ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

উৎপাদন বন্ধ ও ঋণের বোঝা, সাফকো স্পিনিংয়ের টিকে থাকা অনিশ্চিত

২০২৫ ডিসেম্বর ২৬ ২১:০৪:৩৩
উৎপাদন বন্ধ ও ঋণের বোঝা, সাফকো স্পিনিংয়ের টিকে থাকা অনিশ্চিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত টেক্সটাইল খাতের কোম্পানি সাফকো স্পিনিং মিলস লিমিটেডের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষক। গভীর আর্থিক সংকট, দীর্ঘদিনের উৎপাদন স্থগিত এবং আইনগত পরিপালনে ব্যর্থতার কারণে কোম্পানিটি আদৌ ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে কি না, তা নিয়ে বড় ধরনের সংশয় দেখা দিয়েছে।

সম্প্রতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর এই হতাশাজনক চিত্র ফুটে উঠেছে। নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সাফকো স্পিনিংয়ের পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে কোম্পানিটির অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪২ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ফার্ম 'ফেমস অ্যান্ড আর' -এর পার্টনার ফৌজিয়া হক এফসিএ তাঁর প্রতিবেদনে বেশ কিছু গুরুতর অনিয়ম চিহ্নিত করেছেন। তিনি জানান, কোম্পানিটি নামমাত্র মূল্যে ইনভেন্টরি (কাঁচামাল ও পণ্য) বিক্রি করে দিয়েছে এবং উৎপাদন কার্যক্রম দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে অডিটর জানিয়েছেন, কোম্পানিটির স্বাভাবিক ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ফেরার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ।

নিরীক্ষায় উঠে আসা প্রধান অনিয়মসমূহ:

• নথিপত্রের অভাব: প্রায় ৩ কোটি ২১ লাখ টাকার ইনভেন্টরির বিপরীতে কোনো পর্যাপ্ত প্রমাণপত্র দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ; কেবল ম্যানেজমেন্ট সার্টিফিকেটের ওপর ভিত্তি করে হিসাব দেখানো হয়েছে।

• ব্যাংক ঋণের প্রভিশন: ব্যাংক এশিয়ার ১১৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকার ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় কোনো প্রভিশন বা সঞ্চিতি রাখা হয়নি।

• কর ও ভ্যাট ফাঁকি: বিভিন্ন লেনদেন থেকে কর্তনকৃত টিডিএস এবং ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি।

• সিএমএসএফ-এ অর্থ প্রদানে ব্যর্থতা: তিন বছরের বেশি সময় ধরে অবণ্টিত থাকা ১১.৩১ লক্ষ টাকার ডিভিডেন্ড আইন অনুযায়ী ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে ‍(সিএমএসএফ) স্থানান্তর করা হয়নি।

সাফকো স্পিনিংয়ের এই ক্রমাগত লোকসানের সরাসরি প্রভাব পড়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওপর। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি লোকসান করেছে ৭ টাকা ৫২ পয়সা। ফলে পরিচালনা পর্ষদ এই বছরের জন্য কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

২০০০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ২৯ কোটি ৯৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। মোট শেয়ারের ৩০ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে, ৪.২৪ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে এবং বাকি ৬৫.৭৬ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে