নিজস্ব প্রতিবেদক : পাবনার ঈশ্বরদীতে আটটি কুকুর ছানাকে বস্তাবন্দি করে পুকুরে ফেলে হত্যার অভিযোগে মামলা হওয়ার পর অভিযুক্ত নারী নিশি রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী। মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে নিশি দাবি করেন, ছানাগুলো বাসার সিঁড়ির পাশে ছিল এবং তাকে বিরক্ত করত, তাই তিনি বাজারের ব্যাগে ভরে পুকুরের ধারে রেখে আসেন; তবে তিনি নাকি স্বেচ্ছায় পুকুরে ফেলেননি।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন ঈশ্বরদী থানায় বাদী হয়ে এ ঘটনায় মামলা করেন। পরে রাত দেড়টার দিকে রহিমপুর এলাকায় একটি ভবনের চারতলা থেকে নিশিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ঘটনার সূত্রপাত এক সপ্তাহ আগে, যখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের পাশে থাকা টম নামের একটি কুকুর আটটি বাচ্চা প্রসব করে। রোববার রাতের কোনো একসময় জীবন্ত ওই ছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। সোমবার সকালে কর্মচারীরা পুকুরে ভাসমান বস্তা থেকে ছানাগুলোর মরদেহ উদ্ধার করেন। সন্তান হারিয়ে মা কুকুরটিকে প্রচণ্ড কান্না ও অস্থির অবস্থায় দেখা যায়, পরে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম জানান, সোমবার সকালে নয়নকে ছানাদের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি অজানা দাবি করেন। তবে তার শিশু ছেলে জানায়—“আম্মু ছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দিয়েছে।” এরপরই ঘটনাটি নিশ্চিত হয়।

ঘটনাটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, এটি অমানবিক ঘটনা এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে; জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না। একই নির্দেশ দেন মহাপরিচালকও।

এদিকে কুকুর ছানা হত্যার ঘটনায় ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নকে আগেই গেজেটেড কোয়ার্টার ছাড়তে লিখিত নির্দেশ দিয়েছিল উপজেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার বিকেলে তারা বাসা খালি করে চলে যান। গ্রেফতারকৃত নিশির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়া চলছে।

মুসআব/