ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

পাকিস্তানের জন্য ফাঁদ পেতে সেই ফাঁদে পড়লেন মোদি 

২০২৫ নভেম্বর ১৪ ১৫:০৩:৪০
পাকিস্তানের জন্য ফাঁদ পেতে সেই ফাঁদে পড়লেন মোদি 

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সম্প্রতি সংঘটিত এক ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে দেশটির রাজনীতিতে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এই ঘটনাকে "সন্ত্রাসবাদী ও দেশবিরোধী শক্তির কাজ" হিসেবে অভিহিত করা হলেও, ভারত সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানের নাম উচ্চারণ করতে পারছে না। এই নীরবতা ও ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

দিল্লি বিস্ফোরণের বিবরণ ও ভারতের প্রতিক্রিয়া

দিল্লিতে একটি গাড়ি বিস্ফোরণে ১৩ জন নিহত এবং ২০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকের অবশিষ্টাংশ উদ্ধার করেছেন। এই ধরনের বড় নাশকতার ঘটনাকে ভারত সরকার "সন্ত্রাসবাদী ও দেশবিরোধী শক্তির কাজ" বলে উল্লেখ করলেও, এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের নাম নিতে পারছে না। এর আগে গত এপ্রিলে ভারতের দখলীকৃত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে চার দিনের সংঘাত হয়েছিল, যা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল ভারত।

বদলে যাওয়া ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি

আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, গত মে মাসের পর থেকে ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তিত হয়েছে, যা ভারতের বর্তমান নীরবতার কারণ হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্ক জোরদার: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক যত বেশি গভীর হচ্ছে, ট্রাম্প তত বেশি মোদিকে এড়িয়ে চলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বন্ধের কৃতিত্ব তার।

ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক দুর্বলতা: ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক চুক্তি "হবে হবে করেও এখনো হয়ে ওঠেনি" এবং দরকষাকষি অব্যাহত রয়েছে।

তুরস্ক-পাকিস্তান সম্পর্ক: তুরস্ক "অপারেশন সিন্দূর" সময় থেকে পাকিস্তানের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে চলছে।

ভারতের অভ্যন্তরীণ চাপ ও বিজেপির অবস্থান

বিজেপি শাসিত ভারত সরকার বর্তমানে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উভয় চাপের মধ্যে রয়েছে। সরকারের অভ্যন্তরে কিছু মহল মনে করে যে, এই পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন কোনো সংঘাত শুরু করা ভারতের জন্য লাভজনক হবে না। সাউথ এশিয়া টেরোরিজম পোর্টালের নির্বাহী পরিচালক অজয় সাহনি আল জাজিরাকে জানান, "ভারত নিজের পাতা ফাঁদে পড়ে গেছে।" তিনি আরও মনে করেন, "বোকাবোকা অবস্থান" ঘোষণা করে ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এই ঘটনাগুলি মোদি সরকার ও শাসক দল বিজেপিকে গত ১১ বছরে এতটা অসহায় আগে দেখায়নি বলে মন্তব্য করা হয়েছে। দেশের নতুন রণনীতি সম্পর্কে সরকারিভাবে কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি, যা সরকারকে আরও বিপদগ্রস্ত করে তুলেছে।

অপরাধীদের কঠোর শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিলেও, ভারত সরকার বা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এখনো সরাসরি পাকিস্তানের দিকে আঙুল তুলতে পারছেন না। দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মতো শীর্ষ নেতারাও এই মুহূর্তে এ বিষয়ে আর কিছু বলতে পারছেন না। এই পরিস্থিতি ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে