ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

এবার ভারতকে প্রত্যাখ্যান করলো শ্রীলঙ্কা 

২০২৫ এপ্রিল ২১ ১০:৪৬:০৩
এবার ভারতকে প্রত্যাখ্যান করলো শ্রীলঙ্কা 

নিজস্ব প্রতিবেদক : শ্রীলঙ্কা ভারতের স্থলপথের পরিবহন করিডোরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে যার ফলে দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশের মধ্যে সড়ক এবং রেল সেতুর সম্ভাবনা কার্যত স্থগিত হয়ে গেছে। গত দুই দশক ধরে ভারতীয় কর্মকর্তারা এই প্রস্তাবটি বিভিন্ন সময়ে উত্থাপন করে আসছিলেন এবং এটি এই মাসের শুরুতে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে পুনরায় আলোচনার বিষয় ছিল।

ভারত শ্রীলঙ্কার সঙ্গে পক প্রণালীতে একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করেছে যা ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্য এবং শ্রীলঙ্কাকে সংযুক্ত করবে। এই সেতুর মাধ্যমে আঞ্চলিক গতিশীলতা জোরদার করার জন্য ভারত আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং রাম সেতুর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব উল্লেখ করেছে। তবে শ্রীলঙ্কার সরকার এই প্রস্তাবটি গ্রহণ করার জন্য সতর্ক মনোভাব দেখিয়েছে।

শ্রীলঙ্কার সরকার এবং বিশেষজ্ঞরা এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কারণ তুলে ধরেছেন। প্রথমত, এটি পরিবেশগতভাবে ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ প্রস্তাবিত সেতুটি এমন এলাকায় নির্মাণ হতে পারে যেখানে প্রবাল প্রাচীর, মাছের প্রজনন এলাকা এবং পরিযায়ী পাখির আবাসস্থল রয়েছে যা আঞ্চলিক জীববৈচিত্র্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। বিশেষ করে মান্নার উপসাগরীয় অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং রাম সেতুর সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা একে আরও জটিল করে তুলছে।

অপরদিকে শ্রীলঙ্কা এখনও একটি অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে এবং বৃহৎ আকারের অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য বিদেশী বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। তবে এই ধরনের প্রকল্পে ব্যাপক খরচ এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। শ্রীলঙ্কার কর্মকর্তারা সতর্কতা অবলম্বন করে এই প্রস্তাবটি "বর্তমানে সম্ভব নয়" বলে মন্তব্য করেছেন।

এছাড়া শ্রীলঙ্কার অবকাঠামো নীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন এমন একটি প্রকল্প আঞ্চলিক বাণিজ্য, পর্যটন এবং গতিশীলতা বাড়ানোর জন্য উপকারী হতে পারে তবে এটি শ্রীলঙ্কার পরিবেশ এবং সামাজিক স্থিতিস্থাপকতার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

ভারতীয় কর্মকর্তারা মনে করেন এই স্থলপথের সেতু দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধি করার একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হতে পারত, যার মাধ্যমে ভারতকে তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত করা সম্ভব হতো। তবে শ্রীলঙ্কার আপত্তি এবং পরিবেশগত ঝুঁকি বুঝতে পারার পর, ভারতীয় কর্মকর্তারা এখন আরো টেকসই বিকল্প যেমন ফেরি পরিষেবা বা সবুজ শিপিং করিডোরের দিকে মনোনিবেশ করার পরিকল্পনা করছেন।

এই সিদ্ধান্ত শ্রীলঙ্কার জাতীয় স্বার্থ, ভূ-রাজনৈতিক নীতিমালা এবং পরিবেশগত সুরক্ষার প্রতি দায়িত্ববোধের পরিচায়ক। তবে, শ্রীলঙ্কা এবং ভারতের মধ্যে ভবিষ্যতে আরও সহযোগিতার সুযোগ থাকতে পারে, তবে তা হয়তো ছোট আকারের, পরিবেশগতভাবে কম ক্ষতিকর প্রকল্পের মাধ্যমে হবে।

এই সিদ্ধান্তটি আরও একটি বিষয়কে তুলে ধরেছে যে আঞ্চলিক উন্নয়ন এবং সংযোগ কেবল অবকাঠামো নির্মাণের ব্যাপার নয় বরং এটি প্রেক্ষাপট ক্ষমতা এবং সম্মিলিত ইচ্ছার বিষয়ও।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে