ঢাকা, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

‘মোদি চোর, অমিত শাহ চোর, বিজেপি চোর’

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ১১:৫২:০২
‘মোদি চোর, অমিত শাহ চোর, বিজেপি চোর’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভারতের রাজনীতি ফের উত্তাল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং পুরো বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেছেন,‘মোদি চোর, অমিত শাহ চোর, বিজেপি চোর।’

এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সংঘাত আরও তীব্রতর হয়েছে।

সংঘাতের সূত্রপাত কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন অভিবাসন আইন ঘিরে। ১ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার যে বিজ্ঞপ্তি জারি করে, তাতে বলা হয়—আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং একটি অপ্রকাশিত প্রতিবেশী দেশের সংখ্যালঘুরা, যারা ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে এসেছেন, তারা বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ভারতেই থাকতে পারবেন।

বিজেপি দাবি করছে, এটি মানবিক কারণেই নেওয়া সিদ্ধান্ত। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পদক্ষেপকে ভোট-রাজনীতির ‘চাল’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন:“এই আইন কি সংসদে আলোচনা হয়েছে? স্থায়ী কমিটি বা সিলেক্ট কমিটিতে গেছে? একতরফাভাবে এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো কীভাবে?”

তার অভিযোগ, বিজেপি এই আইনের মাধ্যমে ভোটার তালিকায় জালিয়াতি করতে চাচ্ছে। তিনি আরও বলেন,“বিজেপি জিতবে না। এই আসনে থাকবে আমরা, থাকবে অন্যরা। বিজেপির কোনো অস্তিত্বই থাকবে না।”

মমতার বক্তব্যের সময় বিজেপি বিধায়কেরা কাগজ ছুঁড়ে প্রতিবাদ জানান এবং বক্তৃতা থামানোর চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ায় স্পিকার চার বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন,“বিজেপি মূলত বাঙালির বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। তারা আমাকে দমন করতে পারবে না।”

বিজেপি পাল্টা মমতাকে ‘চোর’ বলে স্লোগান তোলে, যার জবাবে মমতা আরও সরাসরি মোদি ও অমিত শাহের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ তোলেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বাকযুদ্ধ নিছক কথার লড়াই নয়, এর পেছনে রয়েছে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে প্রচ্ছন্ন যুদ্ধ। বিজেপি যেখানে উদ্বাস্তুদের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছে, তৃণমূল সেটাকে ভোটব্যাংকের হিসাব হিসেবে দেখছে।

মমতার কঠিন ভাষা তার সমর্থকদের মধ্যে শক্তি সঞ্চার করছে, যদিও বিরোধীরা বলছেন, এটি তার রাজনৈতিক পরিণতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

নতুন অভিবাসন আইন এখন শুধু কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত নয়, বরং পুরো পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক চিত্রকে ঝড়ের মুখে ফেলে দিয়েছে।

তৃণমূল বলছে, বিজেপি রাজ্যের ভোটে বাইরের ভোটার ঢুকিয়ে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে। আর বিজেপির বক্তব্য, তৃণমূল ভিত্তিহীন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।

ভোটের আর মাত্র এক বছরেরও কম সময় বাকি। তার আগে এই সংঘাত যে আরও তীব্র হবে, তা বলাই বাহুল্য।

কেএইচ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে