ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

হাসিনা পালানোর পরও ভারতে ঝুঁকছে বাংলাদেশ 

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ১১:৫৩:১০
হাসিনা পালানোর পরও ভারতে ঝুঁকছে বাংলাদেশ 

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভারত ভ্রমণে বাংলাদেশিরা আবারও শীর্ষ পর্যটক তালিকায় উঠে এসেছে। ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ভারতে যাওয়া বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে বাংলাদেশিরা পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। ওই এক মাসে প্রায় ২৯ হাজার বাংলাদেশি ভারতে ভ্রমণ করেন। যদিও ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশ রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ভারতের ভিসা সীমাবদ্ধতার কারণে এই তালিকা থেকে পিছিয়ে পড়েছিল, তবে সাম্প্রতিক সময়ে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় বাংলাদেশি পর্যটকদের উপস্থিতি আবারও চোখে পড়ছে।

বর্তমানে ভারতীয় হাইকমিশন প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই হাজার ভিসা ইস্যু করছে। যদিও সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন ট্যুরিস্ট ভিসা এখনও চালু হয়নি, তবে চিকিৎসা ও ব্যবসা ভিসা সীমিত পরিসরে দেওয়া হচ্ছে। অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত বণিক জানিয়েছেন, “ভারত বর্তমানে মেডিকেল ভিসাই বেশি ইস্যু করছে। ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ থাকায় ভ্রমণকারীর সংখ্যা আগের মতো বাড়ছে না।”

বাংলাদেশ থেকে এখন সবচেয়ে বেশি যাত্রা হচ্ছে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে। কলকাতা, চেন্নাই, ব্যাঙ্গালুরুসহ ভারতের বিভিন্ন বড় শহরের আধুনিক হাসপাতালে প্রতিদিনই চিকিৎসা নিতে যাচ্ছে শত শত বাংলাদেশি। ব্যবসা ও শিক্ষা ক্ষেত্রেও জরুরি প্রয়োজনে কিছু ভিসা দেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয়।

ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশটিতে মোট ৯৫ লাখ বিদেশি পর্যটক গিয়েছিলেন, যার মধ্যে বাংলাদেশি ছিলেন ২১ লাখ ২০ হাজার — ওই বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ভারতে মোট ৬ লাখ ২৬ হাজার বিদেশি পর্যটক প্রবেশ করেন, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিল সবচেয়ে বেশি (১৬.৩%), এরপর যুক্তরাজ্য (১৩.৫%), অস্ট্রেলিয়া (৬.১%), কানাডা (৪.৮%) এবং বাংলাদেশ (৪.৬%)।

ভিসা ইস্যু কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে বিমান সংস্থাগুলোর ওপরও। ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগে যেখানে ঢাকা-কলকাতা রুটে সপ্তাহে ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হতো, এখন সেটি নেমে এসেছে মাত্র তিনটিতে। যাত্রী সংকটের কারণে ফ্লাইট কমাতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

বর্তমানে বাংলাদেশিদের জন্য ১৪ ধরনের ভিসা অনুমোদিত থাকলেও ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ থাকায় মূলত পর্যটন খাতেই সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে। এক ভিসা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, আগে বছরে প্রায় ১৬ লাখ ভিসা ইস্যু হতো, যার বড় একটি অংশ ছিল ট্যুরিস্ট ভিসা। এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারত ভ্রমণে বাংলাদেশিদের চাহিদা বরাবরই ছিল চিকিৎসা, শিক্ষা ও কেনাকাটার প্রতি কেন্দ্রীভূত। ফলে ট্যুরিস্ট ভিসা চালু না থাকলেও পুরোপুরি ভ্রমণ বন্ধ হয়নি। ভবিষ্যতে দুই দেশের সাংস্কৃতিক ঘনিষ্ঠতা, স্বাস্থ্যসেবা নির্ভরতা এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিবেচনায় নিয়ে ভারত সরকার ধাপে ধাপে ট্যুরিস্ট ভিসা চালু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে