ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

আমেরিকায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে পুলিশের হামলা, গ্রেপ্তার অর্ধশত

২০২৪ এপ্রিল ২৮ ১৬:১৮:৩৯
আমেরিকায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে পুলিশের হামলা, গ্রেপ্তার অর্ধশত

প্রবাস ডেস্ক : ইজরায়েল বিরোধী স্লোগানে উত্তপ্ত আমেরিকা। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে প্রিন্সটন, নিউ ইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে আটলান্টার ইমোরি ইউনিভার্সিটি—সবখানে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

দেশটির সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘গাজাকে মুক্ত করো, প্যালেস্টাইনিদের মুক্তি দাও’-শ্লোগানে মুখরিত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন অধ্যাপকেরাও।

পরিস্থিতি সামলাতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে চলে আসে পুলিশের বড় বাহিনী। চলছে বেপরোয়া লাঠিচার্জ। মাটিতে ফেলে পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানো হচ্ছে বিক্ষোভরত পড়ুয়া-অধ্যাপকদের।

দেশটির বহু ক্যাম্পাস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কয়েকশো পড়ুয়াকে। ইজরায়েল-বিরোধী বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার জন্য প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির দুই ভারতীয় পড়ুয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।

শুক্রবার সকালে প্রিন্সটন চত্বরে তাবু খাটিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। সেখান থেকেই পরে তামিলনাড়ুর বাসিন্দা অচিন্ত্যা শিবলিঙ্গন এবং হাসান সইদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অচিন্ত্যা ‘পাবলিক অ্যাফেয়ার্স ইন ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট’ নিয়ে স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা করছেন। হাসান পিএইচডি স্কলার। দুই পড়ুয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অনুপ্রবেশের’ অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের ক্যাম্পাসে ঢোকার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জেনিফার মোরিল বলেন,‘বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তাঁবু খাটিয়ে নিয়ম ভেঙেছে ওরা।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য এক মুখপাত্র মাইকেল হচকিস অবশ্য জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার হওয়া কোনো পড়ুয়াকেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে না। ছাত্রাবাসেও থাকতে দেওয়া হবে।

মোরিল বলেন, ‘বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের বারবার সতর্ক করা হয়েছিল। ওঁরা শোনেননি। আইন-শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য এখন ওঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ভিডিও ছড়িয়েছে। আটলান্টার ইমোরি ইউনিভার্সিটির একটি ভিডিও ঘিরে প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ভিডিওয় দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমকাই গ্রেপ্তার করা শুরু করে পুলিশ। এক পড়ুয়াকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরে তারা। এই সময় এক অধ্যাপিকা প্রতিবাদ করতেই তার উপরেও ঝাঁপিয়ে পড়ে পুলিশ।

ক্যারোলিন ফোলিন নামে ওই নারী চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘আমি অধ্যাপিকা।’ কিন্তু, কেউ শোনেনি। মাটিতে ফেলে তাকে চেপে ধরে দুই-তিন জন পুরুষ পুলিশ। তারপর পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানো হয়।

আটলান্টার এমরি বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ ২৮ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের একাংশের অভিযোগ, ছাত্ররা তাদের দিকে জিনিস ছুড়ে মারে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ রাসায়নিক ও রাবার বুলেট ছোড়ারও খবর পাওয়া গেছে। আটলান্টা পুলিশও তা অস্বীকার করেছে।

নোয়েল ম্যাকাফি নামে এক ছাত্রী দাবি করেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ চলছিল। হঠাৎ পুলিশ চলে আসে। এক মিনিটের মধ্যে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে।’

লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া আজ ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভের কারণে তার স্নাতক অনুষ্ঠান বাতিল করেছে। প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে আশেপাশের বিভিন্ন কলেজে।

ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৩ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিতে পুলিশকে জানায়।

কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে একটু ভিন্ন চিত্র। গত সপ্তাহ থেকে সেখানে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ চলছে।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের দাবি, গাজা যুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট অর্থ ঢালছেন। অবিলম্বে এটা বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে ইসরায়েলকে গাজায় নৃশংস হামলা বন্ধ করতে হবে।

শেয়ারনিউজ, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

পাঠকের মতামত:

অনুসন্ধানী এর সর্বশেষ খবর

অনুসন্ধানী - এর সব খবর



রে