ঢাকা, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

শেয়ারবাজারে অচল মিউচুয়াল ফান্ডে বড় পরিবর্তন আনছে বিএসইসি

২০২৫ অক্টোবর ২০ ০৬:২৪:২৫
শেয়ারবাজারে অচল মিউচুয়াল ফান্ডে বড় পরিবর্তন আনছে বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ ক্লোজড-এন্ড মিউচুয়াল ফান্ড (এমএফ) দীর্ঘদিন ধরে নিট অ্যাসেট ভ্যালু (এনএভি)-এর তুলনায় অনেক নিচে লেনদেন হচ্ছে। এটি তাদের দুর্বল পারফরম্যান্সের স্পষ্ট ইঙ্গিত। বিনিয়োগকারীদের এই অচল অবস্থার হাত থেকে মুক্তি দিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একটি গুরুত্বপূর্ণ খসড়া সংশোধনী প্রকাশ করেছে।

প্রস্তাবিত সংশোধনী অনুযায়ী, কোনো ক্লোজড-এন্ড ফান্ডের ইউনিট যদি তার এনএভি থেকে ২৫ শতাংশের বেশি ডিসকাউন্টে ছয় মাস ধরে লেনদেন হয়, তবে সেই ফান্ড বাধ্যতামূলকভাবে লিকুইডেশন বা ওপেন-এন্ড ফান্ডে রূপান্তর করতে হবে— এমন নিয়ম প্রবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে বিএসইসি।

এই পদক্ষেপটি মূলত ২০১৮ সালে মেয়াদ বাড়ানোয় আটকে থাকা বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বস্তির পথ খুলে দিতে পারে। চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে বিএসইসি জনমত চেয়েছে এবং নতুন কোনো ক্লোজড-এন্ড ফান্ডের অনুমতি না দেওয়ার প্রস্তাবও করেছে।

খসড়া অনুযায়ী, ছয় মাসের গড় লেনদেন মূল্য যদি গড় এনএভি (ন্যায্য বা ক্রয়মূল্যের মধ্যে যেটি বেশি) থেকে ২৫ শতাংশের বেশি নিচে থাকে, তবে গেজেট প্রকাশের ছয় মাস পর ফান্ডটি রূপান্তরের আওতায় আসবে। তখন ট্রাস্টিকে বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) আহ্বান করতে হবে এবং ইউনিটহোল্ডারদের তিন-চতুর্থাংশ ভোটে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বিএসইসি মুখপাত্র মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “বেশিরভাগ ফান্ডের বাজারদর এনএভি থেকে অনেক নিচে, যা স্পষ্ট করে যে তাদের পারফরম্যান্স আশানুরূপ নয়। এই অবস্থায় অ-পারফর্মিং ফান্ডগুলোকে ওপেন-এন্ড ফান্ডে রূপান্তর করা হলে বিনিয়োগকারীরা যেকোনো সময় তাদের অর্থ তুলে নেওয়ার সুযোগ পাবেন।”

সংশোধনী কার্যকর হলে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো (এএমসি) আর সরাসরি ফান্ডের সম্পদ পরিচালনা করতে পারবে না। পরিবর্তে কাস্টোডিয়ানরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, যাদের ন্যূনতম ২ বিলিয়ন টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। পাশাপাশি কাস্টোডিয়ান ফি ০.১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ০.৫০ শতাংশ পর্যন্ত করার প্রস্তাবও করা হয়েছে।

নতুন বিধিমালায় বিনিয়োগকারীর অর্থের অপব্যবহার ঠেকাতে ফান্ডগুলোকে কেবল তালিকাভুক্ত ও সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হবে। এতে কোনো শ্রেণিতে ঊর্ধ্বসীমা থাকবে না।

বিএসইসি’র এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “কিছু ফান্ড ম্যানেজার বিনিয়োগকারীদের অর্থকে নিজেদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি মনে করেন। তাই এই পরিস্থিতিতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।”

বর্তমানে ৩৭টি ক্লোজড-এন্ড ফান্ড তালিকাভুক্ত রয়েছে, যেগুলোর অধিকাংশই তাদের অভিহিত মূল্যের চেয়ে অনেক নিচে লেনদেন হচ্ছে। বিএসইসি কর্মকর্তারা আশা করছেন, নতুন এই সংশোধনী কার্যকর হলে ফান্ডগুলো নিয়ন্ত্রিত লিকুইডেশন বা রূপান্তর প্রক্রিয়ার আওতায় আসবে। এতে বিনিয়োগকারীরা অন্তত তাদের বিনিয়োগের কিছু অংশ পুনরুদ্ধারের সুযোগ পাবেন এবং বাজারে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছাবে।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে