ঢাকা, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

গ্রাহক আস্থায় ব্যাংকের তুলনায় পিছিয়ে বীমা খাত,কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা

২০২৫ অক্টোবর ১৫ ২০:৫৩:৫৪
গ্রাহক আস্থায় ব্যাংকের তুলনায় পিছিয়ে বীমা খাত,কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রাহক আস্থা ও স্বচ্ছতার দিক থেকে বাংলাদেশের বীমা খাত এখনো ব্যাংকিং খাতের তুলনায় অনেক পিছিয়ে, এমন মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, ব্যাংক খাতে সুশাসন ও জবাবদিহিতা অনেকটা প্রতিষ্ঠিত হলেও বীমা খাতে এখনো তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। তাই এই খাতের বিকাশে গ্রাহকের আস্থা পুনরুদ্ধারই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, যা অর্জনে প্রয়োজন প্রযুক্তি নির্ভর সেবা, দ্রুত দাবি নিষ্পত্তি এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার সক্রিয় তদারকি।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর ক্যাডেট কলেজ ক্লাবে ‘বীমা খাতে আর্থিক শৃঙ্খলা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বক্তারা এসব মতামত দেন। কর্মশালার আয়োজন করে ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরাম (আইআরএফ), যেখানে সংগঠনের ৩৫ জন সদস্য অংশ নেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আইআরএফ সভাপতি গাজী আনোয়ারুল হক।

কর্মশালায় গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাকিবুল করিম বলেন, “দেশে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি বিস্ময়কর। এখন অনলাইনে খাবার অর্ডার করলে জানা যায় কখন খাবার তৈরি হচ্ছে, কখন ডেলিভারি ম্যান রওনা হয়েছেন, এমনকি কখন বাসার নিচে পৌঁছেছেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বীমা খাতে এখনো এমন কোনো প্রযুক্তি নেই, যার মাধ্যমে গ্রাহক জানতে পারেন তার প্রিমিয়াম জমা, পলিসির মেয়াদ বা বকেয়া তথ্য।”

তিনি বলেন, বীমা খাতের প্রতি আস্থা পুনরুদ্ধার করতে হলে নতুন ও উদ্ভাবনী পণ্য চালু করতে হবে এবং দাবি নিষ্পত্তির প্রক্রিয়াকে দ্রুত ও সহজ করতে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি।

রাকিবুল করিম আরও বলেন, কিছু কোম্পানির দাবি পরিশোধে ব্যর্থতা পুরো খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। গ্রাহক আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে কোম্পানিগুলোর আন্তরিকতা ও আইডিআরএ’র কঠোর তদারকি প্রয়োজন। তিনি জানান, গার্ডিয়ান লাইফ বর্তমানে শতভাগ ক্যাশলেস সিস্টেমে দাবি পরিশোধ করছে, যেখানে ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যেই অর্থ গ্রাহকের কাছে পৌঁছে যায়।

প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারবাজারে যাওয়ার পরিকল্পনা সম্পর্কে শেখ রাকিবুল করিম বলেন, “আমরা ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে বাজারে যেতে চাই না। আমাদের প্রবৃদ্ধি ও ব্র্যান্ড ভ্যালুর কারণে গার্ডিয়ান লাইফের শেয়ারের মূল্য অবশ্যই ১০ টাকার বেশি হওয়া উচিত।”

কর্মশালায় জানানো হয়, ২০২৫ সালে দেশে ৩৬টি জীবনবীমা কোম্পানির মাধ্যমে মোট ৫ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকার প্রিমিয়াম আয় হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৪টি কোম্পানি মোট প্রিমিয়ামের ৮৮ শতাংশ আয় করেছে। শীর্ষ ১০টি কোম্পানি প্রত্যেকেই ১০০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় করেছে।

আইডিআরএ’র সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৮২টি বীমা কোম্পানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে—এর মধ্যে ৩৬টি জীবনবীমা এবং ৪৬টি সাধারণ বীমা কোম্পানি।

বক্তারা বলেন, বীমা খাতের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে গ্রাহক আস্থা পুনরুদ্ধার ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ওপর। দাবি নিষ্পত্তিতে সময়োপযোগী উদ্যোগ, উদ্ভাবনী প্রোডাক্ট, প্রযুক্তিনির্ভর সেবা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর ভূমিকা নিশ্চিত করা গেলে খাতটি দেশের অর্থনীতিতে আরও বিশ্বস্ত ও শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে পারবে।

মিজান/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে