ঢাকা, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

যে কারণে শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন ইসরাইলের দুই প্রধানমন্ত্রী

২০২৫ অক্টোবর ১০ ১৪:২৪:৪০
যে কারণে শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন ইসরাইলের দুই প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত ইসরাইল বহু বছর ধরে তার প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত। হামলা, দখল ও রাজনৈতিক জটিলতায় যখন অঞ্চলটি উত্তপ্ত, তখন শান্তির পথে হাত বাড়িয়ে দেওয়া কয়েকজন নেতার জন্য ইসরাইলি নেতৃত্বকেও একাধিকবার নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।

বিশেষ করে ১৯৭৮ সালের ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি ও ১৯৯৪ সালের অসলো চুক্তি—এই দুটি ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তির মাধ্যমে অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকা রাখায় নোবেল পেয়েছেন ইসরাইলের দুই প্রধানমন্ত্রী ও এক পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মেনাকেম বেগিন ও ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি (১৯৭৮)

ইসরাইলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মেনাকেম বেগিন এবং মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত ১৯৭৮ সালে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

এই পুরস্কার মূলত মিসর-ইসরাইল যুদ্ধাবস্থা অবসানে ভূমিকার জন্য দেওয়া হয়, যা বাস্তবায়ন হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্প ডেভিডে অনুষ্ঠিত একাধিক গোপন আলোচনার মাধ্যমে। এতে মধ্যস্থতা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার।

চুক্তির প্রধান শর্ত ছিল—

ইসরাইল মিসরের দখলকৃত সিনাই উপদ্বীপ ফিরিয়ে দেবে।

মিসর ইসরাইলকে পূর্ণ কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেবে।

এটি ছিল প্রথম আরব-ইসরাইল শান্তিচুক্তি, যা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত।

তবে বেগিনের অতীত রাজনৈতিক জীবন ছিল চরমপন্থি। তিনি একসময় ইরগুন নামক সশস্ত্র ইহুদি সংগঠনের নেতা ছিলেন। এই পটভূমিতেও শান্তি চুক্তিতে তার অংশগ্রহণকে নোবেল কমিটি "সাহসিকতার প্রতীক" হিসেবে বিবেচনা করে।

অসলো চুক্তি ও ১৯৯৪ সালের নোবেল পুরস্কার

১৯৯৪ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ভাগাভাগি করেন—

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী আইজ্যাক রবিন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিমন পেরেস

প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান ইয়াসির আরাফাত

এই তিন নেতা ১৯৯৩ সালের অসলো চুক্তির মাধ্যমে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেন, যেখানে ইসরাইল প্রথমবারের মতো পিএলওকে ফিলিস্তিনিদের বৈধ প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, আর পিএলও ইসরাইল রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়।

চুক্তির অধীনে:

গাজা ও পশ্চিম তীরে সীমিত ফিলিস্তিনি স্বশাসন প্রতিষ্ঠার রূপরেখা তৈরি হয়।

ওয়াশিংটনে চুক্তি স্বাক্ষরের সময় রবিন-আরাফাতের করমর্দন বিশ্ববাসীর নজর কাড়ে।

এই শান্তি প্রচেষ্টা যদিও বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়ায়, ইসরাইলের অভ্যন্তরে তৈরি হয় চরম রাজনৈতিক বিভাজন। চুক্তির ঠিক এক বছর পর, ১৯৯৫ সালের ৪ নভেম্বর, তেল আবিবে এক উগ্র ইহুদি জাতীয়তাবাদীর গুলিতে রবিন নিহত হন।

তার এই আত্মত্যাগকে অনেকেই মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য চূড়ান্ত মূল্য পরিশোধ বলে বিবেচনা করেন।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে