হাসিনার চিকিৎসকের ছেলে ও মন্ত্রীর পুত্রের ‘সিসা বার’ খুলে দিতে তদবির
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর গুলশান ও বনানীর অভিজাত এলাকায় কয়েকটি সিসা বার পুনরায় চালু করতে রাজনৈতিক নেতাদের চাপের কারণে নারকোটিক্স অধিদপ্তর এখন চরম চাপে রয়েছে।
বনানীর সেলসিয়াস ও এক্সোটিক নামের দুটি সিসা বার আগে আওয়ামী লীগের আমলে পুলিশের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হত। এই সিসা বার দুটির পেছনে ছিলেন ভারতে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের ছেলে, আসিফ মোহাম্মদ নূর। সরকারের পতনের পর এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি এই সিসা বার পুনরায় চালু করার জন্য বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তদবির চালাচ্ছেন।
তদন্তে জানা গেছে, নারকোটিক্স কার্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত করছেন শরিফ আল জাওয়াদ নামে এক গাড়ি ব্যবসায়ী, যিনি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছেন। নিজেকে প্রভাবশালী প্রমাণ করতে তিনি বিএনপি নেতাদের সঙ্গে তোলা সেলফি ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবি দেখাচ্ছেন এবং নিজেও বিএনপি নেতা দাবি করছেন। তাঁর গাড়ি বিক্রির প্রতিষ্ঠান ‘ইউনিভার্সাল অটো’ অবস্থিত প্রগতি সরণিতে।
বিএনপি নেতাদের নাম ভাঙিয়ে তদবিরের অভিযোগে শরিফ আল জাওয়াদের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। একইভাবে সেলসিয়াস সিসা বারের মালিক আসিফ মোহাম্মদ নূরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
আওয়ামী লীগ আমলে গুলশান-বনানীতে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, মেয়র ও প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় বেশ কয়েকটি সিসা বার গড়ে উঠেছিল। বনানীতে ‘আল গিসিনো’ সিসা বারের পেছনে ছিলেন সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলে রনি চৌধুরী। গুলশানের কোর্টইয়ার্ড বাজারের সিসা বার পরিচালনা করতেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামের মেয়ে, হিট অফিসার বুশরা আফরিন। এছাড়া ‘ফারেন হাইট’ সিসা বার পরিচালনা করতেন শেখ পরিবারের সদস্য শেখ ফারিয়া। তবে গত বছর আগস্টে সরকার পতনের পর তারা অজ্ঞাত স্থানে গা ঢাকা দিয়েছেন।
রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর অনেক সিসা বার রাতারাতি দখল হয়েছে এবং ভোল পাল্টে নতুন রাজনৈতিক পরিচয়ে হাজির হয়েছে। এ ব্যবসায় অসাধু আইনজীবী, সরকারি কর্মকর্তারা এবং হলুদ সাংবাদিকদেরও সিন্ডিকেট জড়িত। ফলে কঠোর পদক্ষেপের পরও অবৈধ সিসা বার স্থায়ীভাবে বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
সরেজমিনে বনানী ১১ নম্বর রোডের ১ নম্বর বাড়ির পঞ্চম তলায় ‘কিউডিএস’ নামে একটি সিসা বার চলছে। বুধবার বিকালে সেখানে গিয়ে দরজা বন্ধ পাওয়া গেছে। দরজার ফাঁক দিয়ে একজন জানান, ‘সব বন্ধ আছে, গেস্ট ঢুকছে না, পরে খুললে ফোন করবেন।’
সেলসিয়াস ও এক্সোটিক সিসা বার রয়েছে বনানী ১১ নম্বর রোডের ৪৩ নম্বর ভবনে। নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, নারকোটিক্সের কঠোর তদারকির কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। মালিকরা বিষয়টি আলোচনা করছেন, শিগগিরই চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সম্প্রতি নারকোটিক্স বনানীর ‘সিগনেচার’ সিসা বারে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করে মামলা করেছে। সেই সিসা বারটি খুলতে তদবির করছেন তানভির নামে এক ব্যক্তি, যিনি নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করে প্রভাবশালী প্রমাণের জন্য শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ছবি দেখাচ্ছেন।
এছাড়া বনানীর ‘হাভানা ক্যাফে লাউঞ্জ’ এর মালিক রফিক ফরাজি, যিনি আগে আওয়ামী লীগের শেলটারে থেকে সিসা বার চালাতেন, বর্তমানে নিজেকে বিএনপির পদধারী নেতা দাবি করছেন। নারকোটিক্সের সাম্প্রতিক অভিযানের পর তাঁর মোবাইল নম্বর বন্ধ রয়েছে।
অবৈধ সিসা বার পরিচালনায় রাজনৈতিক নেতাদের চাপ ছাড়াও মেহেদী নামের এক সরকারি কর্মকর্তা বনানীর ‘অরা’ সিসা বার চালু করতে তদবির করছেন। ‘আল গিসিনো’, ‘থার্টি টু ডিগ্রি’, ‘ক্যাফে এক্সাইল’, ‘দ্য সিলভার লাউঞ্জ’, ‘এস লাউঞ্জ’ ও ‘ইয়া হাবিবিসহ’ আরও কিছু সিসা বার চালাতে প্রভাবশালী সচিবের ছেলে, অতিরিক্ত সচিব ও একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের মালিক হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।
নারকোটিক্স কর্মকর্তারা জানান, অভিযান চালিয়ে সিসা বার বন্ধ করলেও প্রভাবশালীদের তদবিরে শেষ পর্যন্ত নমনীয় হতে হয়। অনেক প্রতিষ্ঠান মধ্যরাতে গোপনে কার্যক্রম চালায়। উদাহরণস্বরূপ, বনানী ১১ নম্বর রোডে ‘হেইজ’ সিসা বার বন্ধ হয়ে নাম বদলে ‘সিয়াম লাউঞ্জ’ নামে ফের চালু হয়েছে এবং রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এছাড়া আবাসিক হোটেল ও অভিজাত ফ্ল্যাটেও গোপনে সিসা সেবনের আড্ডা চলছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিসা বারের ভেতরের আলো-আঁধারির পরিবেশ তরুণদের বিপথগামী করছে। অন্ধকার ঘর ও ছোট খুপরিতে তরুণ-তরুণীরা ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ পায়, যা নৈতিক অবক্ষয়ের কারণ।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জানায়, সিসায় উচ্চমাত্রায় আসক্তি হয়, যা স্বাভাবিক জীবনযাপন কঠিন করে তোলে। নিয়মিত সিসা সেবনে শ্বাসতন্ত্রের ক্যানসার, নারীর গর্ভধারণে সমস্যা ও চিরস্থায়ী বন্ধ্যত্ব হতে পারে। সিসা বারে যাওয়া তরুণদের মধ্যে অনেকেই পরবর্তীতে ভয়ংকর মাদক যেমন ইয়াবা ও আইসের আসক্তির ঝুঁকিতে থাকে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক ড. দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, সিসায় ব্যবহৃত নেশা উপকরণে অত্যন্ত উচ্চমাত্রার নিকোটিন থাকে। মাত্র এক পাফে প্রায় ২০০ সিগারেটের সমপরিমাণ নিকোটিন শরীরে প্রবেশ করে। ধোঁয়া টানার সময় ‘টার’ ও কৃত্রিম ফ্লেভারসহ অন্যান্য রাসায়নিকও শরীরে যায়।
পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাবিত শহুরে অভিজাতদের মধ্যে সিসা সেবন নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা যায়। তারা মনে করেন সিসা তেমন ক্ষতিকর নয়, যেহেতু ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে প্রকাশ্যে সিসা সেবন হয়। তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুযায়ী, সিসায় ০.২ শতাংশের বেশি নিকোটিন থাকলে তা ‘খ’ শ্রেণির মাদক, যার অপরাধে ১ থেকে ১০ বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
অবৈধ সিসা বার বিষয়ে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক একেএম শওকত ইসলাম জানান, ‘প্রভাবশালীদের তদবির যতই আসুক না কেন, অবৈধ সিসা বার চালানো আর আমরা বরদাস্ত করব না। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছে। কোনো অবৈধ কার্যক্রম জানতে পারলেই আমরা তৎক্ষণাৎ অভিযান চালাই এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করি।’
মুসআব/
পাঠকের মতামত:
- গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
- ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত তথ্য জানাল ঢাকা ডায়িং
- যে কারণে ঢাকা-৮ নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে সবার
- ব্যাংকে কোটি টাকার হিসাবের সংখ্যা বেড়েই চলেছে
- দেশে ভয়াবহ হারে বেড়েছে বৈদেশিক ঋণের চাপ
- জনতা ব্যাংক ও এস আলম গ্রুপ: ৩৪ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা
- ডিএমপির ১৫ পরিদর্শককে বদলি ও পদায়ন
- টানা ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- কৃষকদের জন্য জরুরি ঘোষণা দিল সরকার
- ভোজ্যতেলের নতুন দাম নির্ধারণ
- ভোটের সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি
- সিএসই শরিয়াহ সূচকে বড় পরিবর্তন, বাদ ১০ কোম্পানি
- ‘ইতিহাসের সেরা নির্বাচন উপহার দেব’—ইসিকে প্রধান উপদেষ্টা
- নির্বাচন দেরি হলে সংকট বাড়বে’—মান্নার সতর্কবার্তা
- আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান
- তিন মাস পর পেঁয়াজ আমদানি শুরু, বাজারে স্বস্তির হাওয়া
- নিজেকে বিয়ের অনুপযুক্ত বললেন বলিউড তারকা
- আইটি কনসালট্যান্টসের ডিভিডেন্ড অনুমোদন
- কোহিনূর কেমিক্যালের ডিভিডেন্ড অনুমোদন
- রোহিঙ্গাদের জন্য যৌথ তহবিল ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য ও কাতার
- হঠাৎ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দখল করে অভ্যুত্থানের ঘোষণা
- আয়না ঘরের লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন চিফ প্রসিকিউটর
- ডিজির সঙ্গে বাকবিতণ্ডা: শোকজ পেয়ে যা করলেন চিকিৎসক
- ইপিএস প্রকাশ করবে দুই কোম্পানি
- আট বছরের অপেক্ষা বাড়ল বেক্সিমকো সুকুক বন্ডহোল্ডারদের
- খাদ্য খাতে বড় ধাক্কা, উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি
- কেএইচবি সিকিউরিটিজের ঋণ সংক্রান্ত অনিয়ম তদন্তে বিএসইসি
- “সোমবারই বিটিভিকে চিঠি”—তফসিল রেকর্ডের নির্দেশ
- জ্বালানি নীতিতে বিস্ফোরক বক্তব্য প্রেসসচিবের
- এজিএম-এর ভেন্যু ঘোষণা করেছে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল
- এনসিপিসহ তিন দলের সমন্বয়ে আসছে নতুন জোট
- এজিএম সংক্রান্ত জরুরি তথ্য জানিয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ
- কওমী শিক্ষার্থীদের জন্য সুখবর, এলো বড় পরিবর্তন
- কোরআনের ভাষাগত অলৌকিকতাঃ সূরা আল ওয়াকিয়াহ
- নাম পরিবর্তনের অনুমোদন পেয়েছে তালিকাভুক্ত কোম্পানি
- পেঁয়াজের দামে হঠাৎ ৪০ টাকার পতন
- পতনের বাজারেও সাত শেয়ারে ব্যতিক্রমী উচ্ছ্বাস
- নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ, টানা দরপতনে ধস নামছে বাজারে
- ৭ ডিসেম্বর ব্লকে দুই কোম্পানির বড় লেনদেন
- এজিএম এর সময়সূচি জানিয়েছে ইফাদ অটোজ
- ৭ ডিসেম্বর লেনদেনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ৭ ডিসেম্বর দর পতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ৭ ডিসেম্বর দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ১৭ বছরেও কেন পদোন্নতি পাননি জানা গেল কারণ
- হাসিনাকে উদ্ধারে ভারত যা যা করেছিল
- ৫ ব্যাংকের গ্রাহকদের টাকা ফেরতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন স্কিম
- আইন বদলে দলিল থাকলেই জমির মালিকানা নয়
- সারজিস আলমকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
- সূচকের উত্থানে চলছে লেনদেন
- যেসব আমলে দ্বিগুণ প্রতিদান পাওয়া যায়
- ফাঁস হল আইএফআইসি ব্যাংকের ২৭ হাজার কোটির খেলাপি ঋণ
- খেলাপি কমাতে নতুন পথ খুলে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর প্রথম ধাক্কা খেল জিপিএই ইস্পাত
- ৩৫ হাজার কোটি টাকার মূলধন নিয়েও ব্যাংকের ডিলিস্টিংয়ে সমন্বয়হীনতা
- নতুন আইপিও বিধিমালায় সরাসরি তালিকাভুক্তির সুযোগে শেয়ারবাজারে ঝড়
- সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের দায়ে ১৬ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা
- ৯টি এনবিএফআই অবসায়নের অনুমোদন দিল বাংলাদেশ ব্যাংক
- শেয়ারবাজারে ব্যাংক এশিয়া ব্রোকারেজ হাউজের বড় বিনিয়োগ
- জিপিএইচ ইস্পাতের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- আইসিবি'র ৪৫০৫ কোটি টাকার লোকসান গোপন
- নয় বছর বন্ধ কারখানা চালু করতে চায় বিডি ওয়েল্ডিং
- বোনাস ডিভিডেন্ড পেল কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- চমক দেখাল সাবেক মন্ত্রী জাহিদ মালেকের কোম্পানির শেয়ার
- এনসিপিতে জায়গা হচ্ছে না আসিফ মাহমুদের, প্রকাশ্যে দুই উপদেষ্টার দ্বন্দ্ব
- ৭৬টি কম্পনের পর ভূমিকম্পের চরম সতর্কতা














