ঢাকা, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫
Sharenews24

২৬ মেডিকেল কলেজ বন্ধের পরিকল্পনায় সরকার

২০২৫ মার্চ ১০ ১১:০২:২৬
২৬ মেডিকেল কলেজ বন্ধের পরিকল্পনায় সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের বর্তমান সমস্যাগুলোর একটি বিশ্লেষণ। গত ১৫ বছরে দেশের বিভিন্ন জেলার মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হলেও অধিকাংশ কলেজের অবকাঠামো, শিক্ষা সুবিধা ও কার্যক্রম খুবই দুর্বল। অনেক কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরি হয়নি, আর যেগুলোর ক্যাম্পাস আছে, সেগুলোর অবকাঠামো ও সুবিধা অনেক সময় অপ্রতুল। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকট, শিক্ষার মানের ঘাটতি এবং পর্যাপ্ত হাসপাতাল সুবিধার অভাবও রয়েছে। এর ফলে অদক্ষ চিকিৎসকদের সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

এই মেডিকেল কলেজগুলোর বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রাজনৈতিক কারণে, তদবিরের ভিত্তিতে, এবং যথাযথ পরিকল্পনা বা প্রস্তুতি ছাড়াই। এসব কলেজে তাদৃশ্য শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা ঠিকমতো গড়ে ওঠেনি এবং বাস্তবিক শিক্ষাদান পরিচালনা করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।

শিক্ষক সংকট: অনেক কলেজে শিক্ষকদের অভাব, বিশেষ করে বেসিক সায়েন্স (যেমন অ্যানাটমি, বায়োকেমিস্ট্রি) এবং কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক সংখ্যা অত্যন্ত কম।

অবকাঠামো সংকট: বেশ কিছু কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস নেই, এবং যেখানে আছে, সেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় আবাসন, শ্রেণিকক্ষ, এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা অপর্যাপ্ত।

অদক্ষ চিকিৎসক তৈরি: শিক্ষার মানের ঘাটতি কারণে প্রতি বছর অদক্ষ চিকিৎসক বের হচ্ছেন, যাদের অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসার কাজেও দক্ষ নন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ: এতগুলো কলেজের মধ্যে মানহীন ও জোড়াতালি দিয়ে পরিচালিত অন্তত ২৬টি কলেজ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ছয়-সাতটি এবং বাকি সব বেসরকারি মেডিকেল কলেজ। সরকার এসব কলেজে পরিদর্শন করেছে এবং রিপোর্ট তৈরি করছে। আগামী নির্বাচিত সরকারের কাছে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকবে।

বর্তমানে বাংলাদেশে ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি চিকিৎসক রয়েছেন, যা জনসংখ্যার তুলনায় যথেষ্ট, তবে নতুন চিকিৎসকদের কর্মসংস্থানের সমস্যার পাশাপাশি তাদের দক্ষতা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। অতিরিক্ত চিকিৎসক তৈরি হওয়ার কারণে রোগীদের জন্য সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং তাদের কর্মসংস্থান একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত বছর দুইটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের নিবন্ধন বাতিল এবং আরো চারটির নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি আরো ১৬-১৭টি কলেজ স্থায়ীভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে শুধুমাত্র মানসম্পন্ন মেডিকেল কলেজগুলো চালু রাখা, যেখানে যথাযথ শিক্ষক এবং অবকাঠামো থাকবে। এর অংশ হিসেবে আসনসংখ্যা কমানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে চিকিৎসা শিক্ষার মান উন্নত করার লক্ষ্য।

আগামী বছর থেকে এই সিদ্ধান্তগুলো কার্যকর হতে পারে, এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যত নির্ধারণ করা হবে।

এনামুল/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে