ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

শেখ হাসিনার আগে মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল যে তিন বিশ্বনেতার

২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১৫:২৩:০৬
শেখ হাসিনার আগে মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল যে তিন বিশ্বনেতার

নিজস্ব প্রতিবেদক : দক্ষিণ এশিয়ায় সাবেক রাষ্ট্রনেতাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার নজির নতুন নয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার আগে এ অঞ্চলের আরও দুই সাবেক শাসক—জুলফিকার আলী ভুট্টো ও পারভেজ মোশাররফ—মৃত্যুদণ্ডের সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হয়েছিলেন। এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে শুধু ভুট্টোর ক্ষেত্রে। অন্যদিকে পশ্চিম এশিয়ায় বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সবচেয়ে আলোচিত দৃষ্টান্ত হলো ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন।

উপমহাদেশে প্রথম আলোচিত মৃত্যুদণ্ডের রায়টি আসে পাকিস্তানে। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রতিষ্ঠাতা জুলফিকার আলী ভুট্টো ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭৭ সালে সেনাপ্রধান জিয়াউল হকের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। ক্ষমতাচ্যুতির দুই বছর পর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে হত্যার নেপথ্যে থাকার অভিযোগে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ১৯৭৯ সালের ৪ এপ্রিল রাওয়ালপিন্ডির কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। দীর্ঘ চার দশক পর ২০২৩ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট স্বীকার করে যে ভুট্টো ‘ন্যায্য বিচার’ পাননি, এবং বিচার প্রক্রিয়ায় গুরুতর ত্রুটি ছিল।

পাকিস্তান আরেক সাবেক প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেখেছিল আরও অনেক পরে—২০১৯ সালে। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা পারভেজ মোশাররফ ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০০৭ সালে সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মামলার রায় ঘোষণা করে আদালত, যেখানে মোশাররফকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তবে তিনি তখন চিকিৎসার জন্য দুবাইতে ছিলেন এবং ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেখানেই মারা যান। ফলে তার রায় কার্যকর হয়নি।

পশ্চিম এশিয়ায় রাজনৈতিক নেতা হিসেবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হলো ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসি। ১৯৭৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ইরাক শাসন করেন সাদ্দাম। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতাকালীন গণহত্যা, বেসামরিক মানুষের ওপর হামলা এবং রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগে ইরাকে বিশেষ আদালতে বিচার অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে বিশেষভাবে আলোচিত ছিল ১৯৮২ সালে দুজাইল শহরে শিয়া জনগোষ্ঠীর হত্যাকাণ্ড এবং ১৯৮৮ সালে কুর্দি অধ্যুষিত হালাবজায় রাসায়নিক হামলা, যেখানে বহু মানুষ নিহত হয়। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট ইরাকে হামলা চালিয়ে সাদ্দাম সরকারকে উৎখাত করে। পরের বছর তিনি গ্রেপ্তার হন। বিচার শেষে ২০০৬ সালের নভেম্বরে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এবং সেই রায় কার্যকর করা হয় ২০০৬ সালের ঈদুল আজহার দিনে—৩০ ডিসেম্বর।

শেখ হাসিনার রায়ের সঙ্গে এই তিন ঐতিহাসিক রায়কে তুলনা করা হচ্ছে প্রেক্ষাপট, অভিযোগের ধরন ও রাজনৈতিক ইতিহাসের কারণে। এসব ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে আল জাজিরা, বিবিসি, সিএনএন ও ব্রিটানিকার প্রতিবেদন থেকে।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে