যাংকের নজিরবিহীন অর্থায়ন আসছে বাংলাদেশে
- লেনদেনের শীর্ষ কোম্পানির চিৎপটাং!
- উত্তরাধিকার আইনে পালিত সন্তানের জন্য সতর্কবার্তা
- মিসরের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যা জানা গেল
- জনপ্রিয় অভিনেতার নগ্ন ভিডিও ভাইরাল
- বরখাস্ত হলেন এনবিআরের ৮ কর্মকর্তা
- সূচক সাইডলাইনে থাকলেও লেনদেনে উল্লম্ফন
- ১৫ জুলাই ব্লকে তিন কোম্পানির বড় লেনদেন
- ১৫ জুলাই লেনদেনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ১৫ জুলাই দর পতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ১৫ জুলাই দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- এক বছর পর ভাইয়ের পোস্টে যা লিখলেন স্নিগ্ধ
- বিদেশি নম্বর থেকে আসা ফোনকল ধরলেই বিপদ
- শিক্ষকদের পদবি বদল, স্কুলে বড় রদবদল
- প্রেস সচিবের অকপট স্বীকারোক্তি
- নির্বাচন নিয়ে একসাথে নতুন বার্তা দিলেন চরমোনাই ও এনসিপি
- প্রধান উপদেষ্টার প্রশংসায় বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট
- সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় চলছে লেনদেন
- ডিভিডেন্ড পেলো বিনিয়োগকারীরা
- বিএনপি থেকে পদত্যাগ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন মনির খান
- মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় উদ্ধার জনপ্রিয় অভিনেত্রী
- সার্চ কমিটির মাধ্যমে বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগের প্রস্তাব
- সারজিসকে দেখে হঠাৎ ‘দুলাভাই দুলাভাই’ স্লোগান
- যে কারণে ইহুদীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন হিটলার
- ১৫ জুলাই বাংলাদেশি টাকায় বিভিন্ন দেশের আজকের টাকার রেট
- কনফিডেন্স সিমেন্টের রাইট ইস্যুর আবেদন পূণ:বিবেচনা
- মেশিনারীজ কিনবে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ
- লিবরা ইনফিউশনের কারখানা বন্ধ-ডিএসই
- ৩০ লাখ শেয়ার বিক্রি সম্পন্ন
- জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী হোটেল থেকে গ্রেপ্তার
- যারা খারিজ নামজারি করেনি তাদের জন্য সরকারের জরুরী নির্দেশনা
- জনপ্রিয় অভিনেত্রীর লাশ নিতে বাবার অস্বীকৃতি
- বিধ্ব'স্ত রূপে দেখা মিলল টিউলিপ সিদ্দিকির
- চেয়ারম্যান পদ নিয়ে উত্তাল ইসলামী ব্যাংক: পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ
- ফ্লোর প্রাইস থেকে মুক্তির পথে বেক্সিমকো
- জয় যেভাবে হাসিনার ক্যারিয়ার শেষ করে দিচ্ছেন
- জিয়ার অবমাননা নিয়ে আসিফ নজরুলের প্রতিক্রিয়া
- গোপন বিয়ে, প্রতারণা, প্রতিশোধ ও পুলিশ হেফাজতে বিষপানে মৃত্যু
- সরকারি সম্বোধনে আসছে বড় পরিবর্তন
- প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে ১৫ ব্যাংকের
- হঠাৎ কোটা নিয়ে আসিফ নজরুলের স্ট্যাটাস
- ডিবি হারুনের পালানোর রহস্যে নতুন মোড়!
- বর্ষায় ‘বিষ’ এই ৫ সবজিতে!
- রেমিট্যান্সে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ